ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

অঙ্ক কষছে টাইগাররা

টেস্টে ক্যারিবীয়দের বিপাকে ফেলা সম্ভব?

প্রকাশিত: ০৪:৫৪, ১৯ নভেম্বর ২০১৮

টেস্টে ক্যারিবীয়দের বিপাকে ফেলা সম্ভব?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়ানডে ও টি২০তে দেশের মাটিতে বাংলাদেশ শক্তিশালী দল। অপ্রতিদ্বন্দ্বী দলও এখন। বিদেশের মাটিতেও ওয়ানডে ও টি২০তে নিজেদের প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু টেস্টে দুর্দশাগ্রস্তই এখনও। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেতো আরও কাহিল অবস্থা। এ বছর জুলাইয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। আর তাই প্রশ্নও উঠছে টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিপদে ফেলা সম্ভব? ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজের চেয়ে টেস্ট সিরিজ নিয়েই সবার চিন্তা হচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। ২২ নবেম্বর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম ও ৩০ নবেম্বর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে। এরপর শুরু হবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। ওয়ানডে সিরিজের তিনটি ম্যাচ হবে ৯, ১১ ও ১৪ ডিসেম্বর। প্রথম দুটি ওয়ানডে মিরপুরে ও শেষটি সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে। এরপর তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজও অনুষ্ঠিত হবে। টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচ সিলেটে ১৭ ডিসেম্বর, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচ যথাক্রমে ২০ ও ২২ ডিসেম্বর মিরপুরে অনুষ্ঠিত হবে। শুরুতেই হবে টেস্ট সিরিজ। আর এই সিরিজেই সবার দৃষ্টি বিশেষভাবে আছে। দলটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পেসারদের উচ্চতা অনেক বেশি। এ জন্য পেসাররাও যে কোন ভেন্যুতেই সুবিধা করে নিতে পারেন। বাংলাদেশের মাটিতেও তা হতে পারে। আর এই পেসারদের নিয়েই আছে যত ভাবনা। পেসারদের সামলানো গেলে যে পুরো ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকেই সামলানো সম্ভব। তা না হলে বাংলাদেশ দল বিপদেই পড়বে। বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানরা জিম্বাবুইয়ের পেসারদের বিপক্ষেই বিপদগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসাররাতো আরও বেশি গতিতে বল করে। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসারদের নিয়েই চিন্তা করছেন। তাইতো তিনি বলেছেন, ‘ওদের যে পেস বোলিং আছে (রোচ, গ্যাবিয়েল) সবাইকে আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলেছি, ওই অভিজ্ঞতাটুকু আছে ওরা কেমন বোলিং করতে পারে। তাছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেট এবং বাংলাদেশের উইকেটতো এক নয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের নিয়ে আমাদের কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তা থাকলে আমাদের মধ্যে এই বিশ্বাস আছে আমরা আমাদের স্কিলের পূর্ণ ব্যবহার করতে পারব।’ পেসারদের নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে। তবে তাদের বিপক্ষে এবার ভাল খেলার আশাও আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ১৪টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। দুটিতে জিতেছে। ২০০৯ সালে দুটি জয় আছে বাংলাদেশের। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথমবারের মতো টেস্টে হারানোর সঙ্গে হোয়াইটওয়াশও করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু তখনকার দলটি অপেক্ষাকৃত দুর্বল ছিল। তাই সেই সময়ের ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে টেস্টে হারানো নিয়ে সবসময়ই আলোচনা হয়েছে। যখনই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে বাংলাদেশের খেলা হয়েছে, তখনই এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনা দূর করতে এখনও পারেনি বাংলাদেশ। ১৪ টেস্টের দুটিতে ড্র করেছে বাংলাদেশ। হেরেছে ১০টি টেস্টে। ২০১১ সাল থেকে সর্বশেষ সাত টেস্টে বাংলাদেশই হেরেছে। সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে জুলাইয়ে ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজে দল অসাধারণ নৈপুণ্য দেখালেও টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। ২০০৪ সালের পর আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে। এতটাই করুণ অবস্থা হয়েছিল বাংলাদেশের। তবে দেশের মাটিতে টেস্টেও দিন পাল্টেছে বাংলাদেশের। দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১২ সালের পর আর খেলেনি বাংলাদেশ। এরপর থেকে দল অনেক উন্নতি করেছে। টেস্টে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে। জিম্বাবুইয়েকেও সর্বশেষ টেস্টে হারিয়েছে। এবার তাহলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পালা? বর্তমান সময়ের বাংলাদেশের বিপক্ষে দেশের মাটিতে টেস্ট খেলেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিজ মাটিতে খেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাই ক্যারিবিয়ানদের বাংলাদেশের মাটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে বর্তমান সময়ে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। এই বিষয়টি বাংলাদেশকে আশা জাগাচ্ছে। এরপরও যেহেতু টেস্ট খেলা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার, স্পিনার ও ব্যাটসম্যানরা অনেক ভাল খেলছেন, তাই টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিপদে ফেলা সম্ভব? সেই প্রশ্ন উঠছেই। মাহমুদুল্লাহ সম্ভাবনা ভালভাবেই দেখছেন। জানিয়েছেন, ‘এই (জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে জেতা) আত্মবিশ্বাস আমাদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও কাজে দেবে। আমরা যদি আমাদের হোম কন্ডিশনটা আমাদের মতো করে ট্রিপিকাল করে নিতে পারি, তাহলে ম্যাচের রেজাল্ট আমাদের পক্ষে আসতেও পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমরা কতটা ভাল ক্রিকেট খেলছি সেটা। তারা অনেক ভাল দল। আমরা মানসিকভাবে ও শারীরিকভাবে তৈরি থাকতে হবে টাফ উইকেটে খেলার জন্য।’ দলের ক্রিকেটাররাও বুঝছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট খেলাটা খুব সহজ হবে না। এখন নিজ দেশে যেহেতু খেলা, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ভোগানো গেলেই হয়।
×