ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় ক্রিকেট লীগে চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ৯ নভেম্বর ২০১৮

জাতীয় ক্রিকেট লীগে চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাতীয় ক্রিকেট লীগের (এনসিএল) ২০তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রাজশাহী বিভাগ। বরিশাল বিভাগকে ৬ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতে রাজশাহী। ৬ বছর পর দলটি চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। খুলনা বিভাগকে হটিয়ে শীর্ষ আসনে বসেছে। একটা সময় রাজশাহীর দাপট ছিল। কিন্তু রংপুর বিভাগ হয়ে খেলতে শুরু করলে রাজশাহীর দাপট থাকে না। এবার রাজশাহী আবার দাপট দেখাল। রাজশাহীর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দিনে ঘরোয়া লীগ থেকে অবসর নিয়ে ফেললেন রাজিন সালেহ। আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন সিলেটের এ ক্রিকেটার। তবে বৃহস্পতিবার শেষদিনের খেলা খেললেন। শেষ ম্যাচে আবার ম্যাচসেরা হয়ে স্মরণীয় বিদায়ও হলো রাজিনের। প্রথম স্তর ॥ রাজশাহীতে দাপটই দেখিয়েছে স্বাগতিক রাজশাহী। তৃতীয়দিন শেষে রাজশাহীর জিততে দরকার ছিল ১০২ রান। বরিশালের জিততে হলে রাজশাহীর হাতে থাকা ৮ উইকেট তুলে নিতে হতো। কিন্তু বরিশাল তা পারেনি। রাজশাহীর সামনে টার্গেট ছিল ২৮৪ রান। জুনায়েদ সিদ্দিকীর অপরাজিত ১২০ রানের ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৮৪ রান করে জিতে রাজশাহী। বরিশাল প্রথম ইনিংসে ৯৭ রানেই গুটিয়ে যায়। এরপর রাজশাহী প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে ১৬০ রানে অলআউট হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে বরিশাল ৩৪৬ রান করে ফেলে। রাজশাহীর সামনে জিততে ২৮৪ রানের টার্গেট দাঁড় হয়। তৃতীয়দিন শেষ হওয়ার আগে ২ উইকেট হারিয়ে ১৮২ রান করে রাজশাহী। জুনায়েদ সিদ্দিকী ৬৫ ও জহুরুল ইসলাম ২৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। জুনায়েদ অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখান। সকালের সেশনও শেষ হতে দেননি। এর আগেই ১৮১ বলে ১৭ চারে অপরাজিত ১২০ রান করে রাজশাহীকে চ্যাম্পিয়ন করান জুনায়েদ। ৩৪.৮১ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপা জিতে রাজশাহী। প্রথম স্তরে চতুর্থ হয়ে বরিশালের দ্বিতীয় স্তরে অবনমন হয়। রাজশাহীর শিরোপা ছিনিয়ে নেয়ার আশায় ছিল রংপুর। কিন্তু পারেনি। দলটি ষষ্ঠ ও শেষ রাউন্ডের ম্যাচে জিততেই পারেনি। বগুড়ায় খুলনার বিপক্ষে জিততে পারবে কিনা, সেই শঙ্কা তৃতীয়দিনেই ছিল। তাই হলো। ড্র হলো দুই দলের ম্যাচ। তাতে করে রাজশাহীর পেছনেই পড়ে থাকল রংপুর। ২৪.৫৯ পয়েন্ট নিতে পারে রংপুর। তৃতীয়দিন শেষেই ২০৪ রানে পিছিয়ে ছিল রংপুর। প্রথম ইনিংসে খুলনা ২৬১ রান করে। জবাবে রংপুর ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪৯ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। খুলনা দ্বিতীয় ইনিংসে তৃতীয়দিন পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ১৯২ রান করে। চতুর্থদিন জিয়াউর রহমানের ৫২ ও মইনুল ইসলামের ৫৫ রানে ২৮২ রান করে গুটিয়ে যায় খুলনা। রংপুরের সামনে জিততে ২৯৫ রানের টার্গেট দাঁড় হয়। এই টার্গেটে খেলতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৪ রান করতেই দিন শেষ হয়। রাকিন আহমেদ ৭৪ ও মেহেদী মারুফ ৫০ রান করেন। ম্যাচ হয় ড্র। দ্বিতীয় স্তর ॥ কক্সবাজারে ঢাকা বিভাগও শেষ রাউন্ডে অসাধারণ খেলে। তাতে এ স্তর থেকে সর্বোচ্চ পয়েন্ট নিয়ে আগামী মৌসুমে প্রথম স্তরে খেলা নিশ্চিত করে ঢাকা বিভাগ। সিলেটের সঙ্গে ম্যাচটি ড্র হয়েছে। রাজিন সালেহর ৮৭ রানের ইনিংসে ম্যাচ ড্র হয়। ম্যাচসেরাও হন রাজিন। বিদায়টা রাঙিয়ে করলেন। ড্র হলেও ঢাকা বিভাগের পয়েন্টে বিশেষ কোন সমস্যা হয়নি। তৃতীয়দিন সিলেট ৬ রানে পিছিয়ে ছিল। সিলেট প্রথম ইনিংসে ২৩৮ রানে গুটিয়ে যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ১০২ রান করতেই তৃতীয়দিন শেষ হয়। প্রথম ইনিংসে ঢাকা বিভাগ ৩৪৬ রানের বিশাল স্কোর গড়ে। সিলেটের হাতে থাকা ৬ উইকেট যদি চতুর্থদিনে দ্রুত তুলে নিতে পারত ঢাকা বিভাগ তাহলে জয়ের সম্ভাবনাও ছিল। কিন্তু রাজিন সালেহ ২২৪ বল খেলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৮৭ রান করেন। সঙ্গে জাকের আলী অপরাজিত ৭৭ ও শাহানুর রহমান অপরাজিত ৭০ রান করায় সিলেট ৬ উইকেট হারিয়ে ৩০৩ রান করে। তখন দিন শেষ হয়। ঢাকা বিভাগ আর ব্যাট করারই সুযোগ পায়নি। ম্যাচ ড্র হয়। ঢাকার পয়েন্ট তালিকায় ২৯.৩৫ পয়েন্ট যোগ হয়। এ স্তরে ঢাকা বিভাগ ও ঢাকা মেট্রোর মধ্যে সেরা হওয়ার লড়াই ছিল। কিন্তু ঢাকা মেট্রো পারল না। ২৫.১৩ পয়েন্ট নিয়ে এ স্তরের দ্বিতীয় দল হলো। ঢাকা মেট্রো প্রথম ইনিংসে ৩২৮ রান করে। জবাবে চট্টগ্রামও ৩৪৫ রান করে। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ঢাকা মেট্রো তৃতীয়দিন শেষ হওয়ার আগে ৩ উইকেট হারিয়ে ৯৬ রান করে। ৭৯ রানে এগিয়ে থাকে ঢাকা মেট্রো। চতুর্থদিন ৬ উইকেট হারিয়ে ২৬১ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে ঢাকা মেট্রো। শামসুর রহমান ১২১ রান করেন। এরপর চট্টগ্রাম ৪ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রান করতেই দিন শেষ হয়। ম্যাচ হয় ড্র।
×