ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রস্তুতি ম্যাচ ছাড়াই এশিয়া কাপ খেলবে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৭:০৯, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  প্রস্তুতি ম্যাচ ছাড়াই এশিয়া কাপ খেলবে বাংলাদেশ

মিথুন আশরাফ ॥ এশিয়া কাপের আগে বাংলাদেশ দলের নেই কোন প্রস্তুতি ম্যাচ। টুর্নামেন্টের আগে মাশরাফিরা খেলতে পারছেন না কোন প্রস্তুতি ম্যাচ। আর তাই ১৫ সেপ্টেম্বর শুরু হতে যাওয়া এশিয়া কাপে সরাসরি খেলতে হবে বাংলাদেশকে। ৯ সেপ্টেম্বর দুবাই গিয়ে, ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুশীলন করে টুর্নামেন্টের শুরুর দিনই খেলতে নামতে হবে। এ বিষয়টি সাবেক অধিনায়ক, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক, ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খানই বুধবার নিশ্চিত করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘আমরা ৯ তারিখে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাচ্ছি। সাকিব যুক্তরাষ্ট্র থেকে ওখানে (দলের সঙ্গে) যোগ দিবে। ওখানে শুধু আমরা অনুশীলন করব কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার জন্য, তবে কোন অনুশীলন ম্যাচ খেলব না। সরাসরি ১৫ তারিখে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচটি খেলব আমরা।’ টুর্নামেন্টের প্রথমদিনে গ্রুপপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এরপর ২০ সেপ্টেম্বর গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলবে মাশরাফিবাহিনী। গ্রুপপর্বে সেরা দুইয়ে থাকতে পারলে খেলবে ‘সুপারফোর’। ‘সুপারফোরে’ সেরা দুইয়ে থাকতে পারলে খেলবে ফাইনাল। এ টুর্নামেন্ট খেলার আগে দেশের মাটিতে দশদিনের মতো এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাঁচদিন অনুশীলন করেই খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষে ৯ আগস্ট দেশে ফেরে বাংলাদেশ। সেই থেকে ক্রিকেটাররা প্রতিযোগিতামূলক কোন ম্যাচে নেই। সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়ে যে কন্ডিশন, উইকেট সম্পর্কে ভাল জ্ঞান নেবেন ক্রিকেটাররা, এ জন্যও পুঁজি অনুশীলনই। সংযুক্ত আরব আমিরাতের কন্ডিশনে খেলা কঠিন। তা সবারই জানা। আকরামও জানেন তা। তাইতো বলেছেন, ‘হ্যাঁ কন্ডিশন নিয়ে চিন্তা আছে। যারা এর আগে ওখানে খেলেছে যেমন তামিম (ইকবাল), (মাহমুদুল্লাহ) রিয়াদ তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হয়েছে এই ব্যাপারে। যেমন সারজাহতে উইকেট এক ধরনের থাকে। কিন্তু দুবাই বা আবুধাবিতে উইকেট একেকদিন একেক ধরনের আচরণ করে। সুতরাং সেগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেছি। আর যেটি বললাম যে ক্রিকেটে যেটি ভাল হয় এবং ভাল খেলতে হলে যা যা দরকার হয়, ব্যাক আপ প্ল্যান সবকিছু নিয়ে আলোচনা করেছি। সবকিছুই ঠিক আছে। এখন ভালভাবে পারফর্ম করতে পারলেই ভাল।’ প্রধান কোচ স্টিভ রোডসের সঙ্গে আকরাম খানের কথা হয়েছে। তখন বিসিবির নির্বাচকরাও ছিলেন। আকরাম এ প্রসঙ্গে জানান, ‘আমরা মূলত ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছি। এশিয়া কাপের পরপরই জিম্বাবুইয়ে আসবে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ আসবে, সেটি নিয়ে কথা বলেছি। এছাড়াও অনেক ক্রিকেটারকে নিয়ে আলাদা করেও আলাপ করেছি। সেখানে নির্বাচকরাও ছিল। গত সিরিজটি নিয়েও আমরা আলাপ করেছি। এশিয়া কাপ, জিম্বাবুইয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ সবকিছু নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। সবকিছু তো বলা যাবে না। তবে আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছে। ইনজুরি জনিত কোন সমস্যা নেই। আর সাকিবের অপারেশটি হয়তো এশিয়া কাপের পরেই হবে।’ আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের আগেও ক্যাম্পে ছিলেন না সাকিব। এশিয়া কাপের আগেও ক্যাম্পে নেই। যেখানে খেলা হয় সেখানে সরাসরি দলের সঙ্গে যোগ দেন সাকিব। এ নিয়ে কথাও উঠছে। আকরাম জানান, ‘এটি তো সে অনুমতি নিয়েই গিয়েছে। আর ওর কিছু জরুরী বিষয় ছিল যার জন্য ওকে যেতে হতো। সে এই বিষয়টি অনেক আগে থেকেই বলে এসেছে। আর এই ধরনের সিরিয়াস কিছু না হলে আমরা সাধারণত ছুটির অনুমতি দেই না। আর সে দলের সবার সঙ্গে থাকতে পছন্দ করে। যেহেতু তাকে যেতেই হতো তাই অনুমতি দেয়া হয়েছে।’ প্রধান কোচ স্টিভ রোডস দলের সঙ্গে যোগ দেয়ার পর একটি সফরই করেছে বাংলাদেশ। তিন ফরমেটেই সিরিজ খেলেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট সিরিজে হারলেও ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজে জিতেছে। এরপর রোডসকে নিয়ে মূল্যায়ন করতে বললে আকরাম জানিয়েছেন, ‘মূল্যায়ন তো আসলে এত তাড়াতাড়ি করা সম্ভব নয়। এক কিংবা দুই বছর পর হয়তো এই মূল্যায়ন করা যায়। গুরুত্বপূর্ণ হলো তার প্রথম সিরিজেই আমরা অনেক বাজে খেলেছি টেস্টে। তবে এরপরে কিন্তু আমরা ওয়ানডে এবং টি২০তে খুব ভালভাবে পারফর্ম করেছি। সবমিলিয়ে প্রথম সিরিজটি ভাল হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা যদি বজায় রাখা যায় তাহলে ভাল হবে। আর তার থেকে বড় কথা হলো আপনারা যেভাবে মূল্যায়ন করেন আমরা কিন্তু সেভাবে করি না। যেমন যারা ভাল করছে তাদের নিয়ে আমরা চিন্তা করছি। আর যাদের ভাল করার কথা কিন্তু করতে পারছে না সেটি নিয়েই আমরা বেশি চিন্তিত। সেই ব্যাপার নিয়েই আমরা আলাপ-আলোচনা করেছি এবং তাদের কিভাবে ফর্মে আনা যায় সেটি নিয়ে কথা বলেছি। যেমন কিছু ভাল ক্রিকেটার আছে যেমন সৌম্য (সরকার), (এনামুল হক) বিজয় আছে। এরপর লিটন (কুমার দাস) আছে, সে যখন স্কোর করে তখন ভাল করে। কিন্তু তার ধারাবাহিকতার সমস্যা আছে। এগুলো যদি আমরা ঠিক করতে পারি তাহলে খুবই শক্তিশালী একটি দল হবে আমাদের। এমনকি বোলাররাও আছে। তারা যদি ভাল করতে পারে, তাহলে মূল্যায়নটি হবে কোচ কেন্দ্রিক।’
×