ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কেউ অপপ্রচার চালালে দ্রুত শনাক্ত করে ব্যবস্থা

সাইবার জগত নিরাপদ রাখতে আধুনিক যন্ত্রপাতি বসানো হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:৪০, ১১ নভেম্বর ২০১৮

সাইবার জগত নিরাপদ রাখতে আধুনিক যন্ত্রপাতি বসানো হচ্ছে

ফিরোজ মান্না ॥ সাইবার জগত সর্বক্ষণিক মনিটর করার জন্য সরকারের তিনটি সংস্থায় আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিছু যন্ত্রপাতি ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। সংস্থাগুলোতে বাড়তি জনবল নিয়োগ করে সাইবার জগত নিরাপদ রাখার কাজও শুরু হয়েছে। সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে কেউ যেন কোন প্রকার অপপ্রচার ও দেশবিরোধী কাজ করতে না পারে তা নিবিড়ভাবে মনিটর করা হচ্ছে। নির্বাচনকালীন অতিরিক্ত দু’টি সেল গঠন করা হয়েছে সাইবার জগতকে নিরাপদ রাখতে। এর বাইরে বিটিআরসি ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দু’টি সেল স্থায়ীভাবে সাইবার জগত নিরাপদ রাখার কাজ করবে। মোট চারটি দফতর সাইবার নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। বিটিআরসি জানিয়েছে, অনেক আগে থেকেই তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটর করার জন্য সেল গঠন করেছে। ওই সেল কাজ করে যাচ্ছে। এ জন্য তারা নতুন করে কিছু যন্ত্রপাতি স্থাপন করেছে। এর বাইরে সরকারের আরও দু’টি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা সাইবার জগত মনিটর করার জন্য বেশ কিছু যন্ত্রপাতি স্থাপন করেছে। এই দু’টি সংস্থায় আরও আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য সরকারের কাছে অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন পরবর্তী যে কোন সময়ের জন্য সাইবার জগত নিরাপদ রাখার কাজ করবে এই দু’টি গোয়েন্দা সংস্থা। অন্যদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে স্থায়ীভাবে সাইবার ক্রাইম মনিটর করার জন্য ‘সাইবার পুলিশ সেন্টার’ গঠন করা হয়েছে। এই সেলটি পরিচালনা করবে সিআইডি। এ জন্য সিআইডিতে নতুন একটি ইউনিট গঠন করা হয়েছে। এই ইউনিট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ও দেশবিরোধী বিষয়গুলো মনিটর করবে। পুলিশের এই সেল স্থায়ীভাবে সাইবার জগত মনিটর করবে। এই ইউনিটে দুই জন অতিরিক্ত ডিআইজি, তিনজন পুলিশ সুপার, ছয়জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ১৮, পরিদর্শক ৪৫, উপ-পরিদর্শক (এসআই) ১৪০, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ৩০, কনস্টেবল ৭৫, সিস্টেম এ্যানালিস্ট একজন, প্রোগ্রামার একজন ও মেইনটেন্যান্সের জন্য একজন প্রকৌশলী কাজ করবেন। বিটিআরসির ‘কনটেন্ট ফিল্টারিংয়ের’ একটি সেল কাজ করে যাচ্ছে। এ মাস থেকে সেলটি কাজ শুরু করেছে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত সেলটির নামকরণ করা হয়েছে ‘গুজব শনাক্তকরণ সেল’। এই সেলের প্রধান করা হয়েছে তথ্য অধিদফতরের উপ-প্রধান তথ্য অফিসার রিফাত জাফরীনকে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে তথ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ৯ সদস্যের সেলটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের সেলটি কাজ করবে বিটিআরসির সঙ্গে। অনলাইনে কোন গুজবগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছে সেটা নির্ধারণ করা। এগুলো আসলে গুজব কিনা সেটা নির্ধারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে গিয়ে নিশ্চিত হবে। গুজব না হলে সেখানে কিছু করার নেই। যদি কোন গুজব ধরা পড়ে তাহলে ওই গুজবগুলোর তালিকা তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিটিআরসির কাছে পাঠানো হবে। বিটিআরসির সহায়তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্টরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। বিটিআরসি জানিয়েছে, সাইবার জগত নিরাপদ রাখতে নানা বিষয় মনিটর করা হবে। কেউ যেন দস্যুতা করে পার পেয়ে না যায় তার ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাইবার নিরাপত্তা ও তথ্য সুরক্ষা করতে এই সেল সর্বক্ষণিক কাজ করবে। ডিজিটাল নাগরিকদের নিরাপদ থাকার এবং প্রত্যেকের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই হবে প্রধান কাজ। সাইবার সুরক্ষায় প্রযুক্তি ব্যবহারকারীর সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। আর সচেতনতা তৈরি করার বিষয়েও কাজ করা হবে। সাইবার জগত মনিটর শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত তেমন কোন অপপ্রচার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাওয়া যায়নি। নতুন করে আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করার পর অপপ্রচারের কোন সুযোগই থাকবে না। কারণ কোন বাজে কনটেন্ট পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে তা ফিলটারিং করা হবে। কেউ যদি অপপ্রচার চালায় তবে তার আইডি ব্লক করে দেয়া হবে। তাকে শনাক্ত করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হবে।
×