ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আব্দুল মালেক

তাজউদ্দীনের মুখনিঃসৃত এক অসাধারণ গল্প এবং ঘটনাবহুল নবেম্বর ’৭৫-এর কিছু দৃশ্যপট

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ৩ নভেম্বর ২০১৮

 তাজউদ্দীনের মুখনিঃসৃত এক অসাধারণ গল্প এবং  ঘটনাবহুল নবেম্বর ’৭৫-এর কিছু দৃশ্যপট

তাজউদ্দীন আহমদ জাসদে যোগদান করছেন- রাজনৈতিক দিগন্তে আলোড়ন তুলে এ রকম একটি ফাটাফাটি ব্যানার হেডলাইন করেছিল তদানীন্তন ‘গণকণ্ঠ’ পত্রিকা। বঙ্গবন্ধুর সুদীর্ঘকালীন সহচর তাজউদ্দীন যাকে বলা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ছায়া, নেহরুর বিষয়ে যেমনটি বলা হতো মহাত্মা গান্ধী প্রসঙ্গে বা চৌ এন লাই যেমন ছিলেন মাও সে তুংয়ের। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন স্বাধীনতা ঘোষণা দেয়ার পর পরই বন্দী হলেন পাকিস্তানে কারাগারে, তখন পূর্ব নির্দেশনা অনুযায়ী যে তাজউদ্দীন আহমেদ ১৯৭১ সালে তাৎক্ষণিকভাবে তুলে নিয়েছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব এবং যিনি ছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী। তিনি মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারিত হওয়ার কারণে সত্যি কি দলত্যাগ করতে যাচ্ছেন? চারদিকে সরব আলোচনা ভেসে বেড়াতে লাগল মুজিবের দীর্ঘদিনের সহচর এই নেতা নাকি অবশেষে বঙ্গবন্ধু এবং আজীবনের দলকে পরিত্যাগ করে চলে যাচ্ছেন অন্যত্র! সে সময়টা সম্পর্কে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর ধ্বংসলীলায় বিধ্বস্ত নবীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে তখন চলছিল এক সুবিশাল কর্মযজ্ঞ। সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক কাঠামোটি একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের উপযোগী করে সেখানে দক্ষ ও গতিশীল প্রশাসন গড়ে তোলাও সহজ কাজ ছিল না। উপরন্তু একদিকে যেমন ছিল পৃথিবীর নানা দেশ থেকে বাংলাদেশের জন্য স্বীকৃতি আদায়ের দুরূহ কাজ অন্যদিকে বিপর্যস্ত রেললাইন, ধ্বংসপ্রাপ্ত ছোট-বড় হাজারও রাস্তা, ব্রিজ, সেতু ও কালভার্ট পুনর্নির্মাণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া। এমন কাজে ভারতীয় সেনা ইঞ্জিনিয়ারদের অবদানের কথা স্বীকার করতেই হবে। পাকিস্তানী শত্রু সেনারা দেশের নৌবন্দর চট্টগ্রাম ও চালনাকে অকেজো করে পালিয়ে যাওয়ার সময় জলেস্থলে যে মাইনগুলো পুঁতে রেখেছিল সেগুলো অপসারণে কাজ করেছিল তদানীন্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন। অন্য দিকে পাকিস্তানীদের হাতে ফসলের পোড়ামাটি আবার সবুজ শস্যে ভরে দিয়ে খাদ্যে স্বয়ংম্ভরতা আনার জন্য দেশময় সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়ে যাচ্ছিলেন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। শুরুতেই যে কথা বলছিলাম, গণকণ্ঠ পত্রিকায় তাজউদ্দীন আহমদ সম্পর্কে প্রকাশিত এক খবর নিয়ে। গণকণ্ঠ নামে এই পত্রিকাটি তৎকালীন জাসদের মুখপত্র হিসেবে প্রকাশিত হয়েছিল। ইতোপূর্বে দীর্ঘ সংগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে বিভক্ত করে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের অলীক স্বপ্ন রচনার মাধ্যমে গঠন করা হয়েছিল জাসদের ছাত্রফ্রন্ট ছাত্রলীগ। চারধারে স্বাধীনতা বিরোধীদের সৃষ্ট চরম অরাজকতার মধ্যে বিপ্লব প্রতিষ্ঠার নামে জাসদ উস্কে দিয়েছিল নিত্য নতুন বিশৃঙ্খলা। আর তাদের মুখপত্র গণকণ্ঠ পত্রিকাটির একটি মাত্র লক্ষ্য ছিলÑ বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার। তাজউদ্দীন জাসদে যোগদান সংক্রান্ত খবরটি এক মোক্ষম অস্র হিসেবে নিয়ে বঙ্গবন্ধু বিরোধী মহলের সঙ্গে সে সময় ঘাপটি মেরে থাকা স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ভীষণ উল্লসিত ছিল। এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শুধু বিরোধীরাই নয়, সর্বশ্রেণীর মানুষের মনেও কৌতূহলের অন্ত নেই। সত্যি কি তাজউদ্দীন জাসদে যোগদান করছেন? কিন্তু গণকণ্ঠের সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার বেশকিছু সময় পেরিয়ে গেল অথচ তাজউদ্দীন সাহেবের পক্ষ থেকে দলত্যাগ বিষয়ে কোনো ঘোষণা শোনা যাচ্ছে না। তখন আমি একদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে মাস্টার্সের ছাত্র ও অপরদিকে সাংবাদিকতা করছি। দিনে ক্লাস ও চাকরি করি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত সাপ্তাহিক ‘পদক্ষেপ’ পত্রিকায়। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী শেখ শহীদুল ইসলাম ছিলেন পত্রিকাটির সম্পাদকম-লীর সভাপতি। স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে শেখ শহীদ ছিলেন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার বিএলএফ কমান্ডার। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সংবাদ বিশ্লেষক ও মুজিবনগর থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বাংলার বাণী পত্রিকার সম্পাদক আমির হোসেন ছিলেন পদক্ষেপের সম্পাদক। আমার তখনকার আবাসস্থল ছিল মহসীন হল। স্বাভাবিকভাবেই মুক্তিযুদ্ধের নেতা তাজউদ্দীনের এই বিষয়টি নিয়ে আমার নিজেরও কৌতূহল কম নয়। সে সময়টায় মন্ত্রিত্ব ছাড়লেও তাজউদ্দীন তখনও সরকারী বাসভবন মিন্টো রোডের বাড়িতেই থাকছেন। তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহসীন হলের ছাত্র মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইসলামসহ আমরা ক’জন এ বিষয়টা খোলাসা করতে পদত্যাগী নেতার সঙ্গে দেখা করার জন্য চলে গেলাম তার সরকারী বাসভবনে। সামান্য সময়ের মধ্যেই তিনি তার বসবার ঘরে এলেন আমাদের সাক্ষাত দিতে। তার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা হতে লাগল। কিন্তু আমরা অবাক হলাম এই কারণে যে, তিনি আমাদের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলাপচারিতা চালিয়ে গেলেও আসল বিষয়ে একেবারেই ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যাচ্ছেন। ফলে একসময় উসখুস করতে লাগলাম সবাই। অবশেষে দলের মধ্য থেকে উৎসাহী কেউ কেউ ঘটনা সম্পর্কে উস্কানি দেয়ার জন্য আবোল তাবল বলা শুরু করলেন বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে। যেমন নেতা তার প্রতি অন্যায় করেছেন, দেশের অনেক কিছুই সঠিকভাবে চলছে না, ইত্যাদি হেন তেন নানান কথাবার্তা। এত সব প্রলাপের পরও দেখা গেল বেশ কিছুটা সময় কোন মন্তব্য না করে তিনি এসব অর্বাচীন কথাবার্তা নীরবে শুনে গেলেন। কিন্তু তিনি যে তাজউদ্দীন আহমেদ সে কথা হয়ত আমরা সে সময়টায় স্মরণ রাখতে পারিনি। দেখা গেল বেশ কিছুটা সময় ধরে এতে যোগ না দিয়ে, বাদ প্রতিবাদ না করে তিনি নীরবে শুনে গেলেন কটুকাব্য। একসময় স্মিত হাস্যে বললেনÑ এবার আমি একটা গল্প বলি তোমরা শোন। এরপর আমরা তার কাছ থেকেই সেই গল্প শোনার আগ্রহে অধীর হয়ে চুপটি করে অপেক্ষা করতে লাগলাম। সে গল্পে আসছি পরে। সেদিন তার মুখ থেকে এক অসাধারণ গল্প শোনে নতুন করে চিনে ছিলাম তাজউদ্দীনকে। ॥ দুই ॥ বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে ২৭ অক্টোবর ’৭৫ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করার প্রাথমিক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল। সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে ৪ নবেম্বর প্রতিবাদ বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রকৃতপক্ষে ’৭৫-এর ১৫ আগস্টে সেনাবাহিনীর উশৃঙ্খল কতিপয় ঘাতক ফারুক-রশিদ-ডালিম চক্রের হাতে জাতির পিতা ও তার পরিবারবর্গ নিহত হওয়ার পর থেকেই গোপনে ও বিচ্ছিন্নভাবে সংঘটিত হওয়ার চেষ্টা করে আসছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ছাত্রলীগ এবং অবশেষে অক্টোবরে তারা প্রকাশ্যে আসে। তাদের সঙ্গে শামিল হয় ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরাও। এখানে একটা বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচনে ঐক্যের ভিত্তিতে নির্বাচন করেছিল ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন প্যানেল। সেই যৌথ প্যানেল থেকে ছাত্র ইউনিয়ন থেকে নূহ আলম লেনিন ভিপি এবং ছাত্রলীগের ইসমত কাদির গামা জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু তাদের প্রতিপক্ষের সশস্ত্র মহড়া ও বোমাবাজিতে নির্বাচনটি পন্ড হয়ে যায়। ফলে পূর্ববর্তী নির্বাচনে বিজয়ী সহ-সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম তখনও ছিলেন ভিপি এবং মাহবুব জামান জিএস। উভয় দল এই মিছিল সফল করার ব্যাপারে সংগোপনে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছিল একযোগে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসীন হলের গেস্টরুমে দুই দলের বঙ্গবন্ধুপ্রেমিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছিল দফায় দফায়। তাছাড়া বাকি হলগুলোর বহু কক্ষে দলবদ্ধ হয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সচতনতার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে লিফলেট বিলি করা শুরু করে। এক পর্যায়ে মহসীন হলের ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী সমন্বয়ে সাধারণ ছাত্ররা প্রতিবাদী কর্মসূচী সফলে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত হতে থাকে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই মিছিলের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সাংসদ রাশেদ মোশারফ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর সেনানী খালেদ মোশাররফের মা। ওই দিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান মন্ডল কিছু কর্মীসহ চলে আসেন তার পুত্র রাশেদ মোশারফের কলাবাগানের বাসায়। তিনি এই সাহসী মাতাকে নিয়ে চলে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। অপরদিকে সকাল দশটার অনেক আগে থেকেই এই লক্ষ্যে ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবনে সমবেত হতে শুরু করে। অতঃপর মিলিতভাবে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাসভবন অভিমুখে যাত্রা শুরু হলো সেই সমাবেশের। এখনও মনে আছে সেই বেদনাঘন পদযাত্রায় ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিসহ নানা ব্যানার ও ফেস্টুন। সেগুলোতে লেখা ছিল ‘এক মুজিব লোকান্তরে লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে,’ শেখ মুজিব লও সালাম, জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু ইত্যাদি। সেখানে মুহুর্মুহু স্লোগান উঠছিল ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চাই’ ‘জিয়া-ফারুক-ডালিম-রশিদের ফাঁসি চাই’ ইত্যাদি। সেই মিছিলে রাশেদ মোশাররফের মায়ের এক পাশে ছিলেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং আক্তারুজ্জামান মন্ডল। কিছু সংসদ সদস্যও ছিলেন সেই মিছিলে। মিছিলটি যতই অগ্রবর্তী হচ্ছিল ততই বৃদ্ধি হচ্ছিল এর কলেবর। কারণ, ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে তখন যুক্ত হচ্ছিল সাধারণ মানুষেরা। আমার রুমমেট ও সহপাঠী ইমাদুল মজিদ হিরু ও আমি মিছিলের সঙ্গে সঙ্গে হাঁটছিলাম। যখন আমরা নিউমার্কেট অতিক্রম করছি এমন সময় আমাদের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মজিদ হারুন ও অধ্যাপক তৌহিদুল আনোয়ারের সঙ্গে দেখা। তারা হিরুকে ডেকে বললেনÑ ‘পরিস্থিতি কিন্তু অনুকূল নয়। তাকিয়ে দেখো ডাইনে বাঁয়ের প্রতিটি ভবনের ছাদে রাইফেল ও মেশিনগান তাক করে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেনা সদস্যরা।’ এই সতর্কবার্তা সবাইকে জানিয়ে দিতে শিক্ষক দু’জন আমাদের হলে ফিরে যেতে বললেন। কিন্তু নানা ভয়ভীতি উপেক্ষা করে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত বিশাল সেই বিক্ষোভ মিছিলটি এগিয়ে চলল ৩২ নম্বর বাড়ির দিকে। এটি যখন ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু বাসভবনে পৌঁছায় তখন এর শেষ ভাগ দেখা যাচ্ছিল না। বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচারের দাবি জানিয়ে সংক্ষিপ্ত এক সমাবেশের ভেতর দিয়ে মিছিলটি শেষ হয়। ॥ তিন ॥ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে একটি হত্যাকা- সংঘটিত হয়েছেÑ এ ধরনের একটি সংবাদ সে সময় থেকে একটি গুজবের মধ্য দিয়ে ভাসছিল। কিন্তু সেখানে কাকে হত্যা করা হয়েছে সে বিষয়ে কোন সঠিক তথ্য ঠিকমতো আসছিল না। সে সময়কার সরকার সেনাবাহিনী, মিডিয়া অর্থাৎ সংবাদপত্র টিভি-রেডিও এ বিষয় একেবারে নীরব থেকেছে। চলবে... লেখক : আমেরিকা প্রবাসী সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
×