ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

মিরপুরে জ্বলে উঠতে পারবেন মুশফিক-মুমিনুল?

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১১ নভেম্বর ২০১৮

মিরপুরে জ্বলে উঠতে পারবেন মুশফিক-মুমিনুল?

মোঃ মামুন রশীদ ॥ বাংলাদেশের বর্তমান টেস্ট দলে নেই দুই সেরা পারফর্মার সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। তাদের অভাব বেশ ভালভাবেই অনুভূত হয়েছে। কারণ ঘরের মাটিতেও খর্বশক্তির দলে পরিণত হওয়া জিম্বাবুইয়ের কাছে প্রথম টেস্টে হারতে হয়েছে। এবার সিরিজ হারের লজ্জা এড়ানোর লড়াইয়ে নামবে আজ বাংলাদেশ দল। গত ৪ টেস্টের ৮ ইনিংসে বিভীষিকাময় ব্যাটিং প্রদর্শনীতে খারাপ পরাজয় দেখতে হয়েছে। তবে টেস্ট ক্রিকেটের স্পেশালিস্ট হিসেবে বিবেচিত ওয়ানডাউন ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক ও মিডলঅর্ডারের দেয়াল বা স্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃত মুশফিকুর রহীম এই ৮ টেস্টে ছিলেন পুরোপুরিই ব্যর্থ। ধারাবাহিকভাবে দলকে দারুণ কিছু উপহার দেয়া এ দু’জনের ব্যর্থতাও দলের নাজুর পরিস্থিতির বড় কারণ। আজ মর্যাদা রক্ষার চ্যালেঞ্জের ম্যাচে সাকিব-তামিম না থাকায় তাই এ দুই ব্যাটসম্যানের ওপরই ভরসা করতে হবে বাংলাদেশ দলকে। রানখরা কাটিয়ে নিজেদের ফিরে পাবেন এ দুই ব্যাটসম্যান? সাকিব-তামিমের সঙ্গে দলের ব্যাটিংয়ে নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে মুমিনুল ও মুশফিকের নাম দুটিও চলে আসে। গত ৪ টেস্টে খুব বাজেভাবে হেরেছে বাংলাদেশ দল। অথচ তার আগে পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটেও নিজেদের শক্তিধর হিসেবে প্রমাণ করতে শুরু করেছিল টাইগাররা। বিশেষ করে ২০১৬ সালে ইংল্যান্ড ও ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার মতো কুলীন ক্রিকেট পরাশক্তিদের ঘরের মাঠে হারিয়ে নিজেদের উচ্চশক্তির দলে পরিণত হওয়ার ঘোষণাই দিচ্ছিল তারা। কিন্তু এ বছর ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে দুর্দান্ত খেলে ড্র করা ব্যতীত আর কোন ভাল ম্যাচ উপহার দিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। বরং গত ৪ টেস্টে দলের যে রান ছিল সেটা ব্যক্তিগত ইনিংসের চেয়েও বাজে। সাম্প্রতিক সময়ে দলের সর্বশেষ কয়েকটি টেস্টে ব্যাটিং বড় রকমের বিপদ সঙ্কেতই দিচ্ছে। গত ৪ টেস্টের ৮ ইনিংসে বাংলাদেশের ইনিংসগুলো ছিল- ১১০ ও ১২৩, ৪৩ ও ১৪৪, ১৪৯ ও ১৬৮ এবং ১৪৩ ও ১৬৯। অর্থাৎ ২০০ রানও আসেনি। অথচ ১০৯ টেস্ট খেলা বাংলাদেশ দলের হয়ে ৪৯টি সেঞ্চুরি দেখা গেছে এখন পর্যন্ত যার মধ্যে তিনটি ব্যক্তিগত ডাবল সেঞ্চুরিও আছে। আছে ৬ শতাধিক রানের দলীয় ইনিংসও। দলের এমন নাজুক পরিস্থিতির কারণ হিসেবে দেখা গেছে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা। বিশেষ করে দেশের হয়ে সর্বাধিক ৬৩ টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মুশফিকের ব্যাটে রানের খরাটা দলকে দুর্দশাগ্রস্ত করেছে। টেস্টে দেশের পক্ষে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির মালিক মুশফিক অনেক ম্যাচেই বিপর্যয়ের মুখে প্রতিরোধ গড়ে বাঁচিয়েছেন দলকে। সে কারণে ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ তকমাও পেয়েছেন। ধারাবাহিকভাবে সফল ব্যাটসম্যান মুশফিকের হঠাৎ করে ব্যাটিং পারফর্মেন্সে নিম্নগতি। ৫ সেঞ্চুরি ও ১৯ অর্ধশতক হাঁকানো মুশফিক ৩৪.০২ গড়ে ৩৭৪৩ রান করে টেস্টে দেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বাধিক রানের মালিক। ৩১ বছর বয়সী এ ডানহাতি গত ৫ টেস্টের ৯ ইনিংসে কোন অর্ধশতকও হাঁকাতে পারেননি। তিনি ৯ ইনিংসে করেছেন ১৫ গড়ে ১৩৫ রান, সর্বোচ্চ ইনিংসটি ৩১ রানের। আজ কি সেই ব্যর্থতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন মুশফিক? অপরদিকে শুধু টেস্ট ক্রিকেটেই নিয়মিত মুমিনুল। ২৭ বছর বয়সী এ ওয়ানডাউন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান গত ৮ ইনিংসে মাত্র ৮.৬২ গড়ে করেছেন ৬৯ রান, সর্বোচ্চ ৩৩। অথচ ২০১৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৫ সালের মে পর্যন্ত টানা ১১ ম্যাচে অন্তত ফিফটি হাঁকানোর অসামান্য কৃতিত্ব ছিল তার। যে রেকর্ডটি করার পথে তিনি শচীন টেন্ডুলকর ও জন এডরিচকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন (উভয়ে টানা ১০ ম্যাচ)। তারপর ২৯ ইনিংসে আর মাত্র ৩টি ফিফটি (২টি সেঞ্চুরিও আছে) করেছেন দেশের পক্ষে সর্বাধিক ৪২.১১ ব্যাটিং গড়ের এ মালিক। এবার সেই পুরনো মুমিনুলের ফিরে আসার চ্যালেঞ্জ।
×