ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আতঙ্ক নয় চাই সচেতনতা

প্রকাশিত: ০৪:৪৪, ৪ অক্টোবর ২০১৮

আতঙ্ক নয় চাই সচেতনতা

বিগত বছরগুলোর উপর ভিত্তি করে বলা যায়, এক প্রকার মহামারী হিসেবে প্রাদুর্ভাব ঘটেছে ডেঙ্গুর। ঢাকাসহ বেশ কিছু জেলায় তা ছড়িয়ে গেছে। এডিস নামক এক প্রকার মশা দ্বারা এই ভাইরাস ছড়ায়। এই রোগ সাধারণত জুন-জুলাই এবং অক্টোবর-নবেম্বর মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে বিস্তার থাকে। এডিস মশা সাধারণত দিনে কামড়ায়। তাই দিনের বেলায় মশারি টাঙ্গিয়ে ঘুমানো উচিত। যতটুকু জানা যায়-১৭৭৯ সালে ডেঙ্গু নামক ভাইরাসটি মানুষের নিকট পরিচিতি লাভ করে। তবে ডেঙ্গু ভাইরাসের ক্ষতিকর দিক এবং বিশদ তথ্য-উপাত্ত সম্পর্কে মানুষ ওয়াকেফহাল হয় বিংশ শতাব্দীতে বা বর্তমানে। বিবিসি সংবাদ অনুযায়ী প্রতিবছর ৫০-১০০ মিলিয়ন মানুষ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ডেঙ্গুজ্বর একটি প্রাণঘাতী রোগ হিসেবে আখ্যায়িত। তাই এই ভাইরাসজনিত রোগে কেউ আক্রান্ত হলে বসে না থেকে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। তথ্য অনুযায়ী যারা ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে, তাদের অনেকেই আক্রান্ত হওয়ার পর ডাক্তারের পরামর্শ নেননি। ছোট শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের জন্য এই ভাইরাস মারাত্মক। তাই তাদের ওপর বিশেষ নজরে রাখতে হবে। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বর এবং চিকুনগুনিয়া রোগের কোন প্রতিষেধক বের হয়নি। তাই এই রোগ যাতে না হয় সে ব্যাপারে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ করে প্রত্যেক সিটি মেয়রের উচিত তার শহরগুলোতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে মশা নিধন ব্যবস্থা ও নিয়মিত ওষুধ প্রদান করা। সরকার ও সিটি কর্পোরেশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আমাদেরও উচিত হবে বাড়ির আশপাশ, জঙ্গল, জলাশয়, পানি, অব্যবহৃত পানি, বিভিন্ন কৌটা, বিভিন্ন ফলের খোসা, ড্রাম, ফুলের টব, এয়ার কন্ডিশন, রিফ্রিজারেটর, ঝোপঝাড়, ডোবা-নালা বা খাল-বিল ইত্যাদিতে জমে থাকা পানিতে মশা বংশ বিস্তার করতে না পারে। তাই এগুলো পরিষ্কার রাখা। ডেঙ্গুজ্বর চেনা যায় সাধারণত প্রচ- জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, পেটব্যথা, চোখের উল্টপিঠ ব্যথা, শরীর দুর্বল, ও মেরুদণ্ডে ব্যথা, ক্ষুধামন্দায় ভোগা, বমি করা ও বমি বমি ভাব, জ্ঞান হারানো। এছাড়াও জ্বর ৫-৬ দিন থেকে চলে যাওয়ার পর শরীলে লালচে দানা দেখা যায়। এ সময় কিছু সমস্যা হতে পারে যেমন- নাক, মুখ, মাড়ি, দাঁত থেকে রক্তপাত, রক্তবমি, মলের সঙ্গে রক্ত, মেয়েদের বেলায় অতিরিক্ত ঋতুস্রাব ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। তবে ভয়ের কোন কারণ নেই। নিয়মিতভাবে পরিচর্যা ও ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করলে এই রোগ নিরাময় হয়ে যায়। প্রতিষেধক হিসেবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে হবে, বিশ্রামে থাকতে হবে, তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে, বেশি করে ঠা-া শরবত খেতে হবে, মাথা ধোয়াসহ ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছতে হবে। সর্বোপরি ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পূর্বে এবং পরে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×