ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুই প্রকল্পে ২০ কোটি ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৬ নভেম্বর ২০১৮

দুই প্রকল্পে ২০ কোটি ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তাসহ সরকারের দুটি প্রকল্পে ২০ কোটি ডলার ঋণ ও অনুদান দিচ্ছে বিশ^ব্যাংক। যা স্থানীয় মুদ্রায় বা ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। প্রকল্প দুটি হচ্ছে, সাসটেইনেবল ফরেস্ট এ্যান্ড লাইভলিহুডস (সুফল) প্রকল্প এবং সেকেন্ড রিসিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন (রস্ক) প্রকল্প। সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মনোয়ার আহমেদ এবং বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রিডিরেক্টর কিমিয়াও ফান। এই চুক্তির ফলে আরও একটি প্রকল্পে বেশি সুদে ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তার প্রকল্পে প্রায় আড়াই শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে বাংলাদেশকে। এ নিয়ে দুটি প্রকল্পে বেশি সুদে ঋণ দেয়া শুরু করল বিশ্বব্যাংক। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সুফল প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংক ঋণ হিসেবে দেবে ১৭ কোটি ডলার। এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানিক শক্তিশালীকরণ, তথ্য পদ্ধতি ও প্রশিক্ষণ দেয়া, গবেষণা, সহযোগিতামূলক বন ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ এবং রক্ষিত বন এলাকা উন্নয়ন, প্রকল্প এলাকার বন-নির্ভর জনগোষ্ঠীর বিকল্প আয়ের সুযোগ বৃদ্ধি, বন সম্প্রসারণ এবং বনের বাইরে বৃক্ষ রোপণ বাড়ানো এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনা, পরিবীক্ষণ এবং রিপোর্টিং করা হবে। ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ (রেয়াতকাল) ৩০ বছরে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এ ঋণের উত্তোলিত অর্থের ওপর ১ দশমিক ২৫ শতাংশ সুদ এবং শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। টেকসই বন ও জীব জীবন প্রকল্পে একটি সহযোগী বন ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রায় ৭৯,০০০ হেক্টর জঙ্গলে গাছ লাগাবে। বনভূমিতে ভূমি অনুপাত বাংলাদেশে মাত্র ১১ শতাংশ যা এশিয়ার গড় তুলনায় ২৬ শতাংশ কম। বন বৃদ্ধি করে প্রকল্পটি দেশের জলবায়ু স্থিতিশীল হতে সাহায্য করবে। এটি প্রায় ৪০,০০০ দরিদ্রকে সাহায্য করবে। এছাড়াও স্থানীয় পরিবারগুলো বিকল্প আয় কার্যক্রমের মাধ্যমে আরও বেশি অর্থ উপার্জন করবে। বিশ^ব্যাংক বলছে কক্সবাজার এলাকায় সাত লাখ ২৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা প্রবেশের কারণে প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর বন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে ওই সব এলাকায় প্রায় বিশ হাজার হেক্টর জমিতে বনের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ করা হবে। অন্যদিকে, রস্ক প্রকল্পটির অতিরিক্ত অর্থায়ন হিসেবে আড়াই কোটি ডলার অনুদান হিসেবে দেবে বিশ্বব্যাংক। এ প্রকল্পের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের শিশুসহ অন্যদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। এক্ষেত্রে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ দেয়া হবে। এর মধ্যে পাঠ্যপুস্তক ও উপকরণ সামগ্রীর পরিকল্পনা, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, মহিলা শিক্ষক নিয়োগ, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জন্য নতুন শিক্ষা কেন্দ্র তৈরি ও বিদ্যমান শিক্ষা কেন্দ্রকে সহায়তা দেয়া, ক্যাম্পের শিক্ষা কেন্দ্রের জন্য শিক্ষক ও প্রশিক্ষক নিয়োগ এবং নিয়োগকৃত শিক্ষক ও প্রশিক্ষকের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সকল অধিদফতরগুলোর ব্যবস্থাপনা, সমন্বয় ও পর্যবেক্ষণ সম্পর্কিত সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলা ও টেকনাফ উপজেলার শিক্ষা অফিসার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য এ সক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। ডিআরপির শিক্ষার জন্য কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংস্কার সাধন ও পর্যবেক্ষণমূলক কার্যক্রম এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম নেয়া হবে। চুক্তি শেষে ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমেদ বলেন, বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। এটি বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় সহায়তা। আশা করি বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা হিসেবে বিশ্বব্যাংক সব সময় আমাদের পাশে থাকবে। কিমিয়াও ফান বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য বিশ্বব্যাংক অনুদান দিয়ে সহায়তা করছে। এসব সহায়তা শুধুমাত্র রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যে উপকার পাবেন তা নয়, স্থানীয় জনগোষ্ঠীরাও উপকৃত হবেন।
×