ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বদির স্ত্রীকে মনোনয়নে সমালোচনা, তারেকের স্ত্রীকে দিলে কি হবে-

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ২৫ নভেম্বর ২০১৮

 বদির স্ত্রীকে মনোনয়নে সমালোচনা, তারেকের স্ত্রীকে দিলে কি হবে-

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, নির্বাচন হবে কি-না এ নিয়ে আশঙ্কার কথা বলছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন। একইভাবে রাজনীতিবিদ কর্নেল (অব.) অলি আহমেদও আশঙ্কা করছেন এই নির্বাচন হবে কি-না। আমরা জানি না এই নির্বাচন নিয়ে কি হচ্ছে। তবে আমরা নির্বাচনটি নিয়ে কোন খেলা দেখতে চাই না। আমরা ফ্রি-ফেয়ার নির্বাচন চাই। নির্বাচনে যে দলই জিতবে, তারাই ক্ষমতায় আসবে। আমরা জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল । তিনি আরও বলেন, এবারই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সার্চ কমিটির সুপারিশে কমিশন গঠন করা হয়েছে। যারা দায়িত্ব পেয়েছেন তারা কতটুকু সাহস নিয়ে কাজ করতে পারবে এটা তাদের বিষয়। শনিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে সেন্টার গবর্নেন্স স্টাডিজ আয়োজিত ‘রাজনীতি এবং জনগণের ভোটাধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারে টিভি উপস্থাপক জিল্লুর রহমানের উপস্থাপনায় আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সেন্টার ফর গবর্নেন্স স্টাডিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম আতাউর রহমান। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) ড. সাখাওয়াত হোসেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সুপ্রীমকোর্ট বার সামিতির সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার এম আমিরুল ইসলাম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, বিজিবির সাবেক ডিজি লে. জে. মোঃ মঈনুল ইসলাম ,আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক শ.ম রেজাউল করিম, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান, সাংবাদিক নাইমুল ইসলাম খান, অধ্যাপক ড. আবুল কাসেম ফজলুল হক, অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ড. এনামুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, জহির উদ্দিন স্বপন প্রমুখ। মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ড. কামাল হোসেনের মতো দায়িত্বশীল ও বিচক্ষণ নেতা যখন নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। যখন কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের মতো নেতাও শঙ্কা প্রকাশ করেন। তখন তাদের কথা উড়িয়ে দিতে পারি না। আমরা জানি না আদৌ এই নির্বাচন নিয়ে কোন খেলা হচ্ছে কি-না। তবে আমরা এই নির্বাচন নিয়ে কোন খেলা দেখতে চাই না। কক্সবাজারের এমপি বদির পরিবর্তে তার স্ত্রীকে মনোনয়ন দেয়ার বিষয়ে সমালোচনা চলছে। বদির বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। সব অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও তাকে এবার মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে না। এখন তার স্ত্রীকে মনোয়ন দেয়ায় অনেকেই সমালোচনা করছেন। তবে আমি বলতে চাই, তারেক রহমান একজন দ-িত অপরাধী। তার স্ত্রী জোবায়দা রহমান যখন রাজনীতিতে আসবেন, নির্বাচনে আসবেন- এই সমালোচনাকারীরা তখন কী করবেন। মূল প্রবন্ধে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন আগামী নির্বাচন ফ্রি হলেও ফেয়ার নাও হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন । তাই আগামী নির্বাচন কেমন হবে তা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। ফেয়ার ইলেকশনের জন্য সরকারকেও এ চ্যালেঞ্জ নিতে হবে, কারণ আন্তর্জাতিক মহল তাকিয়ে আগামী নির্বাচনের দিকে। ‘দীর্ঘলাইনে মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছেন ভোট দেয়ার জন্য অথচ বুথে ঘটে অন্য ঘটনা। বুথে গিয়ে তাকে বলা হলো তুমি হাতে কালি মেখে চলে যাও আর ব্যালট পেপার দিয়ে দাও- এমন যেন না হয়।’ সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এসব দেখার বিষয় ইসির। কিন্তু এখন ইসি নিজেরা মাঝে মধ্যে এমন সব কথা বলছে যা তারা নিজেদের বিতর্কিত করে ফেলছে। মনে রাখতে হবে বিশ্ব তাকিয়ে আগামী নির্বাচনের দিকে। সরকারের অধীনে এর আগে নির্বাচন হলেও এবারই প্রথম দলীয় সরকারের অধীনে সব দল অংশ নিচ্ছে। মনে রাখতে হবে, আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন ফ্রি ও ফেয়ার করতে ইসির জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। একে গ্রহণযোগ্য করতে সব রকম সহযেগিতা করতে হবে সরকারকে। সেমিনারে প্রধান অতিথি সুপ্রীমকোর্ট বার সমিতির সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার এম আমিরুল ইসলাম বলেন , সব কিছু একটা মোড়কে সাজানো হয়েছে। নির্বাচনটা মোড়কে করলে হবে না। এটা জনগণকে উপভোগ করতে দেন। জনগণের প্রতি আস্থা রাখতে হবে। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নির্বাচনে মনিটনিং করেছি। ইভিএম কি তা নিয়ে প্রহসন শুরু হয়েছে। এই কোম্পানিটার নাম জানতে হবে। আজ নিম্ন আদালতে মানুষ জামিন না পেয়ে উচ্চ আদালতে দলে দলে আসছে। নিম্ন আদালতে তারা কোন সুযোগ পাচ্ছে না। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন , অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আর্থসামিাজিক পরিবর্তন হয় না। আমাদের সমাজের অবস্থানটা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। সমাজের পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। সরকারের পরিবর্তন হলে সুশীল সমাজের সুরও পাল্টে যায়। যতদিন নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে গঠন হবে না ততদিন ফ্রি নির্বাচন হবে না।’ আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক শ.ম রেজাউল করিম বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে যত আলোচনা বিতর্ক হয়েছে, তার মধ্যে রাজনৈতিক সৃজনশীলতা ও গুণগত মানের পরিবর্তন করতে হবে। সঙ্কট নামক কোন শব্দ নেই। প্রধানমন্ত্রী সংলাপে বসেছিলেন সেখানে ১৪০টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিল। ঐক্যফ্রন্টের দাবি মেনে নেয়ার পর কি হবে তার উত্তর ফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ দিতে পারে নির্বাচন কমিশনকে সকল কর্তৃত্ব দেয়া আছে। নির্বাচন নিয়ে কোন আতঙ্কের কিছু নেই। মুনিরা খান বলেন , পর্যবেক্ষক হিসেবে কি আমি মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকব। না কথা বলব। নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় করা হয়নি। পরবর্তীতে কমিশন যাতে সঠিকভাবে গঠন করা হয় তার ওপর গুরুত্ব দেয়া উচিত।
×