ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সংযোগ স্থাপন শুরু

৫৮৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ‘ফ্রি’ ওয়াইফাই

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৫ ডিসেম্বর ২০১৮

৫৮৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ‘ফ্রি’ ওয়াইফাই

ফিরোজ মান্না ॥ দেশের ৫৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘ফ্রি’ ওয়াইফাইয়ের আওতায় আসছে। এ সপ্তাহ থেকে ওয়াইফাই সংযোগ স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বিটিসিএল। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষার্থীরা উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সুবিধা পাবে। এ তথ্য জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। মন্ত্রী বলেন, দেশের প্রায় ৬ শ’ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারী কলেজ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ফ্রি ওয়াইফাইয়ের আওতায় চলে আসছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষার্থীরা ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে। প্রথম ধাপে দেশের ৫৮৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারী কলেজ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ওয়াইফাই সংযোগ দেয়া হবে। পরে পর্যায়ক্রমে দেশের বেসরকারী কলেজ ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়াইফাই সংযোগ দেয়ার কাজ চলবে। সবশেষে আমরা স্কুলসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও ওয়াইফাই চালু করব। বিটিসিএল বিনামূল্যে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করবে। পরীক্ষামূলকভাবে এক বছর দেখা হবে, ফ্রি ওয়াইফাইতে শিক্ষার্থীরা কতটুকু তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়েছে। যদি ফল ভাল হয় তাহলে পর্যায়ক্রমে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংযোগ দেয়া হবে। ফল ভাল না হলে বিরাট অঙ্কের টাকা ভর্তুকি যাবে। কিন্ত কোন ফল আসবে না। সবকিছু হিসাব করেই প্রকল্পটি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা হবে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, গত জুলাইয়ে প্রকল্প পাস হয়েছে। কিন্তু প্রকল্পে পরিচালক নিয়োগ দিতে দুমাসের বেশি সময় চলে গেছে। ফলে কাজ শুরু করতে কিছুটা সময় চলে গেছে। এখন কাজ শুরু হয়েছে। বিটিসিএল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। বিটিসিএল এর আগে দেশের ২ হাজারের বেশি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দিয়েছে। তাদের কাজের অভিজ্ঞতার কারণেই প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন হবে। যে সব ইউনিয়নে সরকারী কলেজ, প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আছে, সেগুলোতে ওয়াইফাই সংযোগ দ্রুত চালু হয়ে যাবে। বর্তমানে আরও ৫ শ’ ৭২টি ইউনিয়নকে ইন্টারনেট সংযোগের আওতায় আনার কাজ চলছে। ৫ শ’ ৮৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৪৩, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০৭, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৫, বরিশাল বিভাগে ৪৫, খুলনা বিভাগে ৮৩, রংপুর বিভাগে ৫৬, রাজশাহী বিভাগে ৮৫, ও সিলেট বিভাগের ৩৩টি প্রতিষ্ঠানে সংযোগ দেয়া হচ্ছে। পুরো খরচ সরকার বহন করবে। দেশের ৮টি বিভাগে সরকারী কলেজ ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে পৃথকভাবে ফাইবার অপটিক ক্যাবল স্থাপন ও যন্ত্রাংশ স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি) সারাদেশে এক লাখ ফ্রি ওয়াইফাই হটস্পট তৈরির ঘোষণা দিয়েছিল। এই এক লাখ ফ্রি ওয়াইফাই হটস্পট অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে ৫ শ’ ৮৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংযোগ দেয়া হচ্ছে। ইনফো সরকার-৩ ওই প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে নতুন দিয়েছে ‘স্টাবলিশিং ডিজিটাল কানেক্টিভিটি’ প্রকল্প। উচ্চ প্রযুক্তির বা ‘হাই এ্যান্ড’-এর। এই প্রকল্প দেশকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এদিকে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, স্টাবলিশিং ডিজিটাল কানেক্টিভিটি প্রকল্পের আওতায় ইন্টারনেট সেবা সহজলভ্য করতে সারাদেশে এক লাখ পয়েন্টকে ওয়াইফাইয়ের আওতায় আনার কাজ শুরু করেছে সরকার। ঢাকায় ইতোমধ্যে এক শ’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ওয়াইফাই আগে থেকেই চালু ছিল। ওইসব প্রতিষ্ঠানের ‘রাউটারের’ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়। দ্রুত ওয়াইফাই ইন্টারনেটের আওতায় আসছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। বেইস টেকনোলজিসের সহযোগিতায় বুয়েটের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন এ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইআইসিটি) বুয়েটের প্রতিটি হলে ইন্টারনেট সেবা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় একই সেবা চবি শিক্ষার্থীদের দিচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সূত্র জানিয়েছে, টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বেইস টেকনোলজিস ৩২টি এপির মাধ্যমে তারহীন ইন্টারনেট সেবা বুয়েটের প্রতিটি আবাসিক হলে পৌঁছে দেয়ার কাজ করছে। ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের জন্য ইডিজিই কোর পিওই ব্যবহৃত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মাঠপর্যায়ে সাইট সার্ভে, কভারেজ প্ল্যান, হার্ডওয়্যারর ও সফটওয়্যার ইন্সটলেশনের কাজ শেষ হয়েছে। ইন্টারনেট সেবা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের পর এ মাসেই সেবাটি চালু হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে বুয়েটের আইআইসিটি বিভাগ ইতোমধ্যে তিতুমীর হলে পরীক্ষামূলক ওয়াইফাই চালু করেছে। এই হলে সফল বাস্তবায়ন করা গেলে অন্য সব হলেও ওয়াইফাই চালু করা হবে। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে ব্যান্ডউইথ নির্ধারণ করা হবে। তবে মানসম্মত সেবা নিশ্চিতের জন্য ৫১২ কেবিপিএস স্পিড সবার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
×