নিজস্ব সংবাদদাতা, নড়াইল, ২৪ আগস্ট ॥ ঢাকায় বাসাবাড়িতে কাজে নিয়ে রোকছানা নামে নড়াইলের ১০ বছরের একটি শিশুর ওপর মধ্যযুগীয় বর্বরতা চালানো হয়েছে। যৌন নিপীড়ন থেকে শুরু করে দীর্ঘ ৮ মাস হেন নির্যাতন নেই যা করা হয়নি শিশুটির ওপর। নির্মম নির্যাতনের ফলে মৃত্যু পথযাত্রী শিশুটিকে নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নির্যাতিতার স্বজনরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছে। এ বিষয়ে রোকছানার পিতা রাসেল শেখ বাদী হয়ে গৃহকর্তাসহ ৪ জনের নামে লোহাগড়া থানায় মামলা করেছে। জীবন মৃত্যুর দোলাচলে নিস্তেজ কঙ্কালসার দেহটি হাসপাতালের বেডে লেপ্টে আছে। সারা শরীরের আঘাতের নতুন পুরাতন কালো দাগ, দগদগে ক্ষতও রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় বাতাস, খাদ্য গ্রহণের শক্তিটুকু নিঃশেষ হয়ে গেছে, তাইতো এসবই চলছে কৃত্রিম উপায়ে। হতদরিদ্র পরিবারে একটু সচ্ছলতা ফেরাতে ঢাকায় গৃহপরিচারিকার কাজে গিয়ে সেদিনের উচ্ছল চঞ্চল গ্রাম্য বালিকা রোকছানার আজ এই করুণ পরিণতি। রোকছানা লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের বাহিরপাড়া গ্রামের রাসেল শেখের মেয়ে। জানাগেছে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার বাহিরপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর রাসেল শেখ। নিজের কোন জায়গা জমি না থাকায় অন্যের জমির ওপর ঘর বেঁধে পাঁচ সদস্য নিয়ে বসবাস করেন। অন্যের জমিতে শ্রম বিক্রি করে দু’বেলা দু’মুঠো ভাত খেয়ে কোন রকম বেঁচে আছেন। রোখছানার মা রত্মা বেগম জানান, মাঝে মধ্যে মোবাইলে তার মেয়ের সঙ্গে কথা বলত। তবে কথাবার্তায় কখনও ভাল মনে হয়নি। রোখছানার শরীর জুড়ে শুধু আঘাতের চিহ্ন। হাসপাতালে কঙ্কালের মতো শুয়ে আছে। বাড়ির মালিক আছাদুল্লাহ ও তার স্ত্রী সোনিয়া বেগমসহ পরিবারের সদস্য নির্মমভাবে তার মেয়ের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। তিনি মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।