ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

২৪ ঘণ্টায়ই উঠে গেল সড়কের কার্পেটিং

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ৭ অক্টোবর ২০১৮

২৪ ঘণ্টায়ই উঠে গেল সড়কের কার্পেটিং

নিজস্ব সংবাদদাতা,পটিয়া, ৬ অক্টোবর ॥ চট্টগ্রামের পটিয়ায় রাস্তার উন্নয়নের নামে চলছে হরিলুট। ঠিকাদার ও এলজিইডি কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের আব্বাস সিকদার সড়কের কার্পেটিং কাজ ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে উঠে গেছে। বর্তমানে ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল অনুপযোগী হয়ে ওঠেছে। নিম্নমানের কাজ বন্ধ রাখার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে গত তিন দিন আগেও এলজিইডির পক্ষ থেকে বলা হলেও তারা কর্ণপাত করেনি। ভোরে ও গোপনে কার্পেটিং রাস্তার কাজ করতে গিয়ে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-কে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য কার্পেটিং রাস্তার নামে অর্থ হরিলুট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। নিম্নমানের কাজ করে অর্থ হরিলুটের খবর ছড়িয়ে পড়লে পটিয়ার সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী শনিবার দুপুরে ঠিকাদার, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শংকর কুমার দে ও প্রকৌশলীকে জরুরী ভিত্তিতে তলব করেন এবং কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। মেসার্স শাহ জব্বারিয়া কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্পেটিং রাস্তার কাজটি পেয়েছে। এদিকে, নিম্নমানের কাজের ফলে কার্পেটিং ওঠে গেলে গ্রামবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করলে এলজিইডির পটিয়ার প্রকৌশলী বিশ^জিৎ দত্ত সরেজমিন গিয়ে সত্যতা পাওয়ায় রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। জানা গেছে, উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের আব্বাস সিকদার সড়কের ১হাজার ৯শ’ মিটার কার্পেটিং রাস্তার কার্যাদেশ পান শাহ জব্বারিয়া কনস্ট্রাকশন। ২৫ লাখ টাকার এই রাস্তার কাজ শুরু করলে উপ-সহকারী প্রকৌশলী শংকর কুমার দে কাজ নিম্নমানের হওয়ায় বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেন। ঠিকাদারের প্রতিনিধি এনামুল হক নির্দেশ অমান্য করে গোপনে কাজ করতে গিয়ে রাস্তার কার্পেটিং ওঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। কার্পেটিং রাস্তা ওঠে যাওয়ার চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্নভাবে ক্ষোভ প্রকাশ শুরু হয়। বিষয়টি পটিয়ার সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর নজরে এলে তিনি এলজিইডির প্রকৌশলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জরুরীতে ভিত্তিতে তলব করেন। সোহেল মাহমুদ চৌধুরী নামের স্থানীয় এক যুবক জানিয়েছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের কার্পেটিং কাজ করে সরকারী অর্থ হরিলুট করার চেষ্টা করেছিল। গ্রামবাসী প্রতিবাদ করায় নিম্নমানের এই কাজটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। কাজ করে যাওয়ার সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ির চাকাতে কার্পেটিং ওঠে যাচ্ছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এনামুল হক বলেছেন, স্থানীয়রা শত্রুতা করে তাদের কাজের কার্পেটিং উঠিয়ে ফেলেছে। তাছাড়া নিম্নমানের কাজের বিষয়টি সঠিক নয়। কারণ এলজিইডির প্রতিনিধি কাজের গুণগত মান দেখাশোনা করেছেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের পটিয়ার উপ সহকারী প্রকৌশলী শংকর কুমার দে জানিয়েছেন, কাজের মান কোনভাবে ঠিক ছিল না। যার কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৩দিন আগে কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলা হলেও তারা কাজ বন্ধ না করে গোপনে কাজ করে গেছে। ফলে রাস্তা থেকে কার্পেটিং ওঠে গেছে। কার্পেটিং ওঠে যাওয়ার বিষয়টি এমপি স্যার জানতে পেরে তিনি প্রকৌশলী ও ঠিকাদারকে জরুরী ভিত্তিতে তলব করে কাজ বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান।
×