ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হংসবলাকা আজ আসছে, বিমানবহরে জাহাজের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৫

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ১ ডিসেম্বর ২০১৮

 হংসবলাকা আজ আসছে, বিমানবহরে জাহাজের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৫

আজাদ সুলায়মান ॥ আজ আসছে বিমানের দ্বিতীয় ড্রিমলাইনার হংসবলাকা। বিকেল চারটায় এটি অবতরণ করবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। শুক্রবার দিবাগত রাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল থেকে এটা ঢাকার উদ্দেশে উড্ডয়ন করে। আকাশপথে কোন বিরতি না দিয়ে সরাসরি আসবে। টানা ১৫ ঘণ্টা বিমান চালিয়ে হংসবালাকা নিয়ে আসবেন বিমানের চারজন পাইলট। তারা হলেন-স্মল স্কি, মোঃ আমিনুল, শোয়েব চৌধুরী ও ফার্স্ট অফিসার আনিতা রহমান। ফ্লাইট পার্সার শবনম কাদিরসহ এতে থাকবেন পাঁচজন কেবিন ক্রু। তবে গত সেপ্টেম্বরে আসা আকাশবীণার মতো আজ শনিবার কোন ধরনের আনুষ্ঠানিকতা রাখা হয়নি। কোন গণমাধ্যমকর্মীকেও রাখা হয়নি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে। বিমানের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে অভ্যর্থনা জানাবেন। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন মোসাদ্দিক আহমেদ শুক্রবার রাতে জনকণ্ঠকে জানান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এখন চলছে আইকাও এর সিকিরিউটি অডিট যা চলবে আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। অডিট চলকালীন শাহজালাল বিমানবন্দরে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকার ও চলাচলের ওপর বেশ কড়াকড়ি নিরাপত্তা ব্যবস্থার আয়োজন করা হয়েছে। হংসবলাকা যোগ হবার পর বিমানবহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৫টি। হংসবলাকা আনতে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন বিমান পরিচালনা পর্ষদ, নির্বাহী পরিচালক ও কর্মকর্তাসহ ৩২ জনের বিশাল বহর। এরমধ্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, সংসদ সচিবালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ও অর্থায়নকারী ব্যাংকের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। যাদের বেশির ভাগের কোন প্রয়োজন ছিল না। শুধু বিমানের টাকায় ভ্রমণ নেশা মেটানোই ছিল তাদের মিশন। আবার এ ধরনের অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত থাকা যাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল- সেই পরিচালক গ্রাহক সেবা মমিনুল ইসলাম ও পরিচালক মার্কেটিং আশরাফুল আলমের মতো কর্তাদের এই টিম থেকে বাদ দেয়া হয়েছে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ভাল লাগা না লাগার কারণে। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন মোসাদ্দিক আহমেদ জানিয়েছেন, সিয়াটলের এভারেটে মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং ২৯ নবেম্বর সকালে চাবি দিয়ে হংসবলাকার মালিকানা হস্তান্তর করেছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালক (ফ্লাইট অপারেশন) ক্যাপ্টেন ফারহাত হাসান জামিল এটি বুঝে নেন। এ সময় ছিলেন বোয়িং পরিচালক (ডেলিভারি কনট্রাক) জন বর্বার ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া) এহসান রাজপুত। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ৩০ নবেম্বর সকালে ফিতা কেটে ড্রিমলাইনার হংসবলাকার যাত্রা শুরু হয়। আমেরিকার এভারেট থেকে বিজি-২১১২ ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে সকাল ১১টায়। বিমান জানিয়েছে, বিমানের প্রতিনিধি দলের জন্য বৃহস্পতিবার রাতে নৈশভোজের আয়োজন করে বোয়িং। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে সুদৃঢ় বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিমানের সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে এটি আরও বৃদ্ধি পাবে। অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন বিমান পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পরিচালক মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার তানজিব উল আলম, পরিচালক (ফ্লাইট অপারেশন) ক্যাপ্টেন ফারহাত হাসান জামিল, পরিচালক (প্রকৌশল) খন্দকার সাজ্জাদুর রহিম, মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ, এইএসবিসি ব্যাংকের উপ-প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান, আইএফআইসি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনসুর মোস্তফা। চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বোয়িংয়ের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (মার্কেট এ্যানালাইসিস) ডারেন হুলস্ট বলেন, বিমান ও বোয়িংয়ের সম্পর্ক দুটি প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসায়িকভাবে সফল করতে সহায়ক। ফার্নবোরো এয়ারশোতে বিমানের জন্য তৈরি করা ড্রিমলাইনার সবার নজরে ছিল। বিমানের সহায়তার জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই। উল্লেখ্য ২০০৮ সালে মার্কিন প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে ১০টি নতুন বিমান ক্রয়ের জন্য ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ইউএস ডলারের চুক্তি করে বিমান। এরই মধ্যে বহরে যুক্ত হয়েছে ৬টি বিভিন্ন মডেলের উড়োজাহাজ। বাকি চারটি হলো বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। এর প্রথমটি গত ১৯ আগস্ট দেশে আসে। চারটি ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের নাম পছন্দ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এগুলো হলো আকাশবীণা, হংসবলাকা, গাঙচিল ও রাজহংস। বিমানের অপর দুটো ড্রিমলাইনার আসবে আগামী বছরের শেষের দিকে।
×