ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এশিয়ান গেমস ফুটবল বাছাই

আজ কাতারের মুখোমুখি বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ১৯ আগস্ট ২০১৮

 আজ কাতারের মুখোমুখি বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এশিয়ান গেমস ফুটবলে কিছু প্রাপ্তির আশায় ইন্দোনেশিয়ায় যায়নি বাংলাদেশ জাতীয় যুব (অ-২৩) ফুটবল দল। গেছে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে। সেই অভিজ্ঞতা অর্জন অবশ্য চলছে সেই ১৯৭৮ ব্যাংকক এশিয়ান গেমস থেকেই। মাঝে দুটি আসর (১৯৯৪ ও ১৯৯৮) ছাড়া এই আসরে নিয়মিতই অংশ নিয়ে আসছে। গেমস ফুটবলে এ পর্যন্ত ২৩ ম্যাচ খেলে মাত্র ৩টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। বাকি ২০টিতেই হেরেছে। সর্বশেষ জয় গত ২০১৪ এশিয়ান গেমসে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১-০ গোলে। এবারও বাংলাদেশের এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণ মূলত ঘরের মাঠে সাফ ও বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের প্রস্তুতি হিসেবেই। এই দুই টুর্নামেন্টের আগে এশিয়ান গেমসে দলকে পরখ করার সুযোগ পাচ্ছেন নতুন ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে। ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে উজবেকিস্তানের কাছে ৩-০ গোলে হার দিয়ে শুরু করে বাংলাদেশ, দ্বিতীয় ম্যাচে এগিয়ে গিয়েও ১-১ গোলে দুর্ভাগ্যের ড্র করে শক্তিশালী থাইল্যান্ডের সঙ্গে। শেষ গ্রুপ ম্যাচে আজ তারা মুখোমুখি হবে আরেক শক্তিশালী দল কাতারের। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে বেকাসির প্যাট্রিয়ট চন্দ্রভাগা স্টেডিয়ামে। এই ম্যাচে অসম্ভবকে সম্ভব করার একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশের। এদিন একই সময়ে সিবিনংয়ের পাকানসারি স্টেডিয়ামে উজবেকিস্তানের মুখোমুখি হবে থাইল্যান্ড। ওই ম্যাচে যদি থাইল্যান্ড হেরে যায় ও বাংলাদেশ জিতে যায়, তাহলে শেষ ১৬ বা দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকছে। বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সঙ্গে ড্র করেছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ডও কাতারের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে। তাই কাতারকে খুব কঠিন প্রতিপক্ষ বলা যাবে না বাংলাদেশের জন্য। অন্যদিকে উজবেকিস্তান নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচে কাতারকে হারিয়েছে ৬-০ গোলের ব্যবধানে। তাই থাইল্যান্ডকেও তারা হারিয়ে দেবে এমনটা প্রত্যাশা করাই যেতে পারে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। এশিয়ান গেমস ফুটবলকে দুই আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি হিসেবেই নিয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। কিন্তু নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্ত খেলে এক পয়েন্ট সংগ্রহ করায় জামাল ভুঁইয়াদের প্রত্যাশাটা বেড়ে গেছে। কারণ আজ গ্রুপের শেষ ম্যাচে কাতারের বিপক্ষে পয়েন্ট অর্জন করতে পারলে পরবর্তী রাউন্ডে যাবার সম্ভাবনা থাকছে লাল-সবুজদের। আর বাংলাদেশ অনুর্ধ ২৩ ফুটবল দলও নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে এই ম্যাচে পয়েন্ট অর্জন করতে চায়। নিজেদের প্রথম ম্যাচে উজবেকিস্তানের কাছে হারলেও ওই ম্যাচে শিষ্যদের খেলায় মুগ্ধ হন বাংলাদেশ দলের কোচ জেমি ডে। গুরুর সেই প্রশংসার প্রতিদান দল দিয়েছে দ্বিতীয় ম্যাচে থাইল্যান্ডের সঙ্গে ড্র করে। যদিও ম্যাচে জিততে পারতো তারা। ভাগ্য সহায় না হওয়াতে খেলা শেষ হওয়ার ১০ মিনিট আগে গোল খেয়ে যায় লাল-সবুজরা। দুর্ভাগ্য আর কাকে বলে। তারপরও গ্রুপ ‘বি’তে ড্র করে ওই ১ পয়েন্টই বাংলাদেশ দলের পরবর্তী রাউন্ডে যাবার সম্ভাবনা জাগিয়েছে। কারণ গ্রুপের শীর্ষ দুই দল যাবে পরবর্তী রাউন্ডে। এর মধ্যে দুই ম্যাচ খেলে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে উজবেকিস্তান। পরবর্তী রাউন্ডে যাবার ক্ষেত্রে তারাই সবচেয়ে এগিয়ে। অন্যদিকে থাইল্যান্ড দুই ম্যাচ খেলে দু’টিতেই ড্র করেছে। তাদের সংগ্রহ ২ পয়েন্ট। আছে দ্বিতীয় স্থানে। অন্যদিকে দুই ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ পয়েন্ট। আজ বাংলাদেশ যদি কাতারকে হারিয়ে দিতে পারে তবে তাদের হবে ৪ পয়েন্ট। কোচ জেমি ডে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ড্র করার পর কাতারের বিপক্ষেও পয়েন্ট জিততে আশাবাদী, ‘থাইল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে চেষ্টা করেছি। ম্যাচে ছেলেরা ভাল খেলেছে। আমরা লিডও নিয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারিনি।’ থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ প্রসঙ্গে জেমি বলেন, ‘আশা করছি আগামীকাল (আজ) কাতারের বিপক্ষে আমরা ভাল খেলব। সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোল আদায় করে নেবার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। আমাদের সামনে সুযোগ আছে। এটাই খেলোয়াড়দের বড় অর্জন।’ গেমসের আগে তার অধীনে ৫টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এর ২টিতে জয়, ২টিতে ড্র এবং একটিতে হারে বাংলাদেশ। এশিয়ান গেমসের আগে বাংলাদেশ প্রথমে কাতার ও পরে দক্ষিণ কোরিয়ায় কন্ডিশনিং ক্যাম্প করে। এখন দেখার বিষয়, আজ অসম্ভবকে সম্ভব করার মিশনে সফল হতে পারে কি না বাংলাদেশ।
×