ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

এশিয়া কাপে তরুণদের কাছে দারুণ কিছু প্রত্যাশা বাংলাদেশের কোচ স্টিভ রোডসের

টুর্নামেন্ট জেতার আত্মবিশ্বাস আছে

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

টুর্নামেন্ট জেতার আত্মবিশ্বাস আছে

মোঃ মামুন রশীদ ॥ দীর্ঘদিন ধরে একটি কথাই বাংলাদেশ ক্রিকেটে নিশ্চিত হয়ে গেছে যে পঞ্চপা-ব জ্বলে উঠলে যে কোন প্রতিপক্ষের সঙ্গেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া যায়। মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদরা ব্যর্থ হলে দলকে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে টেনে নেয়ার মতো কোন খেলোয়াড় নেই। উদীয়মান তরুণদের নিয়ে অনেক আশা-ভরসা থাকলেও তারা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেন না এবং ম্যাচজয়ী পারফর্মার হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে পারেন না। কিন্তু এবার প্রধান কোচ স্টিভ রোডস মনে-প্রাণে বিশ্বাস করছেন এশিয়া কাপে তরুণরা এগিয়ে আসবে এবং দারুণ কিছু করবে দলের জন্য। আর সে কারণেই টুর্নামেন্ট জেতার আত্মবিশ্বাস নিয়েই তিনি আরব আমিরাতে যাচ্ছেন। তবে সেজন্য তিনি গ্রুপপর্বের দুটি ম্যাচে দারুণ খেলার ওপর জোর দিয়েছেন। সেটি হলেই এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব বাংলাদেশ দলের, এমনটাই মনে করেন তিনি। বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে এসব কথা বলেন রোডস। টানা ১১ দিনের অনুশীলন শেষ। এই প্রথম কোন টুর্নামেন্টের জন্য ক্যাম্পে সব ক্রিকেটারকে নিয়ে অনুশীলন করার সুযোগ পেলেন কোচ রোডস। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাওয়ার আগে দলের সঙ্গে এ সময়টা কাটাতে পারেননি তিনি। কিন্তু এবার ক্রিকেটারদের দেখেছেন ভালভাবেই। বৃহস্পতিবার অনুশীলন শেষ হয়েছে। এবার দলের লক্ষ্য নিয়ে রোডস বললেন, ‘আমরা সেখানে পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়েই যাব। এশিয়াতে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের মতো পরাক্রমশালী দলগুলো আছে। আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা পারি। আমরা নিজেদের সেরাটা দিয়ে যদি চেষ্টা করি, শতভাগ দিতে পারি এবং ভাল কিছু ক্রিকেট খেলতে পারি, সেক্ষেত্রে বিশ্বাস আছে যে আমরা জিততে পারি। আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে উঁচু র‌্যাঙ্কের দল হলেও সেখানে খেলাগুলো বেশ কঠিন ছিল। সেখানে জেতাটা আমাদের দলকে প্রচুর আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমাদের ভাল খেলতে হবে এবং সেটি হলে আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। এরপর আমরা যদি টুর্নামেন্টের শেষ পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছুতে পারি, সেক্ষেত্রে কেন ভাববেন যে আমরা জিততে পারব না?’ যদিও দলের অন্যতম স্তম্ভ সাকিব আল হাসান অনুশীলনে ছিলেন না। এমনকি তিনি পুরোপুরি ফিট না হয়েও এশিয়া কাপে খেলতে যাবেন। এ বিষয়টি নিয়ে রোডস বলেন, ‘আমার বিশ্বাস হয় না সে ২০/৩০ ভাগ ফিট। আমার মনে সে তারচেয়ে অনেক বেশিই ফিট। ক্যারিবিয়ানে সে যেমন খেলেছে তেমনটাই যদি খেলতে পারে তাহলে সেটি বাংলাদেশের জন্য বিশাল সম্পদ হিসেবে পরিণত হবে। যদি ৬০-৭০ ভাগ ফিট হয়ে থাকে তাহলেই সাকিব আল হাসান থেকে দারুণ অনেক কিছুই পেয়ে যাবেন।’ এবার এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলকে গ্রুপপর্বে খেলতে হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। গত জুনে আফগানদের কাছে টি২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ দল। বিশেষ করে তাদের রিস্ট স্পিনাররা বেশ ভয়ঙ্কর। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও একই চ্যালেঞ্জ, কারণ বাংলাদেশে কোন রিস্ট স্পিনার নেই। এ বিষয়ে রোডস বলেন, ‘আমার মনে হয় আফগানিস্তানকে আমাদের যথেষ্ট সমীহ করতে হবে। আমাদের ক্রিকেটারদের কাছেও তারা যথেষ্টই সমীহ পাবে, যেহেতু তারা আমাদের টি২০তে পরাজিত করেছে। খুবই ভাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। আফগানিস্তান বেশ কঠিন দল। তাদের এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমাদের খেলা উচ্চ পর্যায়েরই হতে হবে। বাংলাদেশে খুব বেশি রিস্ট স্পিনার নেই। এটা এমন কিছু যেটার দিকে আমাদের মনোযোগী হতে হবে। আমাদের বেশ গুরুত্বের সঙ্গে পুরো দেশ অনুসন্ধান করতে হবে রিস্ট স্পিনার বের করতে।’ এশিয়া কাপের দলে থাকা তরুণ ওপেনার লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মিঠুন আলী ও আরিফুল হকরা কি এবার কিছু করে দেখাতে পারবেন সুযোগ পেলে? এ বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী রোডস বললেন, ‘আমি যদি এই মুহূর্তে লিটন দাসের অবস্থানে থাকতাম, তাহলে অনেক সন্তুষ্টই থাকতাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সে দারুণ একটি ইনিংস খেলেছে। আমি নিশ্চিত সে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস অনুভব করছে। বাকি ছেলেরা অনুশীলনে বেশ ভালই করেছে। মিঠুন দলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে পরে। আয়ারল্যান্ডে ‘এ’ দলের হয়ে সে যে পারফর্মেন্স দেখিয়েছে সে জন্যই তাকে দলে নিতে হয়েছে। তাছাড়া ক্যাম্পেও সে সবাইকে মুগ্ধ করেছে। আমরা এমন পর্যায়ের তরুল খেলোয়াড় পেয়ে উচ্ছ্বসিত। তাদের এখন এগিয়ে আসা প্রয়োজন এবং আমি নিশ্চিত তারা দারুণ কিছু করবে এমন প্রত্যাশা এখন অনেক বেশি। আমি আত্মবিশ্বাসী যে তারা বেশ ভাল অবস্থায় আছে এবং ভাল কিছুই করবে।’
×