ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক রাজনীতির ওপর নির্ভর করবে না ॥ শ্রিংলা

প্রকাশিত: ০৭:৩৭, ১৪ আগস্ট ২০১৮

 ভারত-বাংলাদেশ  সম্পর্ক রাজনীতির  ওপর নির্ভর  করবে না ॥  শ্রিংলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক রাজনীতির ওপর নির্ভর করবে না, নির্ভর করবে জনগণ ও বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের ওপর। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে ২০১৫ সালে স্মরণীয় পরিদর্শনকালে ভৌগোলিক সীমা বাস্তবায়ন করেছিলেন। গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ভারতে গিয়েছিলেন তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদি দুই দেশের সম্পর্ককে সোনালি অধ্যায় হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন। সম্পর্কের ক্ষেত্রে পার্টনারশিপ গুরুত্বপূর্ণ হলো কিভাবে এই সম্পর্ক সামনের দিনে টেকসই হবে। সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফ্ফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী দিবসে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এসব কথা বলেন। ‘পার্টিশন পলিটিক্স : ইমপ্যাক্টস অন সোসাইটি, ইকোনমি, কালচার এ্যান্ড ইন্দো-বাংলা রিলেশনস (১৯৪৭-২০১৮)’ প্রতিপাদ্যে ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র ও রিসার্চ এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কালেক্টিভ (আরডিসি) সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে দুই দেশের শতাধিক গবেষক অংশ নেন। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, সেন্টার ফর এ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন আর্টস এ্যান্ড সোস্যাল সায়েন্সেস (কারাকাস), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ভারতীয় হাইকমিশন। হর্ষবর্ধন শ্রিংলা আরও বলেন, বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক লিঙ্কেজ রয়েছে। দুই দেশে একই সভ্যতার সম্পর্ক বিদ্যমান। ৫৩ নদী আমাদের দুই দেশের মধ্যে প্রবাহিত। সব নদী ভারত থেকে উৎপন্ন হয়ে বাংলাদেশে আসেনি কিছু নদী বাংলাদেশ থেকে ভারতেও গিয়েছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যয়, লালন ফকির তারা দুই দেশেই অত্যন্ত সম্মানীয় ব্যক্তিত্ব। সমাপনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ তারেক মাসুদের স্মরণে ঢাবিতে আলোচনা সভা ॥ বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদের স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে তারেক মাসুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। সোমবার বিকেল ৫ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুননাহার হল সংলগ্ন তারেক-মিশুক স্মৃতি স্থাপনার পাদদেশে তারেক মাসুদ স্মৃতি বক্তৃতা ২০১৮ অনুষ্ঠিত হয়। দেশভাগের চলচ্চিত্র : বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা বিষয়ে বক্তব্য রাখেন চলচ্চিত্রকার আকরাম খান। আকরাম খান বলেন, তারেক মাসুদ যে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতেন তা নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই করতেন। চলচ্চিত্রে নিজস্ব একটা আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছেন। দেশভাগ নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোতে ওপারের মুসলনমানদের দুর্দশার কথা আমরা খুব কমই পেয়েছি। তারেক মাসুদ যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে ওপার থেকে মুসলনমানদের পরিণতির কথাও জানতে পারতাম। আশা করি পরবর্তী প্রজন্মের চলচ্চিত্রে নির্মাতারা এ বিষয়টি তুলে ধরবেন। সমাপনী আলোচনায় তারেক মাসুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সভাপতি ক্যাথরিন মাসুদ দুর্ঘটনার কথা স্মরণ করে বলেন, আমরা কয়েকজন সেই গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেও তারেক মাসুদসহ বাকিরা চলে গেছেন না ফেরার দেশে । তারেক মাসুদ আমাদের পাশে না থাকলেও তার সৃষ্টিকর্ম আছে। তার ভাবনাই বেঁচে থাকবে। শুধু দেশ বিভাগ নয়, মানুষের মধ্যেও যে বিভাজন তা তিনি চলচ্চিত্রের মধ্যে দেখিয়েছেন। তার ভাবনা নিয়ে ভাবতে থাকার মাধ্যমেই আমরা তাকে স্মরণ করি। তারেক মাসুদের ভাবনা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। এ সময় চলচ্চিত্রকার প্রসূন রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, চলচ্চিত্র পরিচালক নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চুসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট ‘কাগজের ফুল’ চলচ্চিত্রের শূটিং-এর লোকেশন নির্বাচন শেষে ফেরার পথে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুপুর ১২ টা ২৫ মিনিটে উল্টো দিক থেকে আসা বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে তারেক মাসুদ ও মিশুক মনিরসহ আরও ৩ জনের ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়।
×