ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ফকিরহাটে রক্ষা বাঁধ ঝুঁকিতে ॥ ৫০ গ্রামের মানুষ আতঙ্কে

প্রকাশিত: ০৪:৪১, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  ফকিরহাটে রক্ষা বাঁধ ঝুঁকিতে ॥  ৫০ গ্রামের মানুষ আতঙ্কে

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ ফকিরহাট উপজেলার লখপুরের ছোট খাজুরায় অবস্থিত গুপিয়া নদীর তীব্র ভাঙ্গনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত রক্ষা বাঁধ মারত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে অর্ধশতাধিক গ্রামের জনগণের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। জোয়ারের পানির তীব্র চাপে যে কোন মুহুর্তে বাঁধ ভেঙ্গে নদীর উপকূলীয় এলাকা তলিয়ে ৬টি বিলের আমন ধানসহ কৃষি ও স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অতিদ্রুত পানি উন্নয়ন রক্ষা বাঁধ পুনঃসংস্কার করা না হলে খুলনা-মোংলা মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। সরেজমিনে দেখা গেছে, গুপিয়া নদীর তীব্র ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে খাজুরার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত রক্ষা বাঁধ। এই বাঁধের ওপর দিয়ে ফকিরহাটের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষের সঙ্গে বটিয়াঘাটা ও রূপসা উপজেলার সকল মানুষের চলাচল। কিন্তু নদীটির তীব্র ভাঙ্গনে জনগণের চলাচল দুষ্কর হয়ে পড়ছে। স্থানীয়রা বলেছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড গত কয়েক বছর আগে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁশ ও কাঠের কিছু তক্তা দিয়ে বাঁধটি পুনঃসংস্কার করে দেয়। কিন্তু যেনতেনভাবে সেটি নির্মাণ করায় তা ৩ মাসও টেকসই হয়নি। এরপর লখপুর ইউনিয়ন পরিষদের নিজেস্ব ১ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁধটি পুনঃসংস্কার করা হয়, কিন্তু সেটিও স্থায়ী হয়নি। খাজুরা গ্রামের মোঃ শামসের আলী, মোস্তাব আলী, হালিম শেখ, মাহাবুর শেখ ও জাকির ফকিরসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, এই বাঁধের উপরে জাবুসা খাজুরা কুদির বটতলা ও তিলক বিলসহ প্রায় ৬টি বিল রয়েছে। আর সেই বিলে এখন হাজার হাজার হেক্টর জমিতে স্থানীয় চাষীরা ধান পাট ও সবজির চাষ করেছেন। শুধু তাই নয় বিলের আশপাশে বহু শিল্প প্রতিষ্ঠান মাছ কোম্পানি ও হাসপাতাল এবং কলকারখানা রয়েছে। এই বাঁধ ভেঙ্গে গেলে সেই শিল্প প্রতিষ্ঠানে কাজকর্ম চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। তারা বলেন, লখপুর বাহিরদিয়া-মানসা পিলজংগ বেতাগা শুভদিয়া ইউনিয়নের সকল পানি এই ১০ গেট ও ৬ গেট দিয়ে প্রবাহিত হয়। তাছাড়া বটিয়াঘাটা উপজেলার নারায়ণখালী বাইনতলা ঝিনাইখালী আমেরপুর ও রূপসা উপজেলার তিলক কুদির বটতলা ও জাবুসা গ্রামের সকল পানিও এই ২ গেট দিয়ে সরবরাহ হয়ে থাকে। ফলে পানির চাপটা এই তিনটি গেটের মোহনা খাজুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর তুলনামূলকভাবে বেশি পড়ে থাকে। সে কারণে এটিতে ঝুঁকিও পড়ে বেশি। আর এই ঝুঁকির কারণে বাঁধ এখন যায় যায় অবস্থা। স্থানীয় ইউপি সদস্য আলী আহম্মদ বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বসতবাড়ির ৪ এর ৩ অংশ নদীতে ভেঙ্গে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের রক্ষা বাঁধের যে রাস্তা জনগণ ব্যবহার করে তার অধিকাংশ নদীতে ভেঙ্গে যানবাহন তো দূরের কথা হেঁটে চলাচল করাও অসম্ভব। এ ব্যাপারে লখপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে নামমাত্র বাঁধটি কিছুটা সংস্কার করে, যা স্থায়ী হয়নি। তার পর তিনি ১ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁধটি আবারও মেরামত করেন। কিন্তু জোয়ারের পানির চাপ এতটা তীব্র যে তা স্থায়ী হচ্ছে না। অতিদ্রুত যদি বাঁধটি পুনঃসংস্কার করা না হয় তাহলে তিন উপজেলার শিল্প প্রতিষ্ঠান, কৃষি ফসল, হাসপাতাল ও খুলনা-মোংলা মহাসড়কের একাংশ পানিতে তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধতন কর্মকর্তাদের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
×