ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাফ ফুটবল, টানা দুই হারে গ্রুপপর্ব থেকেই ভুটানের বিদায় প্রায় নিশ্চিত, নেপাল ৪-০ ভুটান

দুরন্ত জয়ে স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল নেপাল

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

দুরন্ত জয়ে স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল নেপাল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভাল খেলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে হারতে হয়েছিল নেপালকে। যে কারণে গ্রুপপর্ব থেকেই বাদ পড়ার শঙ্কায় পড়ে তারা। তবে বৃহস্পতিবার ভুটানকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের ভালভাবেই টিকিয়ে রেখেছে বালগোপাল মহারজনের দল। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে প্রায় পুরোটা সময়ই একতরফা প্রাধান্য বিস্তার করে খেলে নেপাল। অন্ততপক্ষে চার/পাঁচটি সহজ গোল মিস না করলে সুনীল, রোহিতদের জয়ের ব্যবধান আরও বড় হতে পারতো। এই জয়ে সেমিফাইনালে খেলার দৌড়ে ভালভাবেই টিকে রইলো নেপাল। শনিবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শেষ গ্রুপ ম্যাচে নির্ধারণ হবে তাদের ভাগ্য। অন্যদিকে টানা দুই ম্যাচে হেরে ভুটানের বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। অঙ্কের হিসেবে কিছুটা সম্ভাবনা থাকলেও সেটা প্রায় অসম্ভবই বলা যায়। আগামীকাল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ খেলবে ট্রেভর মরগানের ভুটান। ম্যাচের শুরু থেকেই ভুটানের দুর্গে চড়াও হয়ে খেলতে থাকে নেপাল। ফলশ্রুতিতে চতুর্থ মিনিটে ভাল সুযোগ পায় কিরণ কুমারের দল। ডানপ্রান্ত থেকে সংঘবদ্ধ আক্রমণে সুজল শ্রেষ্ঠার কাছ থেকে ডি বক্সে বল পান সুনীল বাল। কিন্তু চলতি বলে এই মিডফিল্ডারের শট বারপোস্ট উঁচিয়ে বাইরে যায়। নবম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে আরও একটি সুযোগ আসে নেপালের। কিন্তু বিমল মাগারের সহযোগিতায় বল পেয়ে ডি বক্সের মাথা থেকে রোহিত চান্দের নেয়া দুর্বল শট সহজেই তালুবন্দী করেন ভুটানী গোলরক্ষক শেরিং দেনদাপ। ১৩ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সহজ সুযোগ নষ্ট করে প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হারা নেপাল। বামপ্রান্ত দিয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যেয়ে ডি বক্সে ক্রস দেন ফরোয়ার্ড বিমল। কিন্তু ফাঁকায় থেকেও হেড করতে ব্যর্থ হন সুনীল বাল। ফিরতি বল ডি বক্সের মাথায় পেয়ে যান নেপালের রোহিত চান্দ। তার নেয়া জোরালো শট অল্পের জন্য বারপোস্ট উঁচিয়ে বাইরে যায়। ১৮ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে আদিত্য চৌধুরীর ফ্রিকিক অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে গোলবঞ্চিত হয় নেপাল। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণে সুযোগ নষ্ট করেন ভুটানের সেরা তারকা চেঞ্চো গেলসেন। ২১ মিনিটে কাক্সিক্ষত গোল করে এগিয়ে যায় নেপাল। সুনীল বালের কর্নার কিকে অসাধারণ হেডে ভুটানের জাল কাঁপান ডিফেন্ডার অনন্ত তামাং (১-০)। ২৫ মিনিটে ডি বক্সের ফাঁকায় বল পেয়েও ব্যর্থ হন নেপালের অঞ্জন বিস্তা। ফলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়নি। ৩০ মিনিটে ম্যাচে ফেরার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি ভুটান। ডি বক্সের কিছুটা বাইরে থেকে অধিনায়ক কর্মা শেরিংয়ের নেয়া শট অসাধারণ দক্ষতায় তালুবন্দী করেন নেপালী গোলরক্ষক কিরান কুমার। চোটের কারণে ম্যাচের ৩৯ মিনিটে মাঠ ছাড়েন ভুটানের ডিফেন্ডার মিপহাম চোপেল। তার পরিবর্তে মাঠে আসেন আরেক ডিফেন্ডার রিনচেন দর্জি। এক গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধের খেলা শেষ করে নেপাল। বিরতির পরও নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে খেলতে থাকে নেপাল। ৫০ মিনিটে সুনীলের কর্নার থেকে দ্বিতীয় গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল তারা। কিন্তু মিডফিল্ডার অঞ্জন বিস্টার হেড অল্পের জন্য সাইডপোস্ট ঘেঁষে বাইরে যায়। ৫৭ মিনিটে চেঞ্চো ডি বক্সের মধ্যে ফাঁকায় বল পেয়েও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। ফলে সমতা ফেরানো হয়নি ভুটানের। ব্যবধান বাড়াতে আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়ে দেয় নেপাল। ৬১, ৬২ ও ৬৩ মিনিটে পরপর তিনটি সুযোগ সৃষ্টি করে তারা। কিন্তু একটিও কাজে লাগাতে পারেননি সুনীল, রোহিতরা। ৬৫ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে সেন্দা দর্জি দারুণ শটে গোল করলেও অফসাইডের কারণে বাতিল করেন রেফারি। ফলে হতাশ হতে হয় ভুটানকে। ৬৮ মিনিটে নেপালের অসাধারণ প্রচেষ্টা সাইডপোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। বিমলের কাছ থেকে বল পেয়ে দুরন্ত শট নেন অঞ্জন। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার পোস্টে লেগে ফিরে আসে বল। পরের মিনিটে পেনাল্টি পায় নেপাল। ডি বক্সে ভুটানের নিমা ওয়াংডি ফাউল করেন নেপালের নিরঞ্জন খাদকাকে। সঙ্গে সঙ্গে বাঁশি বাজান রেফারি। আর দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ভুটানের নিমা। ফলে বাকি সময় তাদের দশজন নিয়ে খেলতে হয়। এরপর পেনাল্টি শট নেন নেপালের বিমল মাগার। কিন্তু বাঁ পায়ে নেয়া তার শট ফিরিয়ে দেন ভুটানের গোলরক্ষক। এতেও শেষ রক্ষা হয়নি। ফিরতি বল জালে জড়িয়ে দেন নেপালের সুনীল বাল (২-০)। ৭৯ মিনিটে তিন নম্বর গোল করে নেপাল। প্রায় মাঝমাঠ থেকে ভুটানের খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে একক প্রচেষ্টায় ডি বক্সে ঢুকে দুর্দান্ত প্লেসিং শটে লক্ষ্যভেদ করেন বদলি ফরোয়ার্ড ভারাত খাওয়াস (৩-০)। ৮৮ মিনিটে ভুটানের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেয় নেপাল। সুনীলের কর্নার থেকে দৃষ্টিনন্দন হেডে গোল করেন আরেক বদলি মিডফিল্ডার নিরঞ্জন (৪-০)।
×