ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মিটারযুক্ত এবং মিটারবিহীন গ্রাহকের গ্যাস বিতরণ ও রাজস্বের হিসাব পৃথক রাখার নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১০ নভেম্বর ২০১৮

  মিটারযুক্ত এবং মিটারবিহীন গ্রাহকের গ্যাস বিতরণ ও রাজস্বের হিসাব পৃথক রাখার নির্দেশ

রশিদ মামুন ॥ মিটারযুক্ত এবং মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকের গ্যাস বিতরণ এবং রাজস্ব আদায়ের হিসাব আলাদা করে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বিতরণ কোম্পানিকে। মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহক কম গ্যাস ব্যবহার করে বেশি বিল দিচ্ছে। দীর্ঘদিনের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে এই আদেশ দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। তবে গ্রাহকের করা এই অভিযোগ সত্য হলে গ্রাহক বিলের ক্ষেত্রে ছাড় পাবে কিনা সে কথা এখনই বলা সম্ভব নয় বলে মনে করছে কমিশনের এক সদস্য। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আদেশ স্রেফ আইওয়াশ ছাড়া কিছু নয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একজন মিটারবিহিন গ্রাহক প্রতিমাসে ৮৮ ঘনফুট গ্যাস ব্যবহার করেন এই হিসাব ধরে একজন আবাসিক গ্রাহকের মাসিক বিল নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বাস্তাবে একজন গ্রাহকের গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ ৪০ ঘনফুটের মতো। অর্থাৎ নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে অর্ধেক গ্যাস ব্যবহার করলেও গ্রাহককে দ্বিগুণ বিল দিতে হচ্ছে। কোন কোন ক্ষেত্রে গ্যাসের চাপ না থাকার কারণে গ্রাহক ৪০ ঘনফুটের চেয়েও কম গ্যাস ব্যবহার করে পুরো ৮৮ ঘনফুটের দাম দিয়ে থাকেন। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় হয়। আর এই রাজস্বের অর্থ দিয়ে বিতরণ কোম্পানি গ্যাসের চুরির সঙ্গে সিস্টেম লসেরও সমন্বয় করে বলে অভিযোগ রয়েছে। এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বলছে, বিতরণ কোম্পানিগুলো রাজধানী ছাড়াও ঢাকার বাইরে প্রিপেইড মিটার বসাচ্ছে। এতে একজন গ্রাহক সত্যিকার অর্থে কতটুকু গ্যাস ব্যবহার করছে তার একটি ধারণা পাওয়া সম্ভব। তবে মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকদের হিসাব কি করে রাখা সম্ভব তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আদেশ আইওয়াশ ছাড়া কিছু নয়। বিতরণ কোম্পানিগুলো পেট্রোবাংলার কাছ থেকে যে পরিমাণ গ্যাস কিনছে বছর শেষে তার চেয়ে বেশি পরিমাণ গ্যাস বিক্রির বিল হিসাবে জমা হচ্ছে। এই বাড়তি বিলের প্রায় পুরোটাই আসছে আবাসিক গ্রাহকের কম গ্যাস ব্যবহার থেকে। এর মধ্যে অবৈধ গ্যাস ব্যবহার হলেও তা থেকে বিতরণ কোম্পানিগুলো মাফ পেয়ে যাচ্ছে। তিতাসকে ২ ভাগ হারে সিস্টেম লস অনুমোদন করেছে বিইআরসি। কিন্তু অন্য কোম্পানিগুলো সিস্টেম গেইন দেখাচ্ছে। এভাবে হিসাব রেখে যদি দেখা যায় মিটারবিহীন গ্রাহক কম গ্যাস ব্যবহার করে বিল বেশি দিচ্ছে তাহলে কি তাদের বিল সমন্বয় করা হবে এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সদস্য রহমান মুর্শেদ বলেন, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রাহক এমনিতেই কম গ্যাস ব্যবহার করে আবার কোন কোন ক্ষেত্রে গ্যাস না থাকলে ব্যবহারের পরিমাণ আরও কমে যায়। গ্রাহক চাইলেও বেশি গ্যাস ব্যবহার করতে পারে না। এক্ষেত্রে বঞ্চনার স্বীকার হলেও প্রতিকার পাওয়া যায় না। এই আদেশে একজন গ্রাহক প্রকৃত অর্থে কি পারমাণ গ্যাস ব্যবহার করছে তা নিশ্চিত হওয়া যায় কিনা এমন প্রশ্নে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, এগুলো স্রেফ আইওয়াশ ছাড়া কিছু নয়।
×