ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

চলচ্চিত্র শিল্পীর খোঁজে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

    চলচ্চিত্র শিল্পীর খোঁজে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বহুমাত্রিক সমস্যায় ভোগা বাংলা চলচ্চিত্রে শিল্পী সঙ্কট প্রবল। এই শিল্পী সঙ্কট দূর করতে নেয়া হয়েছে নতুন কার্যক্রম। চলচ্চিত্র শিল্পী সৃষ্টির প্রয়াসে শুরু হলো ‘নতুন মুখের সন্ধানে ২০১৮’ শীর্ষক প্রতিযোগিতা। অর্থমন্ত্রীর প্রতীকী আবেদনের মাধ্যমে এই প্রতিযোগিতার সূচনা হয় রবিবার। বিএফডিসির সহযোগিতায় প্রতিযোগিতাটির আয়োজন করেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি। রবিবার বিকেলে রাজধানীর র‌্যাডিসন হোটেলে আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ প্রতিযোগিতার রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। অনুষ্ঠানে প্রতীকীভাবে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য আবেদন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে অংশ নেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এবং তথ্য সচিব এম এ মালেক ও সংস্কৃতি সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার ও মহাসচিব বদিউল আলম খোকন, চিত্রনায়ক আলমগীর, নির্মাতা সালাউদ্দিন জাকি, খলনায়ক মিশা সওদাগর ও প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু । অর্থমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অনেকটা পিছিয়ে। এই মুহূর্তে পরিচালক সমিতি নতুন মুখের সন্ধানে নামে যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসনীয়। চলচ্চিত্রশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে এবং সমৃদ্ধ করতে সবার এগিয়ে আসতে হবে। আমি মনে করি এ ধরনের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে নতুন নতুন মুখ আসবে, এগিয়ে যাবে চলচ্চিত্রশিল্প। আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমরা চলচ্চিত্রানুরাগী। বড় পর্দায় ছবি দেখা দর্শক আমাদের দেশে অনেক কমে গেছে। আমি মনে করি, চলচ্চিত্রকে সার্বিকভাবে এগিয়ে নিতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা দরকার। নতুন মুখের সন্ধানে প্রতিযোগিতার বিচারকম-লীতে রয়েছেন পরিচালক আমজাদ হোসেন, চলচ্চিত্রশিল্পী আলমগীর, চম্পা, জয়া আহসান, অভিনয়শিল্পী আফজাল হোসেন প্রমুখ। ‘আমার জীবন আমার রচনা’ ॥ বাংলা সাহিত্যের অনন্য এক লেখক হাসান আজিজুল হক। বাংলা ভাষার অন্যতম এই কথাসাহিত্যিকের লেখনীতে উঠে এসেছে মানুষের জীবন-সংগ্রামের কথকতা। গল্প-কিংবা উপন্যাসে মর্মস্পর্শী বর্ণনা আশ্রিত তার সুঠাম গদ্যভঙ্গি সহজে ছুঁয়ে যায় পাঠকের মন। সেই লেখালেখি নিয়ে রবিবার পাঠকের মুখোমুখি হলেন এই কথাশিল্পী। এদিন সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনের সপ্তম তলায় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ও মেগা বুকশপ বাতিঘর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো ‘আমার জীবন আমার রচনা’ শীর্ষক মতবিনিময় অনুষ্ঠান। আলাপচারিতামূলক এই আড্ডার আয়োজন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বাতিঘর। অনুষ্ঠানের সূচনা করেন সঞ্চালক ফারুক ওয়াসিফ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাতিঘরের কর্ণধার দীপঙ্কর দাস। সভাপতিত্ব করেন কবি কাজল শাহনেওয়াজ। বৈঠকে ঢঙের এ কথপোকথনে প্রথমে হাসান আজিজুল হক লেখালেখি বিষয়ে আলোচনা শুরু করেন। পরে তা গড়ায় দর্শক প্রশ্নোত্তরে । হাসান আজিজুল হক বলেন, পৃথিবীতে যত মানুষ ততই পৃথিবী। লেখকের কাজ সেই পৃথিবীতে প্রবেশ করে সেসব পৃথিবীর গল্পগুলো খুঁজে বের করা। মানুষের এই পৃথিবীতে ঢুকতে পারলে লেখক তার সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করবে। তখন তার সেই শরীর অনন্তের বাহন হতে পারে। লেখক হতে হলে ভালবাসতে হবে মানুষকেÑ সেই কথাটি উল্লেখ করে হাসান আজিজুল হক বলেন, লেখকের আকাশকুসুম কল্পনা করে লাভ নেই। মানুষই সেই প্রাণী যার চিন্তার ভালবাসার গভীরতা কোন তল নেই। ‘জীবনের অতল জলে ডুব দিয়ে সেখানে প্রবেশ করতে হবে। সেখানে মণি-মানিক্য তলে আনতে হবে। তবে সেখানে কাঁদা-মাটিও রযেছে। তাই বলে, এইসব কাঁদা-মাটিকে দূরে ঠেলবে না লেখক। তাদেরও ভালবাসবে। লেখকের কাছে মানব ভালবাসা বলতে জীবনকে ভালবাসা দরকার। লেখকরাও সময়ে নিজেদের বদলায়। অনেকটা সাপের খোলস ছাড়ার মতো করে। বারবারই খোলস বদল করে কিন্তু মাটি ও মানুষকে বিলম্বন করেই তার বদল ঘটে। তরুণ সাহিত্যিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের ‘মৃত্তিকা সংলগ্ন’ হতে হবে। মাটির কাছেই সবকিছু রয়েছে। রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, কারও ভেতরে যদি লেজ থাকে তবে তা বাইরে প্রকাশ পাবেই। যে লেখক তার লেখা বের হবেই। আর কেউ যদি লেখক হওয়ার জন্য চেষ্টা করে তবে তা সম্ভব হয় না। অনেকেই এই চেষ্টা করেছে কিন্তু তা কাজে দেয়নি। বৈঠকী আড্ডার ভাললাগার অনুভূতি ব্যক্ত করে হাসান আজিজুল হক বলেন, এ আশি বছর বয়সে কেউ আমার কথা শুনতে আসবে এটা কল্পনা করিনি। কিন্তু আজ এখানে তরণদের উপস্থিতি দেখছি। ভাল লাগছে। সংসদে উত্থাপিত হবে শিশু একাডেমি আইন ॥ মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, বঙ্গবন্ধু শিশুদের খুব গুরুত্ব দিতেন। তিনিই প্রথম শিশু আইন করেছিলেন। বর্তমান সরকার শিশু উন্নয়নে অনেক বড় প্রকল্প গ্রহণ করেছে। শীঘ্রই শিশু একাডেমি আইন সংসদে উত্থাপন করা হবে। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, শিশুরা বাংলাদেশের বড় সম্পদ। একটি আদর্শ ও শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি রবিবার বিকেলে শিশু একাডেমির মিলনায়তনে ‘৪১তম মৌসুমি প্রতিযোগিতা-২০১৮’ এ বিজয়ী শিশুদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিতে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য কবি কাজী রোজী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির পরিচালক আনজীর লিটন। শিশু একাডেমির আয়োজনে প্রতি বছরের মতো এবারও শিশুদের প্রতিভা অন্বেষণে দলগত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে ৪১তম মৌসুমি প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ের চূড়ান্ত দলগত প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সারাদেশের ৮টি বিভাগের শিশুরা উপজেলা ও জেলা পর্যায় পেরিয়ে বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এবারের প্রতিযোগিতা পাঁচটি বিষয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিষয়গুলো হলোÑ জ্ঞান-জিজ্ঞাসা, দলীয় নৃত্য (আঞ্চলিক), উপস্থিত বিতর্ক, দেয়ালিকা ও সমবেত দেশাত্মবোধক জারিগান।
×