ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সাফ অনুর্ধ-১৫ ফুটবল, বাংলাদেশ ২-১ নেপাল, গত আসরের প্রতিশোধ লাল-সবুজদের, সেমিতে প্রতিপক্ষ ভারত

দশজনে খেলেও নেপালকে হারিয়ে গ্রুপসেরা বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ৩০ অক্টোবর ২০১৮

দশজনে খেলেও নেপালকে হারিয়ে গ্রুপসেরা বাংলাদেশ

রুমেল খান ॥ দু’দল শেষ চারে নাম লিখিয়েছিল আগেই। শুধু বাকি ছিল গ্রুপসেরা নির্ধারণীর। সেই কাজটি বেশ সূচারুভাবেই সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশের কিশোর ফুটবলাররা। সোমবার তারা অবতীর্ণ হয়েছিল কঠিন লড়াইয়ে স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষে, ললিতপুরের আনফা কমপ্লেক্সের মাঠে। দর্শক-সমর্থন না পেয়েও, দশজন নিয়ে খেলেও ঠিকই ২-১ গোলের জয় কুড়িয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ দল। এই জয়ে সাফ অ-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপে ‘এ’ গ্রুপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলো তারা। ২ খেলায় তাদের পয়েন্ট ৬। সমান খেলায় নেপালের পয়েন্ট ৩। আর মালদ্বীপ পয়েন্টশূন্য। আগামী ১ নবেম্বর এই ভেন্যুতেই প্রথম সেমির ম্যাচে খেলতে নামবে ২০১৫ আসরের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। তাদের প্রতিপক্ষ গত আসরের শিরোপাধারী-শক্তিশালী ভারত। সোমবার ভুটানকে ৪-০ গোলে হারিয়ে ‘বি’ গ্রুপে রানার্সআপ হয় ভারত। একইদিনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সেমিতে ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান মোকাবেলা করবে ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ নেপালের। সোমবার ম্যাচটি জিতে এক বছর আগের পুরনো এক হিসেব-নিকেশ চুকিয়ে দিল লাল-সবুজ বাহিনী। এই আসরেই ২০১৭ সালে তারা সেমিতে এই নেপালের কাছেই তারা হেরে গিয়েছিল ২-৪ গোলে। সোমবার তাদের হারিয়ে প্রতিশোধটা বেশ কড়ায়-গ-ায়ই নিয়ে নিল তারা। অবশ্য এই ম্যাচে ড্র করলেও গ্রুপসেরা হতে পারত বাংলাদেশ। কেননা গোল তফাতে নেপালের চেয়ে তারাই ছিল এগিয়ে। চলমান আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপকে ৯-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। আর মালদ্বীপকে ৪-০ গোলে হারিয়েছিল নেপাল। সোমবার ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে পাওয়া প্রথম সুযোগ পেয়েই তা দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে লিড নেয় লাল-সবুজ বাহিনী। ফ্রি কিক পায় তারা। মেহেদী হাসানের ফ্রি কিকে ইবনে আহাদ শাকিল চমৎকার হেড করে এগিয়ে নেন দলকে (১-০)। ২১ মিনিটে সতীর্থের ক্রসে নামাস থাপা মাগার হেড দিতে ব্যর্থ হলে সমতায় ফেরার সুযোগ নষ্ট করে হিমালয়ের দেশ। ২৮ মিনিটে বাংলাদেশের রাজন হাওলাদারের শট ক্রসবার ফিরিয়ে দিলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশও। ৩৪ মিনিটে ডি বক্সের মধ্যে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়কে মারাত্মক ফাউল করে গোলরক্ষক মিতুল মারমা লালকার্ড পেলে দশ জনের দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ। পেনাল্টি থেকে গোল করে নেপালকে সমতায় ফেরান জান লিম্বু (১-১)। এরপর সবাই ধরেই নিয়েছিলেন এক খেলোয়াড় কমে যাওয়ায় শক্তি খর্ব হয়ে যাবে বাংলাদেশের। ফলে একাধিক গোল হজম করে হেরে যাবে বাংলাদেশ। কিন্তু হয় এর উল্টোটিই। দলের শক্তি কমলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পাওয়া সুযোগ কাজে লাগিয়ে আবারও এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। সতীর্থের কাট ব্যাকে রাজনের নিখুঁত প্লেসিং শট ঠিকানা খুঁজে পায় (২-১)। দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠা নেপালকে বেশ দক্ষতার সঙ্গেই রুখে দেয় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত তাদের এই প্রচেষ্টা সফল হয়। খেলা শেষের বাঁশি বাজলে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে অপরাজিত গ্রুপসেরা এবং প্রতিশোধ নেয়ার চিত্তসুখ নিয়ে মাঠ ছাড়ে মোস্তফা আনোয়ার পারভেজের দল। ম্যাচ শেষে কোচ পারভেজ বলেন, ‘নেপালের সঙ্গে আমার একটি তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই আসরে গত বছর তাদের কাছে আমরা ৪-২ গোলে হেরে গিয়েছিলাম। ফলে এই ম্যাচ নিয়ে মনের ভেতর সেই ম্যাচ হারার জেদ কাজ করছিল। আজকের জয়টা আমাদের জন্য খুবই জরুরী ছিল। আমরা গেমপ্ল্যান অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করে সফল হয়েছি। শুরুতেই গোল করে লিড নিই। তবে গোলরক্ষক লাল কার্ড পাওয়ায় আমরা দশজনের দলে পরিণত হই। তখন আমরা আবারও গেমপ্ল্যান পরিবর্তন করি এবং সে অনুযায়ী খেলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আরেকটি গোল পেয়ে যাই এবং সেই লিড শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে সক্ষম হই।’
×