ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশসহ আহত ২০

রংপুরে আদালত চত্বরে আওয়ামী লীগ বিএনপি সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৫ নভেম্বর ২০১৮

 রংপুরে আদালত চত্বরে আওয়ামী লীগ বিএনপি সংঘর্ষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর, ৪ নবেম্বর ॥ রংপুরে ব্যারিস্টার মইনুলকে নিয়ে স্লোগান, পাল্টাস্লোগান দেয়াকে কেন্দ্র করে রবিবার রংপুর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীদের ধাওয়া, পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় ৫ পুলিশসহ উভয়পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষে আদালত চত্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ৬ রাউন্ড রবার বুলেট ও ২৫ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের জন্য উভয় দল একে অপরকে দায়ী করেছে। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এসি আলতাব হোসেন আদালত চত্বরে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, ব্যারিস্টার মইনুলের জামিন শুনানি শেষে জেলহাজতে নিয়ে যাওয়ার পর বিএনপির নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার নামে স্লোগান দিতে শুরু করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় উভয়পক্ষ ধাওয়া, পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। সংঘর্ষের মাঝে পুলিশ অবস্থান নিলে উভয়পক্ষকে নিবৃত করে। পরে আবারও ধাওয়া, পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হলে পুলিশ ৬ রাউন্ড রবার বুলেট ও কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তিনি দাবি করেন সংঘর্ষের সময় তিনিসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বাকি ৪ জনের নাম জানাতে পারেনি। সংঘর্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এ্যাডভোকেট দিলশাদ হোসেন মুকুল মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। আহত ক’জনকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদি হাসান রনি ঘটনার জন্য ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীদের দায়ী করে বলেন, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের নামে অশ্লীল ভাষায় স্লোগান দিতে শুরু করলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা তাদের বাধা দেয়। এক পর্যায়ে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে উভয়ের মাঝে সংঘর্ষ বাধে। এতে তাদের দলের ১০ জন আহত হয়। জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক তৌহিদুল রহমান টুটুল জানান, আমরা আদালত চত্বরে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিলাম। কিন্তু জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে বিএনপি যে কান্ড ঘটাল তা কাম্য ছিল না। রংপুর মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি সামছুজামান সামু জানান, মামলার হাজিরা দিতে আদালতে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালালে ছাত্রদল ও যুবদলের কয়েক নেতাকর্মী আহত হয়। তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতে এই ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এর আগে দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে নেয়া হলে তার গাড়ি বহরের ওপর হামলা চালায় বিক্ষব্ধ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা। রংপুরে মইনুলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা রংপুর থেকে জানান, রংপুরে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। রবিবার দুপুর ২টার দিকে এ আদেশ দেন অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আরিফা ইয়াসমিন মুক্তা। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ২২ নবেম্বর। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে সোয়া ১টা পর্যন্ত জামিন আবেদনের শুনানি হয়। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মানহানি মামলায় গ্রেফতার ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে জামিন শুনানির জন্য রংপুরের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেয়া হলে মইনুলের প্রতি ডিম ও জুতা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
×