ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

খন্দকার মাহ্বুবুল আলম

সচেতনতার বিকল্প নেই

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সচেতনতার বিকল্প নেই

ইদানীং পারিবারিক শান্তির কথা খুব কমই শোনা যায়। এক্ষেত্রে অশান্তির কথাই বেশি শোনা যায়। যা স্বামী-স্ত্রীর নানাবিধ দ্বন্দ্ব-কলহের কারণেই। কেন এমন দাম্পত্য কলহ? এর উত্তর বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে খুঁজছেন। এক্ষেত্রে বহুবিধ কারণ বিদ্যমান থাকলেও উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হচ্ছে- পারস্পরিক সুসম্পর্ক বা ভালবাসার অভাব, নিছক বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝি, পারস্পরিক সহনশীলতার অভাব, যৌন সংক্রান্ত বিষয়, পরকীয়া আসক্তি, যৌতুক, সামাজিক কূসংষ্কার, কূপ্রথা, স্ত্রী কর্তৃক ন্যূনতম নারী অধিকার ভোগ করতে না পারা, পারিবারিক অর্থনৈতিক সঙ্কটসহ আরও নানাবিধ কারণে বিবাহ বিচ্ছেদের মতো ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে বৃদ্ধি পেয়ে চলছে। বিশেষত শিক্ষিত দম্পতিদের মধ্যেই এ সঙ্কট বেশি মাত্রায় লক্ষণীয়। শিক্ষিত দম্পতিদের মধ্যে স্ত্রীরা একটু অধিকার সচেতন হয়ে থাকে। এমন স্ত্রীরা স্বীয় অধিকার খাটাতে গেলেই স্বামীদের মধ্যে গাত্রদাহের সৃষ্টি হয়। এতে করে পরস্পর মনোমালিন্য, কথা কাটাকাটি, ক্ষেত্রবিশেষে স্ত্রীকে মারধর ইত্যাদি কারণে এক সময় ‘সংসার’ নামক শান্তির ঠিকানাটি অশান্তির ঝড়ো হাওয়ায় ভেঙে যায় ‘তালাক’ নামক ধর্মীয় বিধান অনুসরণে। এক্ষেত্রে সমঝোতায় এসে পুনর্মিলনেরও সুযোগ থাকে না। কিন্তু এই নির্মম সিদ্ধান্তের ক্ষোভের অনলে জ্বলে থাকেতাদের নিরপরাধ সন্তান-সন্তুতিরা। এদের অনেকেই এক সময় অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে। এক পরিসংখ্যান মতে বিবাহ বিচ্ছেদের হার ৩৪ শতাংশ বেড়েছে। এ সংখ্যা হয়ত আরও বাড়বে। সমাজে সব সময়ই তালাক বা বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে। তবে জন সংখ্যাধিক্যের তুলনায় এবং অন্যান্য কারণে এ সংখ্যা এখন বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এসব পরিবারে বা দাম্পত্য যুগলে নারীরাই বেশি রকম অবদমিত ও নির্যাতনের শিকার। এক্ষেত্রে নারীকে নারী ব্যতীত কোনভাবেই মানুষ হিসেবে গণ্য করা হয় না। কতিপয় ক্ষেত্রে আবার কোন কোন অসৎ ও স্বেচ্ছাচারী মহিলা (নারী দ্বারা পুরুষ স্বামীরাও) নিজ ঘরে এক ধরনের দোযখের আগুনে জ্বলছেন। সেই হিসেব অতি নগণ্য হওয়াতে সবার নজর এড়িয়ে যায়। সমাজ-সভ্যতার বিবর্তনের ধারায় অনেক কিছুই পরিবর্তিত হয়। এমন পরিবর্তিত নবরূপ পরিগ্রহের পেছনে নানা সমস্যা, সমস্যার সমাধান যেমন বিদ্যমান, তেমনি আধুনিক চিন্তারও ছাপ থাকে। নারী-পুরুষ নিয়েই মানুষ। তাই স্বামী-স্ত্রী উভয়ের অধিকার বিষয়ে উভয়েরই সচেতন হওয়া দরকার তবে এ অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে কারও দ্বারা কারও ক্ষতি বা অসম্মান যাতে না হয় সে ব্যপারে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই সচেতন থাকা দরকার। পারস্পরিক সহমর্মিতা, ভালবাসা, অধিকার সচেতনতা, আস্থা, মূল্যায়ন, সুখ-দুঃখের ভাগাভাগি ইত্যাদির মাধ্যমে পারস্পরিক নৈকট্য লাভের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান কিছুটা হলেও সম্ভব। সুতরাং সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। মধ্যম হালিশহর, চট্টগ্রাম থেকে
×