ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দিনভর হৈ হুল্লোড়, প্রাণের উচ্ছ্বাস

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

দিনভর হৈ হুল্লোড়, প্রাণের উচ্ছ্বাস

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ ওদের জন্য শনিবারের সকালটা একটু আলাদা ছিল। কতদিনের অপেক্ষা শেষে সূর্যটা যেন জীবনের রঙিন আলোকচ্ছটা ছড়াল তাদের মধ্যে। সকাল থেকে দুপুরের মাহেন্দ্রক্ষণ, এরপর সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত, যেন এক অন্য উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভাসাল তাদের। উচ্ছ্বাস আর আনন্দের দিন এত ছোট হয়, তা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করল রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দিতে আসা গ্র্যাজুয়েটরা। দিনভর হৈ হুল্লোড়, আড্ডা, মিলনমেলা আর পুনর্মিলনীতে শেষ হলো বিশ^বিদ্যালয়ের দশম সমাবর্তন। বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা সকল গ্র্যাজুয়েটরাই এমন স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্ন দেখেন পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে আবার এক হয়ে টাই, গাউন আর হ্যাট পরে সমাবর্তনে অংশ নেয়ার। সেই স্বপ্ন এবার ধরা দিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ৬ হাজার ১৪ জন গ্র্যাজুয়েটদের। সবাই একসঙ্গে মাথার হ্যাট (টুপি) খুলে ছুড়ে মারলেন আকাশের দিকে। সেই টুপি ধরতে লাফ দিলেন কেউ কেউ। আর সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরাবন্দী হয়ে গেল মুহূর্তটি। হয়ত এমন ক্ষণের জন্য অপেক্ষা ছিল তাদের। শনিবার হয়ে গেল রাবির দশম সমাবর্তন। সমাবর্তনে অংশ নিতে আগেই ক্যাম্পাসে পৌঁছেন সকল নিবন্ধিত গ্র্যাজুয়েটরা। সাবেক শিক্ষার্থীদের পদচারণায় তাই প্রাণ ফিরে পায় মতিহারের সবুজ চত্বর। একদিন আগে থেকেই ক্যাম্পসের সর্বত্র গ্র্যাজুয়েটদের মিলনমেলা বসে। সেই মেলায় পূর্ণতা পায় শনিবার। বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, স্টেডিয়াম, প্যারিস রোড, শহীদ মিনার, সাবাস বাংলাদেশ ভাস্কর্য, সকল বিভাগ, সকল আবাসিক হলের সামনে গ্র্যাজুয়েটরা ছবি তুলতে ব্যস্ত। কখনও সবাই মিলে ছবি তুলছেন আবার কখনও একা। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব জায়গায় পদচারণা ছিল তার কোন স্থানই যেন বাদ দিতে চান না গ্র্যাজুয়েটরা। কয়েক বছর পর ক্যাম্পাসে ফিরে যেন পরম মমতায় আলিঙ্গন করলেন প্রিয় ক্যাম্পসকে। অনেকেই আবার এক সময় যে রুমটাতে কয়েক বছর ছিলেন সেখানে গিয়ে একটু দেখা করেন। এ যেন বহু বছর পর আপন নীড়ে ফেরা। যে ক্যাম্পাস আজ তাদের গ্র্যাজুয়েট করে তুলেছে, দিয়েছে নতুন জীবন সেই ক্যাম্পাসে সবাই ফিরতে পেরে যেন আনন্দের জোয়ারে ভাসলেন দিনভর। শনিবার দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়ামে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে শুরু হয় বহুল প্রতীক্ষিত এই সমাবর্তন। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রায় ৬ হাজার গ্র্যাজুয়েট মেতে ওঠেন সমাবর্তন উৎসবে। তাদের উচ্ছ্বাসে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে মতিহার চত্বর। সমাবর্তন উপলক্ষে একদিন থেকেই গ্র্যাজুয়েটদের পদচারণায় মুখরিত হতে থাকে ক্যাম্পাস। জেগে ওঠে মতিহারের সবুজ চত্বরে প্রাণের সম্মিলন। শুক্রবার সমাবর্তনের গাউন ও অন্যান্য সামগ্রী নিজ নিজ বিভাগ থেকে সংগ্রহ করেন সমাবর্তন প্রত্যাশীরা। এ উপলক্ষে বিভাগগুলোতে আয়োজন করা হয় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। মতিহার চত্বর জেগে ওঠে সাবেক ও বর্তমানদের সম্মিলনে।
×