ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

পরলোকে মার্কিন সিনেটর জন ম্যাককেইন

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ২৭ আগস্ট ২০১৮

পরলোকে মার্কিন সিনেটর জন ম্যাককেইন

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত সিনেটর ও ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন বাহিনীর যোদ্ধা জন ম্যাককেইন মারা গেছেন। মস্তিষ্ক ক্যান্সারে ভুগে ৮১ বছর বয়সে তিনি পরলোক গমন করেন। -খবর এএফপি ও বিবিসির। তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়, জন ম্যাককেইন শনিবার স্থানীয় সময় ৪টা ২৮ মিনিটে মারা গেছেন। এ সময় তার পাশে স্ত্রী সিন্ডিসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের ছয় বারের সিনেটর ম্যাককেইন ২০০৮ সালে রিপাবলিকান দল থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন কড়া সমালোচক ছিলেন ম্যাককেইন। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে তার মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়লে তার চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু ম্যাককেইনের পরিবার শুক্রবার জানায়, তিনি আর চিকিৎসা না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এক টুইটার বার্তায় ম্যাককেইনের মেয়ে মেগান বলেন, ‘বাবাকে ছাড়া আমাদের আগামী দিনগুলো একরকম থাকবে না। তবে তিনি যে দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন, তাতে সেই দিনগুলো হবে ভালবাসায় পূর্ণ।’ ম্যাককেইনের বাবা ও দাদা দুজনই মার্কিন নৌবাহিনীর এ্যাডমিরাল ছিলেন। আর ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় ম্যাককেইন নিজে ছিলেন একজন ফাইটার পাইলট। বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ধরা পড়লে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় যুদ্ধবন্দী হিসেবে কারাগারে কাটাতে হয়েছিল তাকে। সে সময় ম্যাককেইন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তার মৃত্যুর খবরে ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ অন্যান্য নেতারা শোক প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প এক টুইটে প্রয়াত এই সিনটরের পরিবারের জন্য সমবেদনা ও শ্রদ্ধার কথা জানান। ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী জন ম্যাককেইনের সঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে লড়েন সারাহ পালিন। টুইটারে ম্যাককেইনের সঙ্গে নিজের একটি ছবি শেয়ার করে সারাহ পালিন তাকে বর্ণনা করেছেন একজন বন্ধু হিসেবে। লিখেছেন, বিশ্ব একজন ‘আসল আমেরিকানকে’ হারালো। সেই নির্বাচনে ম্যাককেইনকে পরাজিত করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন বারাক ওবামা। এক শোকবার্তায় ওবামা লিখেছেন, সকল রাজনৈতিক মতপার্থক্যের পরও সেই আদর্শের জায়গায় তারা দুজনেই একমত ছিলেন, যে আদর্শের জন্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে আমেরিকানরা ‘লড়াই করেছে, আত্মোৎসর্গ করেছে। ওবামা আরও লিখেন, জন ম্যাককেইনকে একসময় যে ধরনের পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, তেমন অভিজ্ঞতা থাকা মানুষ আমাদের মধ্যে খুব বেশি নেই। যে সাহসিকতার পরিচয় তাকে দিতে হয়েছিল, তা আমাদের হয়নি।’ বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরে থেকেও ম্যাককেইনের দীর্ঘ দিনের বন্ধু ছিলেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এক শোকবার্তায় বাইডেন লেখেন, আমেরিকার ওপর ম্যাককেইনের প্রভাব শেষ হয়ে যায় নি। প্রখ্যাত এই সিনেটরের মৃত্যুতে ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিল ও হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের জীবিত সকল সাবেক প্রেসিডেন্ট এক সারিতে দাঁড়িয়ে ম্যাককেইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
×