ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্ভোগে পড়বে অনার্স পরীক্ষার্থীরা

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র নির্ধারণ নিয়ে বিতর্ক

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ২৭ অক্টোবর ২০১৮

  জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে  পরীক্ষা কেন্দ্র নির্ধারণ নিয়ে বিতর্ক

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় বর্ষ অনার্স পরীক্ষার কেন্দ্র নির্ধারণ নিয়ে বির্তক সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরের অজ্ঞতার কারণে কোন কোন কলেজের পরীক্ষার্থীকে ৭০-৮০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে হবে। অভিযোগ উঠেছে পরীক্ষার্থীদের অধ্যায়নরত কলেজ থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রের দূরত্ব বিবেচনা না করেই কেন্দ্র নির্ধারণের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যা সম্পূর্ণ অমানবিক ও ভোগান্তির শিকার হবে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দফতর সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২য় বর্ষ স্নাতক(সম্মান) শ্রেণীর পরীক্ষা আগামী ১১ নবেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। গত ২৩ অক্টোবর ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান ও অনার্স ২য় বর্ষ শাখার উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মোহসীন ইকবাল স্বাক্ষরিত। এই কেন্দ্র নির্ধারণ বিজ্ঞপ্তি তথ্য প্রযুক্তি দফতরের পরিচালককে ওয়েবসাইটে দেশের ৭টি বিভাগের ৬৪টি জেলায় ২৭০টি পরীক্ষা কেন্দ্রের তালিকা দেয়া হয়েছে। এমনকি তা প্রকাশের জন্য অনুরোধ করেছেন ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান। এছাড়াও ২৭০টি কেন্দ্রের সুপারভাইজিং কর্মকর্তা হিসেবে ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসকদের দায়িত্ব পালনের জন্য চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগীয় প্রধান, ভাইস চ্যান্সেলর দফতরের উপ- রেজিস্ট্রার ও সচিব, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর দফতরের সহকারী রেজিস্ট্রার, এই তালিকা অনুযায়ী বেশ কয়েকটি কলেজের পরীক্ষার সেন্টার নির্ধারণ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রাম শহর থেকে মীরশ্বরাইয়ের নিজামপুর কলেজ কেন্দ্রের দূরত্ব ৫০ কিলোমিটারেরও বেশি। এই কলেজে নগরীর উত্তর কাট্টলী আলহাজ মোস্তফা হাকিম কলেজের শিক্ষার্থীরা ৫০ কিলোমিটার ও ভাটিয়ারির বিজয় স্মরণি কলেজের শিক্ষার্থীদের ৩৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে নিজামপুর কলেজে পরীক্ষা দিতে হবে। ফটিকছড়ি কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রায় ৩০ কিলোমিটার ও রাউজান কলেজের শিক্ষার্থীদের ২০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে হাটহাজারী কলেজে, গাছবাড়িয়া সরকারী কলেজকে ২০ কিলোমিটার ও কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রায় ২৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে পটিয়া সরকারী কলেজে পরীক্ষা দিতে হবে। ইমাম গাজ্জালী কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রায় ৩০ কিলোমিটার, রাঙ্গুনিয়া কলেজের শিক্ষার্থীরা ৪২ কিলোমিটার, স্যার আশুতোষ সরকারী ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থীরা ৩০ কি.মি. এবং আনোয়ারা কলেজের শিক্ষার্থীরা ২৫ কি.মি. পাড়ি দিয়ে নগরীর চাঁন্দগাঁও থানাধীন হাজেরা-তুজ কলেজে পরীক্ষা দিতে হবে। এদিকে, নোয়াপাড়া কলেজের পরীক্ষার্থীদের ৩৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে নগরীর এম ই এস ওমর গণি কলেজে পরীক্ষা দিতে হবে। হাটহাজারী কলেজের শিক্ষার্থীদের ৩০ কি.মি., সন্দ্বীপের মোস্তাফিজুর রহমান কলেজ, সরকারী এবি কলেজ, আলহাজ মুস্তাফিজুর রহমান কলেজের শিক্ষার্থীরা স্পিড বোট বা লঞ্চে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে নগরীর চট্টগ্রাম কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে হবে। তবে আকাশের অবস্থা যদি কিঞ্চিত খারাপও হয় তাহলে সন্দ্বীপের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারবে না। কারণ লঞ্চ ও স্পিডবোট সার্ভিস বন্ধ থাকবে। অথচ সন্দ্বীপের শিক্ষার্থীরা সেখানের যে কোন কলেজে পরীক্ষা দিতে পারত। আরও অভিযোগ উঠেছে, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরের ধারণা নেই দেশের কোন অঞ্চলের মানুষ কিভাবে জীবনযাপন করে। কারণ সন্দ্বীপের মানুষের জীবিকা দেশের অন্য অঞ্চল থেকে ভিন্ন। আকাশের বা আবহাওয়া পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করেই সন্দ্বীপে স্পিড বোট বা লঞ্চ চলাচল করে। সন্দ্বীপ থেকে লঞ্চে কুমিরার গুপ্তছড়া ঘাটে পৌঁছাতে ২-৩ ঘণ্টা সময় লাগে। আর স্পিড বোটে পৌঁছাতে সময় লাগে ১০-১৫ মিনিট। ছোট কুমিরা থেকে মহাসড়কে ২৫ কি.মি. দূরে চট্টগ্রাম কলেজে পৌঁছাতে সময় লাগবে কমপক্ষে সোয়া একঘণ্টা।
×