ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

চেম্বার আদালতে খালেদার জামিন স্থগিত হয়নি

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৩১ আগস্ট ২০১৮

চেম্বার আদালতে খালেদার জামিন স্থগিত হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগে নড়াইলে মানহানির মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করেনি চেম্বার আদালত। আদালত আগামী ১ অক্টোবর এ বিষয়ে শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত এ আদেশ দেয়। এর ফলে চেম্বার আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন বহাল থাকল বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন এ জে মোহাম্মদ আলী। সঙ্গে ছিলেন, খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজার রায়ের পর গত ৮ ফেরুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন বেগম খালেদা জিয়া। ওই মামলায় তিনি জামিন পেলেও আরও কয়েকটি মামলার কারণে তার মুক্তি হচ্ছে না। চেম্বার আদালতে শুনানির পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী এহসানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ১ অক্টোবর আবেদনটি শুনানির জন্য আপীল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে উঠবে। চেম্বার আদালত স্থগিতাদেশ না দেয়ায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া ছয় মাসের জামিন আদেশই বহাল থাকছে বলে তার আইনজীবীরা জানান। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগে নড়াইলে মানহানির মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে গত ১৩ আগস্ট ৬ মাসের জামিন দেয় হাইকোর্ট। এরপর জামিন স্থগিত চেয়ে গত ১৯ আগস্ট আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আবেদনের আজ (৩০ আগস্ট) শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গত ৫ আগস্ট নড়াইলের জেলা ও দায়রা জজ আদালত খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে। পরে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন খালেদা জিয়া। মামলার বিবরণে জানা যায়, নড়াইলের আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির মামলাটি হয় ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর। নড়াইল জেলা পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও নড়াগাতি থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান ফারুকী ওই মামলা দায়ের করেন। ওই বছর ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক আলোচনা সভায় খালেদা মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, ‘আজকে বলা হয়, এত লাখ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লাখ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানারকম তথ্য আছে।’ একাত্তরে আওয়ামী লীগ ‘স্বাধীনতা’ নয়, ‘ক্ষমতা’ চেয়েছিল দাবি করে ওই সভায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, ‘তিনি (জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ চাননি।’ মামলার অভিযোগে বলা হয়,‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা এবং জাতির জনকের গৌরবজনক ভূমিকা নিয়ে খালেদা জিয়া উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য দিয়ে মানহানি করেছেন।’ ওই বক্তব্যের কারণে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও বেশ কয়েকটি মামলা হয়। কুমিল্লায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি পেছাল ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা কুমিল্লা থেকে জানান, কুমিল্লায় খালেদার জামিন আবেদনের শুনানি আবারও পিছিয়ে ১২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছে আদালত। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নাশকতার ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ কেএম সামছুল আলম বৃহস্পতিবার বিকেলে এ আদেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একটি কাভার্ডভ্যানে আগুন দেয়ার ঘটনার ৪দিন পর পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করে। এ মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্রে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নাম রয়েছে। এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে তার আইনজীবীরা হাইকোর্টে আবেদন করেন। ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গত ১৩ আগস্ট আবেদনটি এক সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নি¤œ আদালতকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ওই আদেশের আলোকে গত ২০ আগস্ট খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আবেদন দাখিল করলে বৃহস্পতিবার অধিকতর শুনানির দিন ধার্য করেছিল আদালত। খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী এ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, এ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু, এ্যাডভোকেট আ হ ম তাইফুর আলম এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন।
×