ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

পাঁচটি স্যুটকেসে বহন করা হয় খাশোগির লাশের টুকরো

প্রকাশিত: ০৭:৪৯, ৬ নভেম্বর ২০১৮

পাঁচটি স্যুটকেসে বহন করা হয় খাশোগির লাশের টুকরো

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেট ভবনে প্রবেশের কিছুক্ষণের মধ্যেই হত্যা করা হয় সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে। খুনের পর লাশ কেটে টুকরো টুকরো করা হয়। পাঁচটি স্যুটকেসে ভরে সেই টুকরোগুলো নিয়ে যাওয়া হয় সৌদি কনসাল জেনারেলের বাসায়। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রবিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে তুরস্কের ইংরেজী দৈনিক ডেইলি সাবাহ। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট ও আল-জাজিরার। তুর্কী কর্মকর্তারা ডেইলি সাবাহকে জানিয়েছেন, সৌদি থেকে ১৫ সদস্যের যে হিট স্কোয়াড বা ঘাতক দল এসেছিল তাদের মধ্যে মাহের আবদুল আজিজ মুতরেব, সালাহ তুবেইগি ও সায়েরুল হারবি খাশোগির দেহ টুকরো টুকরো করেছে। এরপর তারা স্যুটকেসে করে টুকরোগুলো কনস্যুলেট ভবন থেকে সরিয়ে নেয়। মাহের আবদুল আজিজ মুতরেব সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সরাসরি সহকারী, তুবেইগি সৌদি সামরিক বাহিনীর ফরেনসিক বিভাগের প্রধান। সায়েরুল হারবিকে গত বছর সৌদি রাজকীয় গার্ড বাহিনীর লেফটেন্যান্ট পদে উন্নীত করা হয়। জেদ্দায় যুবরাজের বাসভবনের নিরাপত্তায় পারদর্শিতার পুরস্কার স্বরূপ তাকে এ পদে উন্নীত করা হয়। ২ অক্টোবর ২০১৮ স্থানীয় সময় আনুমানিক বিকেল ৩টার দিকে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর হত্যা করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বিকেল ৩টার পর ঘাতক দলের ওই তিন সদস্য একাধিক গাড়িতে করে কনস্যুলেট ভবন থেকে ২০০ মিটার দূরত্বের সৌদি কনসাল জেনারেলের বাসায় যায়। এর দুই ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ওই বাসা থেকে বেরিয়ে যায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সহকারী মুতরেব। এদিকে খাশোগির দেহ টুকরো টুকরো করার পর তা এসিডে গলিয়ে দেয়া হয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন তুরস্কের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। তুর্কী প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ইয়াসিন আখতায় বলেছেন এটাই ‘একমাত্র যৌক্তিক উপসংহার’। তুরস্কের দৈনিক সংবাদপত্র হুরিয়াতকে তিনি বলেন, যারা খাশোগিকে হত্যা করেছে তারা কোন প্রমাণ না রাখতেই তার দেহ এসিডে গলিয়ে দিয়েছে। তুরস্কের কর্তৃপক্ষ খাশোগিকে হত্যার প্রমাণ থাকার দাবি করে আসলেও তার মরদেহ উদ্ধার করতে পারেনি। এমন প্রেক্ষাপটেই খাশোগির মরদেহ নিয়ে এমন আশঙ্কার কথা জানালেন তুর্কী প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা। আখতায় হুরিয়াতকে বলেন, খাশোগির দেহ টুকরো করার কারণ তাতে আরও সহজেই তা এসিডে গলিয়ে ফেলা গেছে। তারা শুধু তার দেহকে টুকরোই করেনি বরং তা ভস্মীভ‚তও করেছে। প্রথমে অস্বীকার করলেও ঘটনার প্রায় ১৭ দিন সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ খাশোগিকে হত্যার কথা স্বীকার করে জানায়, ১৫ সদস্যের একটি দল তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গিয়ে ভুলবশত হত্যা করে ফেলেছে। তবে তুর্কী কর্তৃপক্ষ দাবি করে আসছে, সৌদি যুবরাজের ঘনিষ্ঠ গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও এক ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে গঠিত ওই দলটি খাশোগিকে হত্যার পরই বিশেষ বিমানে ইস্তানবুল ছেড়ে যায়। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান অবশ্য খাশোগিকে ‘বিপজ্জনক ইসলামপন্থী’ বলে উল্লেখ করেছেন বলে খবর বেরিয়েছে। খাশোগিকে হত্যার কথা স্বীকার করার আগেই হোয়াইট হাউসে ফোন করে যুবরাজ এ কথা বলেছিলেন। তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ এই মন্তব্য করা বা হত্যাকাণ্ড রাজপরিবারের কারও জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, সব ঘটনা উন্মোচনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তারা।
×