ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর সাফ ঘোষণা ॥ দলীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলে কঠোর ব্যবস্থা

কারও মুখের দিকে তাকিয়ে নয় যোগ্যরাই মনোনয়ন পাবেন

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

কারও মুখের দিকে তাকিয়ে নয় যোগ্যরাই মনোনয়ন পাবেন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ এবার যোগ্যপ্রার্থীদের মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারও মুখের দিকে তাকিয়ে মনোনয়ন দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে কেউ স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে চাইলে তার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় একথা বলেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক মন্ত্রী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বৈঠকে দেশেই বিশ্বমানের মোটরসাইকেল তৈরি করে ২০২৭ সালের মধ্যে এ খাতে ১৫ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য ঠিক করে একটি নীতিমালায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সূত্র জানায়, আসন্ন নির্বাচনে দল নয় প্রার্থীর ব্যক্তিগত ইমেজকে গুরুত্ব দেবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে জয়ের ক্ষেত্রে প্রার্থীর ব্যক্তি ইমেজ কাজ করে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ আর দলের ভাবমূর্তি কাজ করে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। সুতরাং বিভিন্ন রিপোর্টের ভিত্তিতে যেসব প্রার্থী জয়ের সম্ভাবনা থাকবে তাদেরই মনোনয়ন দেয়া হবে। সূত্র জানায়, আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে জাতীয় পার্টির পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন আমিনুল ইসলাম, জিয়া উদ্দিন বাবলু, রুহুল আমীন হাওলাদার ও কাজী ফিরোজ রশিদ। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের পক্ষে ছিলেন দলের দুই বর্ষীয়ান নেতা আমীর হোসেন আমু এবং তোফায়েল আহমেদ। জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। বর্তমান সংসদে রয়েছে এমন প্রতিটি দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী। বিএনপির আন্দোলন কিংবা জোট গঠন নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা না হলেও নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। মোটরসাইকেল শিল্পে ১৫ লাখ কর্মসংস্থানের লক্ষ্য ॥ দেশেই বিশ্বমানের মোটরসাইকেল তৈরি করে ২০২৭ সালের মধ্যে এ খাতে ১৫ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য ঠিক করে একটি নীতিমালায় অনুমোদন দিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তার কার্যালয়ে ‘মোটরসাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা, ২০১৮’ এর খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম পরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, দেশীয় মোটরসাইকেল শিল্পের প্রসার ঘটাতে এই নীতিমালা করা হয়েছে, যেন মোটরসাইকেল আমদানি করতে না হয়। বাংলাদেশে বিদ্যমান মোটরসাইকেল সংযোজন শিল্পের পরিবর্তে এখানে বিশ্বমানের মোটরসাইকেল উৎপাদন কারখানা স্থাপনে উৎসাহিত করা হবে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে এই খাতে বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। মোটরসাইকেল খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান পাঁচ লাখ থেকে বাড়িয়ে ২০২৭ সালের মধ্যে ১৫ লাখে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, নীতিমালার উদ্দেশ্য হচ্ছে নতুন করে মোটরসাইকেল তৈরি বা সংযোজন যেটাই করা হোক, দেশীয় শিল্প কারখানার মাধ্যমে তা উৎপাদন করা হবে। যানজট ও চলাচলের সুবিধার কারণে বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে মোটরসাইকেলের জনপ্রিয়তা বেশ কয়েক বছর ধরেই বাড়ছে। এর মধ্যে সরকার রাইড শেয়ারিং নীতিমালা অনুমোদন করার পর মোটারসাইকেলের বিক্রি বাড়ছে হু হু করে। বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের বাজারের আকার কেমন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। তবে আমদানিকারক ও পরিবেশকদের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে প্রতিদিন হাজারের বেশি মোটরসাইকেল বিক্রি হচ্ছে, যা পাঁচ বছর আগেও এর অর্ধেক ছিল। বর্তমানে দেশে প্রতি ১১৬ জনে একজন মোটরসাইকেল ব্যবহার করায় এই সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়ানো সম্ভব বলে ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দেশীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে পাঁচ লাখ এবং ২০২৭ সালের মধ্যে ১০ লাখ মোটরসাইকেল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে নীতিমালায়। দেশে মোটরসাইকেল তৈরির পর স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সেগুলো সরবরাহ করা হবে। মোটরসাইকেল শিল্প থেকে বর্তমানে ডিজিপিতে অবদান শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ জানিয়ে তিনি বলেন, ২০২৭ সালের মধ্যে তা ২ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
×