ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন প্রতিহত করতে চট্টগ্রামে জঙ্গী হামলার আশঙ্কা গোয়েন্দাদের

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ৮ ডিসেম্বর ২০১৮

 নির্বাচন প্রতিহত করতে  চট্টগ্রামে জঙ্গী হামলার  আশঙ্কা গোয়েন্দাদের

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে জঙ্গীরা তৎপর হয়ে উঠছে। নির্বাচন প্রতিহত করতে যে কোন সময় জঙ্গী হামলার আশঙ্কা করছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া তিন মহিলা জঙ্গীর কাছ থেকে এসব তথ্য আদায় করেছে বন্দর গোয়েন্দা বিভাগ পশ্চিম। বন্দর থানাধীন কলসী দিঘী এলাকার একটি ভাড়াঘরে অভিযান চালিয়ে জঙ্গী সম্পৃক্ততা থাকায় তিন মহিলাকে গ্রেফতার করা হয় গত বুধবার। এরপর তাদের কাছ থেকে বেশকিছু জিহাদী বই ও সংগঠিত হওয়ার নানা উপকরণ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, বন্দর থানাধীন কলসী দিঘী এলাকায় অবস্থান নিয়েছে জঙ্গীরা। এমন তথ্যের ভিত্তিতে ওই এলাকার ফেলাগাজী বাড়ির ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়। এলাকার বায়তুল রিদওয়ান মসজিদ কলোনির পুকুরের উত্তর পাশের্^ থাকা বাড়িটির ৮নং কক্ষে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় তিন মহিলা মিলে ওই কক্ষের ভেতরে বৈঠক করছিল। তাদের এই কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ জিহাদী বই ও অন্যান্য উপকরণ। গ্রেফতারকৃত মহিলা জঙ্গীরা হলো ভোলার রাঢ়ি বাড়ির বেলাল হোসেনের স্ত্রী জেসমিন আক্তার, নোয়াখালীর হাতিয়া এলাকার রাণী গ্রামের মোশারফ বাড়ির মৃত ইব্রাহীমের স্ত্রী শাহানারা বেগম ও পিরোজপুরের ভা-ারিয়া এলাকার মোমিন হাওলাদারের বাড়ির রহমান হাওলাদারের স্ত্রী হামিদা আক্তার। কিন্তু জঙ্গী টানে তারা বন্দর থানাধীন কলসী দিঘী রোডস্থ ফেলাগাজী বাড়িতে অবস্থান নেয়। অবস্থানের পর থেকে তারা আশপাশের কারও সঙ্গে কোন ধরনের আলাপ আলোচনা বা উঠাবসা ছিল না। ফলে এলাকার মানুষের সন্দেহ হলে পুলিশের কাছে তথ্য দেয়। গোযেন্দা পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, গত ৫ ডিসেম্বের যে তিন মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা এক সময় জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জড়িত ছিল। পুলিশ তথ্য পেয়েছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ-এর বেশ কিছু নারী সদস্য নাশকতার পরিকল্পনার জন্য গোপন বৈঠক করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি-বন্দর) এসএম মোস্তাইন হোসেনের নির্দেশনায় অভিযান পরিচালনা করে বন্দর পশ্চিম জোনের গোয়েন্দা বিভাগ। এই ৩ মহিলা গ্রেফতারের পর তাদের কক্ষের ভেতর থেকে বিপুল পরিমাণ জেহাদী বই, লিফলেট, বাইতুল মাল আদায়ের রশিদ এবং বেশ কিছু রেজিস্ট্রার উদ্ধার করা হয়। তবে জেহাদী বইগুলো থেকে ইসলামের পথে আসার নামে জঙ্গীপনায় মেতে উঠার নানা কৌশর রপ্ত করে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযানের আগেই এসব আসামিদের সঙ্গে থাকা অজ্ঞাতনামা কয়েকজন পালিয়ে যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা জানিয়েছে, তারা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যেই বৈঠকে বসে। এমনকি নানা পরামর্শ করার জন্য বর্ণিত স্থানে বৈঠক করছিল। পলাতক আসামিদের সঙ্গে নাশকতার জন্য সংগৃহীত বিভিন্ন প্রকার বিস্ফোরক ও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল এমন তথ্য পুলিশকে দিয়েছে তারা। পলাতক আসামিরা দীর্ঘদিন যাবত অত্র এলাকায় বসবাস করছিল।
×