ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

রজনীদের উষ্ণ শুভকামনা জামালদের...

প্রকাশিত: ০৭:৩১, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 রজনীদের উষ্ণ শুভকামনা জামালদের...

রুমেল খান \ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটা অমর গান আছে, ‘তোমার হলো শুরু, আমার হলো সারা’... সাফল্যময় অতীতই হচ্ছে বর্তমানের শক্ত ভিত্তি। যা ভবিষ্যতে এনে দিতে পারে আরও নতুন সাফল্য। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল এ পর্যন্ত ছয়টি ট্রফি জিতেছে। ১৯৮৯ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপ’, ১৯৯৫ সালে মিয়ানামারে অনুষ্ঠিত ‘চার জাতি আমন্ত্রণমূলক আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট’, ১৯৯৯ সালে নেপালে এবং ২০১০ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘সাউথ এশিয়ান গেমস ফুটবল’, ২০০৩ সালে ভুটানে ‘আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্ট’ এবং ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ’। তাহলে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ দল সর্বশেষ ট্রফি জিতেছে আট বছর আগে। তবে বহু অধরা সপ্তম ট্রফিটির মালিক হয়ে যেতে পারে এ বছরই, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর। ওইদিন সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের (সাফ সুজুকি কাপ) ফাইনাল। ২০০৫ সালে এই আসরে সর্বশেষ তারা ফাইনাল খেলেছিল। ১৩ বছর পর আবারও ফাইনাল খেলা এবং ১৫ বছর পর আবারও শিরোপা জেতার হাতছানি দিচ্ছে জেমি ডে’র শিষ্যদের। পারবে কী তারা? যেন পারে, সেই আশীর্বাদ আর উষ্ণ শুভেচ্ছাই শুক্রবার তারা পেলেন ২০০৩ সাফ জয়ী পূর্বসূরিদের কাছ থেকে, রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ফুটবল স্টার্স : ২০০৩ এ্যান্ড ২০১৮’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস এ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ)। পৃষ্ঠপোষকতায় বসুন্ধরা কিংস। ২০০৩ সালে দেশকে সাফ ফুটবলের শিরোপা এনে দিয়েছিলেন অধিনায়ক রজনীকান্ত বর্মণ। এবার তারা একই সাফল্যের পুনরাবৃত্তি করার জন্য আশীর্বাদ জানালেন বর্তমান প্রজন্মের মামুনুল-জামালদের। সাফ চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে দলের প্রত্যেক ফুটবলারকে ৫ লাখ টাকা করে দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী এবং ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়। নতুন দলটিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন ২০০৩ সালের সাফজয়ী দলটি। জয়, রজনী, আমিনুল-বিপ্লবদের সঙ্গে মামুনুল, জামাল ভুঁইয়াদের একই মঞ্চে দাঁড় করিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতি। সাফজয়ী দলের অধিনায়ক রজনীকান্ত বর্মণ সম্ভাবনা দেখছেন বর্তমান সাফের দলটির মধ্যে, ‘আমি মনে করি কাতার এবং থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ দল যে পারফর্মেন্স করেছে তাতে করে তাদের পক্ষে ভাল কিছু করা সম্ভব। ১৫ বছর আগে বাংলাদেশ যে সাফল্য অর্জন করেছিল, বর্তমান দলটি যেন আবারও সে সাফল্য পায় সে কামনা করি। ২০০৩ সালে আমরা একটি টিম হয়ে খেলেছিলাম এবং সাফল্য পাই। এ দলের কাছেও আমরা চাই তারা যেন একটি টিম হয়ে দেশের জন্য খেলে।’ দীর্ঘদিন জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মামুনুল ইসলাম। সাফের প্রাথমিক স্কোয়াডেও আছেন। ওয়ালী ফয়সাল, মামুনুল ইসলাম, ফয়সাল মাহমুদ এবং নাসির উদ্দিন চৌধুরী দলের সবচেয়ে সিনিয়র ফুটবলার। মামুনুল চাইছেন এবারের তরুণ দলটি যেন তাদের জন্য সাফটি খেলেন, ‘স্কোয়াডে থাকলে এটা আমার জন্য ষষ্ঠ সাফ হবে। এর মধ্যে ২০১২ আসরে যে দলটি ছিল, তারা ছিল চ্যাম্পিয়ন হবার মতো। বর্তমান দলটির মধ্যেও সে রকম জয়ের ক্ষুধা দেখছি। এশিয়ান গেমসে জাতীয় সঙ্গীত যখন গাই তখন আমাদের মনের ভেতর একটা বিষয়ই থাকে- দেশের জন্য খেলতে হবে। আমরা হারার জাতি না, হারতে চাই না। মোস্ট সিনিয়র ৪ জন যদি স্কোয়াডে থাকি। আমাদের চারজনের জন্য যেন খেলে। যেন আমরা বলতে পারি সাফজয়ী টিমের সঙ্গে ছিলাম।’ জামাল ভুঁইয়া এশিয়ান গেমসে ফুটবলে অ-২৩ দলের অধিনায়ক ছিলেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন সবাই জয়, বিপ্লবদের নিয়ে কথা বলে। আমি চাই মানুষ তাদের কথা ভুলে আমাদের সাফল্য নিয়ে কথা বলে। তারজন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি। ’ দলের কোচ জেমি ডে বলেন, ‘গত ১৫ দিনে ফুটবলাররা কঠোর পরিশ্রম করেছে। এখানে থাকা সাফজয়ী দলটি তাদের বড় অনুপ্রেরণা। বাংলাদেশ দলের ফুটবলাররা তাদের অনেক কিছু বিসর্জন দিয়েছে একটা সাফল্যের জন্য। সাফে তারা ভাল করবে সে আশাই করছি।’ দলের প্রস্তুতি সম্পর্কে সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘ভাল প্রস্তুতি নিয়েছে আমাদের দল। আমি মনে করি ভাল টিম হয়েছে। নীলফামারীর ম্যাচ দেখে মনে হয়েছে এই টিম ১২০ মিনিট খেলার সামর্থ্য রাখে। এশিয়ান গেমসে দল প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় রাউন্ডে গিয়েছে। যেটা শুনে প্রধানমন্ত্রী খুব খুশি হয়েছেন। বর্তমান দল চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে যেন পুরস্কার নিতে পারে, সেই দোয়া করি।’
×