ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইউএস ওপেনের সেমিফাইনালে ওসাকা

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ইউএস ওপেনের সেমিফাইনালে ওসাকা

জিএম মোস্তফা ॥ মৌসুমের শেষ গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেনে জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেন নাওমি ওসাকা। দুর্দান্ত খেলে ইউএস ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিলেন তিনি। বুধবার শেষ আটে জাপানের এই তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড় ৬-১ এবং ৬-১ গেমে হারান ইউক্রেনের লেসিয়া সুরেঙ্কোকে। প্রতিপক্ষকে হারাতে এদিন ওসাকার সময় লাগে মাত্র ৫৭ মিনিট। লেসিয়া সুরেঙ্কোকে পরাজিত করে নতুন এক ইতিহাস গড়লেন ওসাকা। প্রথমবারের মতো কোন গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালের টিকেট কাটেন ২০ বছরের এই তরণী। শুধু তা-ই নয়, দুই দশকেরও বেশি সময় পর জাপানের প্রথম কোন প্রমীলা খেলোয়াড় হিসেবে গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ওঠার রেকর্ড গড়লেন তিনি। তার আগে ১৯৯৬ সালে সর্বশেষ জাপানের নারী খেলোয়াড় হিসেবে উইম্বলডনের শেষ চারে খেলেছিলেন কিমিকো ডেট। তখন ওসকার জন্মই হয়নি। তার জন্মের দুই বছর আগে টেনিসের মেজর কোন টুর্নামেন্টের শেষ চারে খেলার সুযোগ পেয়েছিল কোন জাপানের খেলোয়াড়। কিমিকো ডেটের পর ২২ বছরের মধ্যে জাপানের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টেনিসের মেজর কোন টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়ে দারুণ খুশি ওসাকা। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার সমস্ত শরীর কাঁপছিল। সত্যিই এখানে ভাল খেলতে পেরে আমি খুব খুশি।’ ইউএস ওপেনে এর আগেও খেলেছেন তিনি। সর্বশেষ এই টুর্নামেন্টে যখন তিনি অংশ নেন তখন অনেক সমর্থকই তাকে দেখে হাসাহাসি করেছেন। যে কারণেই এবার তার মনের মধ্যে একটা জেদ কাজ করছিল। এ প্রসঙ্গে জাপানী তারকা বলেন, ‘গত বছর আমি যখন কাঁদতে ছিলাম তখন এখানকার অসংখ্য মানুষ হাসাহাসি করছিল। যে কারণেই এবার আমি সরাসরি নেটে চলে যাই। সত্যিই এই জয় আমার কাছে অনেক কিছু।’ ওসাকার সামনে এখন নতুন ইতিহাসের হাতছানি। প্রথম কোন গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলার সুযোগ। আর মৌসুমের শেষ গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হতে পারা তো তারজন্য বিশেষ কিছুই। কেননা, ফ্লোরিডায় যাওয়ার আগে নিউইয়র্কেই বেড়ে শৈশ্বব কাটিয়েছেন তিনি। তাই টেনিস খেলার শুরু থেকেই জাপানী তারকা স্বপ্ন দেখতেন, যদি কোন টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হন তাহলে সেটার প্রথমটা যেন ইউএস ওপেন হয়। এ বিষয়ে ওসাকার সরল স্বীকারোক্তি, ‘আমি সবসময়ই ভাবতাম, যদি কোন গ্র্যান্ডস্লাম জিতি তাহলে প্রথমটা যেন ইউএস ওপেন হয়। কেননা আমি এখানেই বড় হয়েছি। আমার ম্যাচ যেন দাদা-দাদি এসে দেখতে পারেন। আর সেটা যদি হয় তাহলে বিষয়টা দারুণ হবে।’ মৌসুমের শেষ গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেনে খেলোয়াড়দের প্রতিপক্ষ তাপমাত্রাও। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ওসাকা। তার কাছে এটা কোন ব্যাপারই নয় বলে মন্তব্য করেছেন ২০তম বাছাই। এ প্রসঙ্গে ওসাকার সাফ জবাব, ‘এ জন্য আমি দুঃখিত, কেননা আমি এটাকে সেরকম গরম মনে করি না। ফ্লোরিডার তাপে আমি অভ্যস্ত।’ নাওমির ভাবনাতে এখন ইউএস ওপেনের সেমিফাইনালের ম্যাচ। যেখানে ২০তম বাছাই নাওমি ওসাকার সামনে বড় বাধা এখন মেডিসন কেইস। আমেরিকার ১৪তম বাছাই কোয়ার্টার ফাইনালে ৬-৪ এবং ৬-৩ গেমে পরাজিত করেন স্প্যানিশ টেনিস তারকা কার্লা সুয়ারেজ নাভারোকে। মেডিসন কেইস গত বছর ইউএস ওপেনের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিলেন। কিন্তু সেবার স্বদেশী স্লোয়ানে স্টিফেন্সের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যান তিনি। ১২ মাস আগের সেই ফাইনালে হারের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার এগোচ্ছেন কেইস। তবে কত দূর যেতে পারবেন তিনি? টেনিসপ্রেমীদের অপেক্ষা এখন সেটাই দেখার। এদিকে ইউএস ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে স্বপ্নটা বেড়ে গিয়েছিল লেসিয়া সুরেঙ্কোর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইন্ডিয়ান ওয়েলসের চ্যাম্পিয়ন ওসাকার কাছে জয়রথ থেমে গেল তার। ম্যাচ শেষে তাই চরম হতাশ ইউক্রেনের এই টেনিস খেলোয়াড়।
×