ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সোমবার এশিয়া কাপ মিশনে ঢুকছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৭:২৫, ২৫ আগস্ট ২০১৮

 সোমবার এশিয়া কাপ মিশনে ঢুকছে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষ করে এসে অনেকদিন বিশ্রামে থাকলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের ক্রিকেটাররা। এবার এশিয়া কাপের জন্য প্রস্তুতিতে নামার পালা। ১৭ দিন বিশ্রাম শেষে সোমবার থেকে এশিয়া কাপের জন্য প্রস্তুতিতে নামবেন ক্রিকেটাররা। আর এ প্রস্তুতি দিয়েই এশিয়া কাপ মিশনে ঢুকছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। এশিয়া কাপ সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হবে ১৫ সেপ্টেম্বর। শেষ হবে ২৮ সেপ্টেম্বর। টুর্নামেন্টের প্রথমদিনেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লড়াই করবে বাংলাদেশ। হাতে ১৯ দিন পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। এর মধ্যে বিশ্রামে থাকাতে যে জড়তা আছে তা কাটিয়ে নিতে হবে। সোমবার সকাল ৯টায় প্রধান কোচ স্টিভ রোডসের কাছে এশিয়া কাপের জন্য রিপোর্ট করতে হবে ক্রিকেটারদের। প্রাথমিক দলে সুযোগ পেয়েছেন ৩১ ক্রিকেটার। প্রাথমিক দলে মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, এনামুল হক বিজয়, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান রুম্মন, সাইফউদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, লিটন কুমার দাস, আবু হায়দার রনি, নাজমুল ইসলাম অপু, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুমিনুল হক, নুরুল হাসান সোহান, রুবেল হোসেন, আরিফুল হক, আবু জায়েদ চৌধুরী রাহি, নাজমুল হোসেন শান্ত, শরিফুল ইসলাম, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, কামরুল ইসলাম রাব্বি, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, মোঃ জাকির হাসান, সানজামুল ইসলাম, মোঃ মিঠুন ও ফজলে মাহমুদ রাব্বি রয়েছেন। এ ক্রিকেটারদের রিপোর্ট করতে হবে। এশিয়া কাপ ১৫ সেপ্টেম্বর শুরু হলেও বাংলাদেশ দল কয়েকদিন আগেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাবে। সেখানে গিয়ে প্রচ- গরম আবহাওয়ার সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে হবে। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারলে যে বিপদ আসবে। তাই কন্ডিশনকে জয় করাই প্রধান লক্ষ্য হবে বাংলাদেশের। এশিয়া কাপ এবার হবে ওয়ানডে ফরমেটে। যে ফরমেটটি আবার বাংলাদেশ দলের ফেবারিট ফরমেটও। তাই এ ফরমেটের টুর্নামেন্টে ভাল করার চ্যালেঞ্জও থাকছে বাংলাদেশের সামনে। এবার ১৩তম আসর হবে। বাংলাদেশের ম্যাচ দিয়েই এবার এ টুর্নামেন্ট শুরু হবে। ১৫ সেপ্টেম্বর টুর্নামেন্ট শুরুর প্রথমদিনেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ থাকবে শ্রীলঙ্কা। ম্যাচটি দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। গ্রুপপর্বে বাংলাদেশের আরেক প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। ২০ সেপ্টেম্বর আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে এবার দুটি গ্রুপ থাকছে। ‘এ’ গ্রুপ ও ‘বি’ গ্রুপ। ‘এ’ গ্রুপে থাকছে ভারত, পাকিস্তান। সঙ্গে থাকছে এশিয়া কাপের বাছাইপর্ব খেলে আসা একটি দল। যে দলটি ২৯ আগস্ট থেকে ৬ সেপ্টেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠেয় বাছাইপর্বের সেরা হয়ে এশিয়া কাপের মূলপর্বে খেলবে। বাছাইপর্বে খেলবে হংকং, মালয়েশিয়া, নেপাল, ওমান, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এ দলগুলোর মধ্যে একটি দল বাছাইপর্ব পেরিয়ে মূলপর্বে খেলবে। ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গে থাকছে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। দুই গ্রুপে থাকা দলগুলো নিজেদের গ্রুপে পরস্পরের বিপক্ষে একটি করে ম্যাচ খেলবে। এরপর হবে সুপারফোর। সুপারফোরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে হলে গ্রুপের সেরা দুই দলের একটি হতে হবে। পয়েন্ট তালিকায় সেরা দুইয়ে থাকতে হবে। সুপারফোরে দুই গ্রুপ থেকে উঠে আসা চারদল আবার পরস্পরের বিপক্ষে লড়াই করবে। যে দুটি দল সুপারফোরে সেরা হবে, পয়েন্ট তালিকায় সেরা দুইয়ে থাকবে তারাই ফাইনালে লড়াই করবে। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে খেলবে। এশিয়ার সেরা হওয়ার লড়াইয়ে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে সুপার ফোরের সেরা দুই দল ২৮ সেপ্টেম্বর দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে। এশিয়া কাপ হওয়ার কথা ছিল শুরুতে ভারতে। কিন্তু ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক উত্তপ্ত অবস্থার জন্যই শেষ পর্যন্ত ভারতে হচ্ছে না টুর্নামেন্ট। সংযুক্ত আরব আমিরাতে হবে। এবার টুর্নামেন্টের ১৩তম আসর হবে। ১৯৮৪ সালে শুরু হয় টুর্নামেন্ট। এশিয়া কাপ হিসেব করলে ১৪তম আসর। কিন্তু ওয়ানডে ফরমেটের এশিয়া কাপ হিসেব করলে ১৩তম আসর। ২০১৬ সালে এশিয়া কাপ টি২০ ফরমেটে হয়েছিল। সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এমন যে ফরমেটের বিশ্বকাপ সামনে থাকবে সেই ফরমেটেই হবে এশিয়া কাপ। ২০১৬ সালের টি২০ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে টি২০ ফরমেটে এশিয়া কাপ হয়েছিল। এবার ২০১৯ সালের ইংল্যান্ড এ্যান্ড ওয়েলসে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ানডে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ওয়ানডে ফরমেটে হবে এশিয়া কাপ। একবারই হওয়া টি২০ ফরমেটের বিশ্বকাপে একমাত্র চ্যাম্পিয়ন দল এখন পর্যন্ত ভারত। তবে ওয়ানডে ফরমেটে সর্বশেষ ২০১৪ সালের এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়াসহ পাঁচবার শিরোপা জিতেছে শ্রীলঙ্কা। ভারতও সমান সংখ্যকবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেই হিসেবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা ও ভারত যুগ্মভাবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। শ্রীলঙ্কা ১৯৮৬, ১৯৯৭, ২০০৪, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়। ভারত ১৯৮৪, ১৯৮৮, ১৯৯০-৯১, ১৯৯৫ ও ২০১০ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়। পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন হয় দুইবার। ২০০০ ও ২০১২ সালে শিরোপা জিতে পাকিস্তান। বাংলাদেশের দুইবার শিরোপা জেতার সুযোগ ছিল। ২০১২ সালে পাকিস্তানের কাছে ও ২০১৬ সালে ভারতের কাছে ফাইনালে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয়। এশিয়া কাপে লীগপর্বই বেশি হয়েছে। ২০০৪ ও ২০০৮ সালের টুর্নামেন্ট দুটি গ্রুপপর্ব পেরিয়ে সুপারফোরে খেলা হয়েছে। এছাড়া সবকটি আসরই লীগপর্বে হয়েছে। লীগপর্ব পেরিয়ে সেরা দুই দল ফাইনালে খেলেছে। ১০ বছর পর আবারও গ্রুপপর্ব এবং তা পেরিয়ে সুপারফোর খেলা হবে। এশিয়া কাপের দ্বিতীয় আসর থেকেই অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ। একবার টি২০ টুর্নামেন্টসহ ১২বার খেলেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে ফরমেটের টুর্নামেন্টে খেলেছে ১১বার। দুইবার রানার্সআপ হওয়াই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য। ধীরে ধীরে এশিয়ার শক্তিশালী দলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপেও নিজেদের মেলে ধরেছে। সর্বশেষ আসরেই ফাইনালে খেলেছে। এবার কী করবে বাংলাদেশ? শিরোপা জিততে পারবে? ১৫ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই এবারের এশিয়া কাপের মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ। শিরোপা জেতার মিশনেই নামবে মাশরাফিবাহিনী। আর সেই মিশন নিয়েই এখন সামনে যত ভাবনা হবে। সোমবার থেকে প্রস্তুতি শুরু হওয়ার মধ্য দিয়ে এশিয়া কাপের মিশনে ঢুকে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল।
×