ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান ॥ গিনেস বুকে নাম। সে কী ধুন্দুমার কা-। বড় সংখ্যায় লোকজন নামানো হয়েছিল রাস্তায়। একযোগে ৭ হাজারের অধিক মানুষ। ঝাড়ু হাতে রাস্তা ঘাট পরিষ্কার করেছেন। গত ১৩ এপ্রিলের কথা। এদিন গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট থেকে গোলাপ শাহ মাজার পর্যন্ত সড়কে প্রতীকী ‘ঢাকা পরিচ্ছন্নতা অভিযান’ পরিচালনা করে ডিএসসিসি। এতে ঝাড়ু হাতে অংশ নেন ৭ হাজার ২১ জন। একদিনের পরিচ্ছন্নতা অভিযান। তাতেই বাজিমাত। গত সোমবার পরিচ্ছন্নতা অভিযানের খবরটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। এই স্বীকৃতির আনন্দে পরদিন মঙ্গলবার নগর ভবনের আঙ্গিনায় ব্যাপক রং মাখামাখি হয়। এখনও মেয়র সাঈদ খোকন উচ্ছ্বসিত। অনেকেই বগল বাজাচ্ছেন। কিন্তু প্রকৃত অবস্থাটা কী? ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এখন ময়লা আবর্জনা মুক্ত? পরিস্থিতির আদৌ কোন উন্নতি হয়েছে? ন্যূনতম পরিবর্তনের আভাস কি পাওয়া যাচ্ছে কোথাও? উত্তরটিÑ না। বরং ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে গোটা এলাকা। অজ¯্র উদাহরণ দেয়া যাবে। সেদিকে নাইবা গেলাম। বিশাল জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা নগর ভবনের চারপশের পরিবেশটা কি ঠিক করা গেছে আজ পর্যন্ত? মেয়রের পিতা অখ- ঢাকার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের নামে যে উড়াল সড়ক, সেটির নিচে হচ্ছেটা কী? এত ময়লা। দুর্গন্ধ। নাক টিপে ধরেও রাস্তা পার হওয়া যায় না। কেউ কি দেখছেন? দেখলে উড়ালসড়কের নিচে খোলা জায়গায় ফুলের বাগান হতো। শিল্পীত সুন্দর তুলে ধরার লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ত। জায়গাটি ঘিরে আরও অনেক সৃজনশীল চিন্তার সুযোগ ছিল। কিন্তু কিছুই হয়নি। এখন ঘোড়ার আস্তাবল। ঘোড়া রাখার সবচেয়ে নিরাপদ ও উৎকৃষ্ট জায়গা হয়ে উঠেছে। এখানেই ওদের আহার নিদ্রা। ঘোড়ার বর্জ্য এমনভাবে ছড়িয়ে আছে যে, দেখলে গা গুলিয়ে ওঠে। তারও আগে থেকে নাকে আসতে শুরু করে দুর্গন্ধ। গত প্রায় তিন বছর ধরে এই চিত্র। চিত্রটি বদলানোর কেউ নেই। নামমাত্র অভিযান চালায় দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। তার পর সেই অভিন্ন ছবি। আর পোস্টারের কথা তো বলাই বাহুল্য। উড়াল সেতুর প্রশস্ত পিলারগুলো এক রকম ঢাকা পড়েছে। অশ্লীল ছবি, পণ্যের বিজ্ঞাপন, উঠতি নেতাদের ‘শুভেচ্ছা স্বাগতম’ ইত্যাদি দিয়ে কী যে নোংরা করে রাখা হয়েছে। তাকানো যায় না। এমনকি কিছু পোস্টারে খোদ মেয়র সাঈদ খোকন! দেখে, সত্যি বলতে, লজ্জায় পড়ে যেতে হয়। এই লজ্জা থেকে উদ্ধার হওয়ার জরুরী? নাকি গিনেস বুকে নাম লেখানো? অন্য প্রসঙ্গ। বৃহস্পতিবার ছিল সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের দ্বিতীয় প্রয়াণবার্ষিকী। এ উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। প্রথম দিনের আয়োজনে ছিল কবিতা আবৃত্তি ও নাট্যপরিবেশনা। আলোচনায় অংশ নেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার ও কবি পতœী কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক। সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী হাসান আরিফ। সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালায় থিয়েটার মঞ্চায়ন করে সৈয়দ শামসুল হক রচিত নাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়।’ আজ শুক্রবার আলোচনা করবেন নাট্যজন আতাউর রহমান। সন্ধ্যায় সৈয়দ শামসুল হক রূপান্তরিত এবং আতাউর রহমান নির্দেশিত নাটক ‘হ্যামলেট’ মঞ্চস্থ হবে। একইদিন ঢাকায় পালিত হলো বিশ্বপর্যটন দিবস। নানা আয়োজনে দিবসটি উদ্যাপিত হয়েছে। আয়োজনের অংশ হিসেবে হোটেল পূর্বাণীতে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ইলিশ, পর্যটন ও উন্নয়ন উৎসবের আয়োজন করা হয়। আলোচনা সেমিনার আছে। সেইসঙ্গে কবিকণ্ঠে কবিতা। কবিতার প্রসঙ্গ ইলিশ। রাখা হচ্ছে সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও। পদক্ষেপ বাংলাদেশের আয়োজন চলবে শনিবার পর্যন্ত।
×