ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

গেমস হকি

পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়াইয়ের লক্ষ্য বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৭:৩৩, ২৮ আগস্ট ২০১৮

পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়াইয়ের লক্ষ্য বাংলাদেশের

রুমেল খান ॥ ১-৬, ০-৯, ০-৭, ০-১৭ ...! সংখ্যাগুলো পড়ে কী মনে হচ্ছে? না, এগুলো কোন টেলিফোনের পিএবিএক্স নম্বর নয়। তাহলে এগুলো কী? এশিয়ান গেমসের হকিতে বাংলাদেশ জাতীয় যুবদলের চার ম্যাচের হারের স্কোরলাইন। কোন কোন দলের বিপক্ষে এই হার? কোন কোন দল নয়, মাত্র একটি দলের বিপক্ষে এই চার শোচনীয় হার। আর দলটির নাম? পরাক্রমশালী পাকিস্তান! আজ ইন্দোনেশিয়ার গেলোরা বাং কারনো স্পোর্টস কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় অনুষ্ঠিত হবে ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচটি। বিশ্ব হকিতে পাকিস্তান অবশ্য এখন আর শক্তিধর কোন দেশ নয়। তাদের র‌্যাঙ্কিং এখন ১৩। তবে এশিয়ান হকিতে এখনও তারা যথেষ্ট শক্তিশালী। পরিসংখ্যানেই তা পরিষ্কার হবে। এশিয়ান গেমসের হকি এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে মোট ১৫ বার। তাতে প্রতিবারই অংশ নিয়েছে পাকিস্তান। এই ১৫ বারের মধ্যে তারা ১১ বারই ফাইনাল খেলেছে। আর স্বর্ণপদক জিতেছে সর্বাধিক ৮ বার, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দক্ষিণ কোরিয়ার চেয়েও চারবার বেশি! পক্ষান্তরে বাংলাদেশ বিশ্ব হকির র‌্যাঙ্কিংয়ে আছে ৩১তম অবস্থানে। ১৯৭৮ থেকে এ পর্যন্ত এশিয়ান গেমস হকিতে তারা অংশ নিয়েছে মোট ৯ বার। তাদের সেরা সাফল্য হচ্ছে চারবার সপ্তম স্থান অধিকার করা (১৯৮৬, ১৯৯৪, ২০০২, ২০০৬)। এবার তারা অংশ নিয়েছে নিজেদের সেরা নৈপুণ্য দেখিয়ে একধাপ ওপরে ওঠা, মানে ষষ্ঠ স্থান অর্জন করা। চলমান এশিয়ান গেমসে ‘বি’ গ্রুপে পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশ আছে ছয় দলের মধ্যে তৃতীয় স্থানে। ৪ খেলার ৩টিতে জয় এবং ১টি হারে ৯ পয়েন্ট তাদের। পক্ষান্তরে সমান খেলায় সবকটিতেই জিতে পূর্ণ ১২ নিয়ে পাকিস্তান আছে শীর্ষ অবস্থানে। বাংলাদেশ হারিয়েছে ২-১ গোলে ওমানকে, ৬-১ গোলে কাজাখস্তানকে এবং ৩-১ গোলে থাইল্যান্ডকে। আর হেরেছে ০-৭ গোলে মালয়েশিয়ার কাছে। পক্ষান্তরে পাকিস্তানের জয়গুলো এসেছে ১০-০ গোলে থাইল্যান্ড, ১০-০ গোলে ওমান, ১৬-০ গোলে কাজাখস্তান এবং ৪-১ গোলে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে। এ আসরে তাদের গোল দ্বিতীয় সর্বাধিক ৪০টি (৫৬ গোল নিয়ে শীর্ষে ‘এ’ গ্রুপে ভারত)। তবে দুই গ্রুপ মিলিয়ে সবচেয়ে কম গোল (১টি) হজম করেছে তারাই। এদিকে বাংলাদেশের গোল ১১, খেয়েছে ১০টি। এই আসরে মুখোমুখি লড়াইয়ে পাকিস্তাননের সঙ্গে এ পর্যন্ত চার ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। ১৯৭৮ সালে ব্যাঙ্কক আসরে ০-১৭ গোলে শোচনীয়ভাবে হারে লাল-সবুজরা। যেকোন দলের কাছে সবচেয়ে বেশি গোল খাওয়ার এটিই তাদের নজির। দ্বিতীয় সাক্ষাত ১৯৮৬ সালে সিউলে অনুষ্ঠিত আসরে। সেবার হারের ব্যবধানটা ছিল বেশ কম, মাত্র ০-৭ গোলে হার! কিন্তু ২০০২ সালে বুসানে অনুষ্ঠিত আসরে দুই গোল বেশি খেয়ে আবারও অবনমন ঘটে (০-৯ গোলে হার)। সর্বশেষ ২০১০ সালে গুয়াংজুতে অনুষ্ঠিত আসরে কিঞ্চিৎ উন্নতি ঘটে। এবার একটি গোলও করতে সক্ষম হয় (১-৬)। ‘বি’ গ্রুপে আপাতত তৃতীয় স্থানে আছেন জিমি-চয়নরা। এই অবস্থান ধরে রেখে ষষ্ঠ হতে পারলে চার বছর পরের এশিয়ান গেমসে সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। বাস্তবতা হচ্ছেÑ পাকিস্তানের বিপক্ষে জেতাটা অসম্ভব। বাস্তবতাটা মাথায় রেখে তাই পাকীদের বিপক্ষে কম গোল হজমের লক্ষ্য স্থির করেছে টিম বাংলাদেশ। আর আজ সেই লক্ষ্যেই টার্ফে নামবে তারা। পাকিস্তানের কাছে হেরে গেলে অবশ্য বাংলাদেশকে একধাপ নিচে নেমে যেতে হবে। তখন খেলতে হবে ষষ্ঠ হওয়ার জন্য। অবশ্য আসর শুরুর আগে বাংলাদেশ দল ষষ্ঠ স্থান অধিকারের কথাই ব্যক্ত করেছিল। এখন দেখার বিষয়, আজ সম্মানজনক হারের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশের লক্ষ্য পূরণ হয় কি না।
×