ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকায় আজ শুরু এএফসি অনুর্ধ-১৬ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 ঢাকায় আজ শুরু এএফসি অনুর্ধ-১৬  মহিলা  চ্যাম্পিয়নশিপ

জাহিদুল আলম জয় ॥ মহিলা ফুটবলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধারাবাহিকভাবে স্বর্ণালি সাফল্য পাচ্ছে বাংলাদেশ। অনুর্ধ-১৪, ১৫ ও ১৬ ফুটবল দলের সাফল্যে উদ্বেলিত গোটা জাতি। দেশ ও দেশের বাইরে লাল-সবুজের পতাকা পতপত করে উড়িয়েছেন মারিয়া, আঁখিরা। এমন আরও একটি উপলক্ষ দুয়ারে। আজ থেকে ঢাকার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে ‘এএফসি অনুর্ধ-১৬ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্ব’। বাংলাদেশে হচ্ছে টুর্নামেন্টের ‘এফ’ গ্রুপের খেলা। যা চলবে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এছাড়া আরও পাঁচটি গ্রুপের খেলা অন্য পাঁচ দেশে হবে। ‘এফ’ গ্রুপের স্বাগতিক বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে ভিয়েতনাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও লেবানন। দুই বছর আগে এই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়ে চূড়ান্তপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল বাংলার মেয়েরা। এবারও অভিন্ন লক্ষ্যে খেলবে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। আজ টুর্নামেন্টের পর্দা উঠলেও মাঠে নামছে না স্বাগতিক বাংলাদেশ। উদ্বোধনী ম্যাচে আজ বেলা সাড়ে ১১টায় মুখোমুখি হবে আরব আমিরাত ও ভিয়েতনাম। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে বিকেলে লড়বে লেবানন ও বাহরাইন। বাংলাদেশ মিশন শুরু করবে সোমবার বাহরাইনের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে। এএফসি অনুর্ধ-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপে মোট ছয়টি গ্রুপ আছে। প্রতি গ্রুপে ৫টি করে মোট ৩০ দেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ছয় গ্রুপের ছয় চ্যাম্পিয়ন এবং সেরা দুই রানার্সআপসহ মোট আটটি দল খেলবে দ্বিতীয় রাউন্ডে। বাছাইপর্বে নিজেদের গ্রুপে সেরা হয়ে এই রাউন্ডে খেলতে বদ্ধপরিকর মারিয়া, মনিকারা। এই আট দল থেকে সেরা চার দল খেলবে তৃতীয় এবং চূড়ান্তপর্বে। এই পর্বে যোগ্যতা অর্জন করা চার দলের সঙ্গে সরাসরি খেলবে আরও চার স্বাগতিক দেশ- থাইল্যান্ড, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান। এই আসরে নিজেদের মাঠে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। যে কারণে ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে হওয়া আসরের মূলপর্বে খেলেছিল লাল-সবুজের মেয়েরা। এবারও মূলপর্বে খেলার লক্ষ্যে বাছাইপর্বের পরীক্ষায় অবতীর্ণ হচ্ছে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৬ মহিলা দল। ধারাবাহিক সাফল্যের কারণে সোনার মেয়েরা সংবর্ধনা, অভিনন্দন বা পুরস্কার পেয়ে চলেছেন। এসবের কারণে সঙ্গতকারণেই দায়িত্ব যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে প্রত্যাশার চাপও। কিছুদিন আগে ভুটানে হওয়া ‘সাফ অনুর্ধ-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে’ রানার্সআপ হয় বাংলাদেশ। সাফে চ্যাম্পিয়ন না হতে পারার দুঃখ তারা ভুলতে চায় এই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়ে। এমন লক্ষ্যের কথা শুক্রবার টুর্নামেন্ট উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। বাফুফে ভবনে ছোটন বলেন, এই টুর্নামেন্ট সামনে রেখে গত ডিসেম্বর থেকে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। মাঝখানে আমরা তিনটা টুর্নামেন্ট খেলেছি। এর মধ্যে দুইটাতে চ্যাম্পিয়ন ও একটাতে রানার্সআপ হয়েছি। যে ভুল ত্রুটি হয়েছে সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করেছি। দলের সবাই সুস্থ আছে। টুর্নামেন্টের জন্য সবাই প্রস্তুত। বাংলাদেশ কোচ বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে আমরা দুইবার জিতেছি। একবার ৬-০, আরেকবার ৪-০ গোলে। ভিয়েতনামের ভিডিও ফুটেজ পাওয়ার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। তবে তারা শক্তিশালী দল। বাহরাইন-লেবানন পরিকল্পনা এবং সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী। তবে আমাদের মেয়েরা বেশ কিছুদিন ধরে এক সঙ্গে কঠোর অনুশীলন করছে, তারা আত্মবিশ্বাসী। দলের সুবিধা হচ্ছে এই দলের ২৩ জনেরই আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। ছোটন বলেন, ভিয়েতনাম, বাহরাইন ও লেবাননের বিরুদ্ধে এর আগে কখনই খেলিনি। তবে এ নিয়ে আমরা ভীত বা চিন্তিত নই। আমরা আমাদের খেলা নিয়েই ভাবছি। আমরা এই গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই ২০১৬ আসরের মতো। দুই বছর আগে এই আসরে গ্রুপপর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। যে কারণে আমাদের প্রতি দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেক বেড়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করব সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে। সেরা হওয়ার পথে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারে ভিয়েতনাম। এমন মনে করছেন স্বয়ং বাংলাদেশ কোচ। অধিনায়ক মারিয়া মান্দা আগেরবারের সাফল্য ধরে রাখতে আশাবাদী। তিনি বলেন, আমরা ভালভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। বাকি চারটা দলই শক্তিশালী। আমরাও শক্তিশালী। তিনটা দল র‌্যাঙ্কিংয়ে আমাদের চেয়ে এগিয়ে। কিন্তু আমরা চেষ্টা করব মাঠের খেলার দিকে দৃষ্টি দিতে। লক্ষ্য থাকবে ভাল খেলে কোয়ালিফাই করা।
×