ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

টটেনহ্যামে বিধ্বস্ত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ২৯ আগস্ট ২০১৮

টটেনহ্যামে বিধ্বস্ত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কিংবদন্তি কোচ স্যার এ্যালেক্স ফার্গুসনের পর ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে আর কোন সাফল্য নেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। ইংলিশ পরাশক্তিরা কিছুতেই শিরোপার কাছে ভিড়তে পারছে না। সময়ের অন্যতম সেরা কোচ জোশে মরিনহোকে ডাগআউটে এনেও কাজের কাজ হচ্ছে না। গেলবার ম্যানচেস্টার সিটির কাছে বিস্তর ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে রানার্সআপ হয় ম্যানইউ। এবার নতুন মৌসুমের শুরুতেও বেহাল অবস্থা রেড ডেভিলসদের। প্রথম ম্যাচ জিতে শুভসূচনা করলেও এরপর টানা দুই ম্যাচ হেরেছে তারা। ফলে বর্তমানে পয়েন্ট তালিকার ১৩তম স্থানে তারকাসমৃদ্ধ দলটি। সোমবার রাতে ঘরের মাঠ ওল্ডট্র্যাফোর্ডে টটেনহ্যাম হটস্পারের কাছে ৩-০ গোলে হেরেছে ম্যানইউ। পুরো ম্যাচে প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেও নাকাল হতে হয়েছে লুকাকু, পোগবাদের। অন্যদিকে পাল্টা আক্রমণে সুযোগ কাজে লাগিয়ে টানা তিন জয় তুলে নিয়েছে টটেনহ্যাম। এর আগে প্রিমিয়ার লীগের নতুন মৌসুমে ব্রাইটন এ্যান্ড হোব আলবিয়নের কাছে ৩-২ গোলে হেরেছিল ম্যানইউ। যদিও সেই তুলনায় এই ম্যাচে অপেক্ষাকৃত ভাল খেলেছে তারা। কিন্তু স্পার্সের নজর ছিল ইউনাইটেডের দুর্বল দিকগুলোর প্রতি। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চাপে ফেলে দেয় দলটিকে। নিজ মাঠ ওল্ডট্র্যাফোর্ডে অনুষ্ঠিত ম্যাচের প্রথমার্ধের নিয়ন্ত্রণ ছিল ইউনাইটেডের। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগও সৃষ্টি করে। কিন্তু তাদের ফিনিশিং ছিল একেবারেই সাদামাটা। এরপর ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় স্পার্সদের দিকে। মূলত দ্বিতীয়ার্ধেই ইনউনাইটেডের ওপর চড়াও হয় মরিসিও পচেত্তিনোর শিষ্যরা। বিরতির পরপরই ইউনাইটেডের জালে গোল উৎসবের সূচনা করেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হ্যারি কেন। ম্যাচের ৫০ মিনিটে কিরেন ট্রিপিয়ারের যোগান থেকে বল পেয়ে দর্শনীয় হেডে পরাস্ত করেন ইউনাইটেডের গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়াকে (১-০)। দুই মিনিটের ব্যবধানে ফের গোল উৎসবে মেতে ওঠে স্পার্স সমর্থকরা। ক্রিশ্চিয়ান এরিকসনের কাট ব্যাক থেকে বল পেয়ে দারুণ দক্ষতায় গোল করে টটেনহ্যামকে ২-০ ব্যবধানে পৌঁছে দেন লুকাস মাউরা। দিনটিকে ইউনাইটেডের জন্য সবচেয়ে জঘন্যতম দিন বানিয়ে ম্যাচের ৮৪ মিনিটে ফের গোল করেন লুকাস। বক্সের ভেতর জটলা থেকে কেনের সহায়তায় বল পেয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ইউনাইটেড গোলরক্ষক ডি গিয়াকে পরাস্ত করেন তিনি (৩-০)। এর ফলে লীগ শুরুর প্রথম তিন ম্যাচের দু’টিতেই পরাজয়ের মুখ দেখল ইউনাইটেড। ১৯৯২-৯৩ মৌসুমের পর এই প্রথম এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলো তারা। অর্থাৎ ২৬ বছরের মধ্যে লীগে সবচেয়ে বাজে শুরু হয়েছে ম্যানইউর। আর কোচ হিসেবে মরিনহোর জন্য এটি হচ্ছে হোম গ্রাউন্ডে বড় হার। অপরদিকে স্পার্সদের জন্য লীগের শুরুতে টানা তিন ম্যাচে জয় ক্লাবটির ইতিহাসে পঞ্চম ঘটনা। সর্বশেষ ২০০৯-১০ মৌসুমে এমন সূচনা করেছিল। শুধু তাই নয়, ওল্ডট্র্যাফোর্ডে ১৯৭২ সালের অক্টোবরের পর এটিই তাদের সবচেয়ে বড় জয়। ১৯৭২ সালে ৪-১ গোলে জয়লাভ করেছিল টটেনহ্যাম। বিজয়ী দলের হয়ে চার গোলের সবক’টিই করেছিলেন মার্টিন পিটার্স। প্রিমিয়ার লীগে নিজেদের মাঠে এটি ইউনাইটেডের ৫০তম পরাজয়। ওল্ডট্র্যাফোর্ডে ম্যাচটি দেখতে দর্শকের ছিল উপচেপড়া ভিড়। প্রায় ৭৫ হাজার দর্শক এসেছিল খেলা দেখতে। আগের ম্যাচে ব্রাইটনের মাঠে গিয়ে ৩-২ ব্যবধানে হেরে আসার পর এই ম্যাচে ম্যানইউ ঘুরে দাঁড়াবেÑ এমন প্রত্যাশাই ছিল ভক্ত-সমর্থকদের। কিন্তু মরিনহোর শিষ্যরা স্বাগতিক দর্শকদের এতটা হতাশ করবে তা ভাবতেই পারেনি কেউ। বিশেষ করে টানটান উত্তেজনায় ভরা প্রথমার্ধ উপহার দেয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে যখন ম্যাচটা জীবিত ছিল তখনও আশা ছাড়েনি স্বাগতিকরা; কিন্তু দেখা গেল দ্বিতীয়ার্ধে এসেই খেই হারিয়ে ফেলে মরিনহোর শিষ্যরা। একের পর এক গোল হজম করে বসে তারা। হতাশাজনক হারের পর প্রতিপক্ষকে বাহবা দিতে ভুল করেননি ম্যানইউ কোচ মরিনহো। স্পেশাল ওয়ান বলেন, ওরা সুযোগ কাজে লাগিয়েছে, পরিকল্পনামাফিক খেলেছে। আমরা শুরুতে সুযোগ কাজ লাগাতে না পারায় এই ব্যর্থতা।
×