ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আলোচনা সভায় বিশেষজ্ঞদের অভিমত

ডেল্টাপ্ল্যান বাস্তবায়নে এখনই দরকার অর্থায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ২২ অক্টোবর ২০১৮

 ডেল্টাপ্ল্যান বাস্তবায়নে এখনই দরকার অর্থায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শতবর্ষী ‘ডেল্টা প্ল্যান’ বাস্তবায়নে দীর্ঘমেয়াদী গবেষণা-পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি এখন থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অর্থায়ন এবং অবকাঠমোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। পরিকল্পনার মাধ্যমে বন্যা, নদী ভাঙ্গন, নদী শাসন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামের পানি সরবরাহ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগর বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশী বিশেষজ্ঞদের দ্বারা প্রণীত এ পরিকল্পনা সঠিক নেতৃত্বের দ্বারা বাস্তবায়ন করতে হবে। সম্প্রতি জার্নালিস্ট ফর ডেভেলপমেন্ট আয়োজিত ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেছেন। জার্নালিস্ট ফর ডেভেলপমেন্টের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম। বক্তব্য রাখেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মালেক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরেটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ এ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের ডিন ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ও বুয়েটের প্রাণিসম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. উম্মে কুলসুম নভেরা। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, সারাদেশের সমস্যা চিহ্নিত করে শতবর্ষী ডেল্টা পরিকল্পনায় ছয়টি হটস্পট নির্ধারণ করে ৩৩ ধরনের চ্যালেঞ্জ শনাক্ত করা হয়েছে। হটস্পটগুলো হচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চল, বরেন্দ্র ও খরাপ্রবণ অঞ্চল, হাওড় ও আকস্মিক বন্যাপ্রবণ অঞ্চল, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল, নদী ও মোহনা অঞ্চল এবং নগরাঞ্চল। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিসহ ভিশন-৪১ এর লক্ষ্য অর্জনে সামগ্রিকভাবে এর সঙ্গে যুক্ত প্রধান উপাদানগুলোর সমন্বয়ের মাধ্যমে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব। এসডিজিসহ আমাদের সব লক্ষ্যমাত্রা ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নের মাধ্যমে পূরণ হবে। ’৩০ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছবে বাংলাদেশ। তখন মাথাপিছু আয় হবে ৪ হাজার ৬২৫ মার্কিন ডলার। আবার ৪১ সালে গিয়ে মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ১৬ হাজার মার্কিন ডলার। ডেল্টা পরিকল্পনা গ্রহণ করলে জিডিপি বাড়বে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। দারিদ্র্য দ্রুত কমে আসবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ’২৭ সালের মধ্যে দেশ দারিদ্র্যমুক্ত হবে। এতে আরও বলা হয়, ডেল্টা প্ল্যানে প্রকৃতির সঙ্গে খাপখাইয়ে বসবাসের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনা করতে ২৬ গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নদী নাব্য ফিরে পাবে। পরিকল্পিতভাবে নদীগুলোর নাব্য রাখতে পারলে দেশে আর বন্যা থাকবে না। প্ল্যানে যমুনা নদীর সম্পূর্ণ ম্যাপ করে দেখানো হয়েছে, কোথায় নদীর চ্যানেল হবে তাও চিহ্নিত করা হয়েছে। এলাকাভিত্তিক কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে তাও দেখানো হয়েছে। বর্তমানে ২৫ শতাংশ পানি আসে পদ্মা থেকে। ড. আইনুন নিশাত বলেন, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অর্থায়ন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দঁাঁড়াবে। আর সেজন্য এখন থেকেই অর্থের উৎস ঠিক করে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। দেশে অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে ’১৭ সালে সবচেয়ে বেশি পানি প্রবাহিত হওয়ার পরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এবং আমরা টের পাইনি। এজন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন খুবই জরুরী।
×