ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জয় বাংলা ধ্বনি হৃদয়ে ধারণ করতে হবে ॥ সংস্কৃতিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ৪ অক্টোবর ২০১৮

জয় বাংলা ধ্বনি হৃদয়ে ধারণ করতে হবে ॥ সংস্কৃতিমন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ৩ অক্টোবর ॥ আমরা যখন জয় বাংলা ধ্বনি উচ্চারণ করব তখন মনে রাখতে হবে, আমরা ’৭১-এর রণাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধে অবস্থান করছি। জয় বাংলা ধ্বনি শুধু মুখে বললে হবে না তা হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। বুধবার সন্ধ্যায় মাদারীপুর সরকারী নাজিমউদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে ‘জয় বাংলা’ ২০১৮ উৎসবের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থেকে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি এ কথা বলেন। মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম মাদারীপুরে এসে স্বাধীনতার পূর্বে একটি কবিতা রচনা করেন যার মধ্যে জয় বাংলা শব্দটি ছিল। আর সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শব্দটি নিয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে জয় বাংলা ধ্বনি উচ্চারণ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখে জয় বাংলা ধ্বনি উচ্চারণের ফলেই বাংলার হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খিস্ট্রানসহ সকল ধর্মের মানুষ উৎসাহিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ ধ্বনি ছিল মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক রণধ্বনি। ‘জয় বাংলা’ উৎসব প্রধান উপদেষ্টা ও প্রধান অতিথি নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এমপি বলেন, জিয়াউর রহমান জয় বাংলা মুছে ফেলতে চেয়েছিল। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল স্লোগান জয় বাংলা মুছে দিতে পাকিস্তানী কায়দায় বাংলাদেশ জিন্দাবাদ চালু করল। শুধু জয় বাংলা নয় জিয়াউর রহমান আমাদের জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীতও পাল্টে দিতে ষড়যন্ত্র করেছিল। এখনও বিএনপি-জামায়াত দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আগামী ১০ তারিখে একুশ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে। মামলার রায় ওদের বিপক্ষে গেলে ওরা বড় ধরনের নাশকতা করতে পারে। এ জন্য সকলে সতর্ক থাকবেন। জয় বাংলার উৎস প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৯২৪ সালে মাদারীপুরে বসে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সশস্ত্র বিপ্লবী পূর্ণচন্দ্র দাসের ৬ষ্ঠ কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে ‘পূর্ণ অভিনন্দন’ নামে একটি কবিতা রচনা করেছিলেন। সেই কবিতার এক স্থানে রয়েছে জয় বাংলা। ১৯২৪ সালে মাদারীপুরে প্রথম জয় বাংলা শব্দটি উচ্চারিত হয়। এই জয় বাংলা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের মূল স্লোগান হিসেবে উচ্চারণ করে ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন। মাদারীপুরে জয় বাংলার উৎপত্তি হওয়ায় আমরা গর্বিত। এখন আমাদের সময় এসেছে জয় বাংলা ধ্বনিকে দেশের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার। সামনে যত আন্দোলন হবে তাতে আমরা জয় বাংলা ধ্বনি উচ্চারণ করে এগিয়ে যাব। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে জয়ী করে উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে হবে।’ ‘জয় বাংলা’ উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ওবাইদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ জাকির হোসেন, জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মিয়াজ উদ্দিন খান, পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার, সরকারী নাজিম উদ্দিন কলেজের অধক্ষ প্রফেসর মোঃ নুরুল হক মিয়া, পৌরসভার সাবেক মেয়র নূরুল আলম বাবু চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান খান, ‘জয় বাংলা’ উৎসবের সদস্য সচিব সাকিলুর রহমান সোহাগ তালুকদার, নজরুল গবেষক এইচ এম সিরাজ প্রমুখ। ‘জয় বাংলা’ উৎসবের উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি মাদারীপুর লেকেরপাড়ে ‘জয় বাংলা স্মৃতিস্তম্ভ’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। উৎসব উপলক্ষে প্রকাশিত বর্ণিল স্মরণিকা ‘বাঙালির অহংকার’এর মোড়ক উন্মোচন করেন। সন্ধ্যা ৭টায় স্থানীয় ও ঢাকার শিল্পীরা এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
×