ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইসিকে ছোট করলে তার অধীনে নির্বাচন করছেন কেন? প্রশ্ন এইচ টি ইমামের

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৬ ডিসেম্বর ২০১৮

ইসিকে ছোট করলে তার অধীনে নির্বাচন করছেন কেন? প্রশ্ন এইচ টি ইমামের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপিকে উদ্দেশে করে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম প্রশ্ন তুলেছেন, নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ছোট করলে, তার অধীনে নির্বাচন করছেন কেন? নির্বাচন তো নির্বাচন কমিশনই পরিচালনা করছে। সরকার তো রুটিন কাজের বাইরে কিছুই করছে না। সরকারের দায়িত্ব নিরাপত্তা বিধান করা, সেটা তো আমরা করবই এবং নির্বাচন কমিশন যখন যা যা বলার তাই বলছে, আমরা কিন্তু কোন কথা বলি না। বুধবার আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রচার কমিটির সভাশেষে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে ৭ লাখ সিভিল অফিসার অংশগ্রহণ করবে, নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে সেনাসহ প্রায় ১০ লাখ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। এত বিশাল বাহিনী, এত কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করছে যে নির্বাচন কমিশন তাকে আমরা ছোট করব? তার মর্যাদা রক্ষা তো আমরাই করব। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) তৈরি করেছিলেন উল্লেখ করে এইচ টি ইমাম বলেন, সেই আরপিওর ওপর নির্ভর করে এখন পর্যন্ত নির্বাচন হয়ে এসেছে। আর সেই আরপিওতে যত ধরনের সংশোধনী এসেছে, সব আওয়ামী লীগ করেছে। এটি আর কেউ করেনি। আওয়ামী লীগ চায় নির্বাচন কমিশন এমন একটি উচ্চতায় থাকুক, যেখানে কেউ তাকে স্পর্শ করতে না পারে। আমরা তাকে সেই সম্মান দিতে চাই। বিএনপিতে জঙ্গী এবং তাদের মদদদাতাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্য বলেন, সবাই জানেন যে বিএনপি থেকে কতজন জঙ্গী এবং জঙ্গীদের মদদদাতাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে? ২০০৩-০৪ সালে বাংলা ভাইয়ের উত্থান, জেএমবির উত্থান হয়েছিল রাজশাহী অঞ্চলে। প্রথমে বাগমারাতে, এরপর রাজশাহী শহরেও। এ সময় বাংলা ভাইয়ের যারা প্রকাশ্যে গাছে ঝুলিয়ে মানুষ হত্যা করে, সেসব লোককে নিয়ে রাজশাহী শহরে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছে যারা, তার মধ্যে বিএনপি নেতা নাদিম মোস্তফা, আবু হেনা, নাটোরের দুলু এরা প্রত্যেকেই এবার নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী। এখন বুঝতে পারেন, কী ধরনের মানুষ তারা নিয়ে এসেছে! জামায়াতের যাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তারা বিএনপির সদস্য কিনা প্রশ্ন তুলে এইচ টি ইমাম বলেন, বিএনপি থেকে ২৬ জন জামায়াতে ইসলামীর নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আমরা আওয়ামী লীগের যাদের মনোনয়ন দিয়েছি তাদের জন্য প্রাথমিক যোগ্যতা ছিল আওয়ামী লীগের সদস্যপদ। দলের সদস্য না হলে কেউ মনোনয়ন চাইতে পারেন না। এখন জামায়াতের যাদের মনোনয়ন বিএনপি দিল, এরা কি বিএনপির সদস্য নাকি ডেকে এনে সদস্য করেছে? এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ১৫-২০টা করে জঙ্গীবাদী মামলা আছে। এখন এগুলো যদি রিটার্নিং অফিসাররা বিবেচনা না করেন, তাহলে তো আমাদের ওপর দায়িত্ব বর্তায়। আমরা তো অবশ্যই নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করব। এ সময় তিনি নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন। বিএনপির পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিথ্যাচারের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করছেন। নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে এখন কার্যালয় বলা যাবে না, এটা মিথ্যাচারের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে দাবি করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে তাদের দলের মনোনয়ন বাতিল হওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন রাজনৈতিক দল ৩০০ আসনে ৮০০ মনোনয়ন দেয়নি। এই ৮০০ নমিনেশন দেয়ার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে মনোনয়ন বাণিজ্য। এই মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে তাদের পার্টি অফিসে মারামারিও হয়েছে। এতগুলো মনোনয়ন দেয়ার পরও তাদের ৫৫৬ জনের মনোনয়ন টিকেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে বাছাইয়ের পর এতগুলো মানুষের মনোনয়ন টিকেছে এ রকম ঘটনা আগে ঘটেনি। তারা যার কাছ থেকে চাঁদা পেয়েছে তাকেই মনোনয়ন দিয়েছে। এমনকি আমার নির্বাচনী এলাকায় ৫ জনকে মনোনয়ন দিয়েছে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, প্রচার কমিটির সদস্যদের মধ্যে ছিলেন অভিনেত্রী শমী কায়সার, রোকেয়া প্রাচী, অরুণা বিশ্বাস, চিত্রনায়ক শাকিল খান, রিয়াজ, ফেরদৌস প্রমুখ।
×