ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ৩-০ নেপাল, সেমিতে প্রতিপক্ষ স্বাগতিক ভুটান

গ্রুপ সেরা হয়ে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ১৪ আগস্ট ২০১৮

গ্রুপ সেরা হয়ে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

রুমেল খান ॥ দুদিন আগেই যে দলটির সুবাদে শেষ চারে নাম লেখানোটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল, সোমবার সেই হিমালয় কন্যাদেরই হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলো বঙ্গকন্যারা। সাফ অ-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে এদিন আবার জয়ের হাসি হাসল লাল-সবুজের বাংলাদেশ। ভুটানের থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘বি গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা ৩-০ গোলে হারিয়ে দেয় নেপালকে। খেলার প্রথমার্ধে বিজয়ী দল এগিয়েছিল ১-০ গোলে। বাংলাদেশ দল আগামী ১৬ আগস্ট খেলবে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচে। প্রতিপক্ষ স্বাগতিক ভুটান। সোমবার তারা একই মাঠে ভারতের কাছে (গ্রুপ ‘এ’) ০-১ গোলে হেরে গিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়। গ্রুপসেরা এবং গত আসরের রানার্সআপ ভারত প্রথম সেমিতে মোকাবেলা করবে নেপালকে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত গত আসরে এই নেপালকেই ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বাংলার বাঘিনীরা। তবে এবারও তারা জিতলেই এই জয়টা কিন্তু মোটেও সহজেই আসেনি। বরং বিস্তর ঘাম ঝরাতে হয়েছে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিলেও (১৪-০) এই ম্যাচে তেমনটা হয়নি। বিশেষ করে প্রথমার্ধে নেপাল তো প্রবল প্রতিরোধই গড়ে তোলে। মাঝে মাঝে করে পাল্টা আক্রমণ। ফলে চিন্তার ভাঁজ পড়ে কোচ ছোটনের কপালে। তার সেই চিন্তা দূর হয় প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে (৪৫+১ মিনিটে)। গোল করে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। কর্নার পায় বাংলাদেশ। বক্সের ভেতরে বল পায় মনিকা চাকমা। বা দিকে থেকে মনিকা চাকমার উড়ন্ত ক্রস পেয়ে জটলার মধ্যে বল পেয়ে তা হেড করে জালে পাঠায় ফরোয়ার্ড তহুরা খাতুন (১-০)। টুর্নামেন্টে এটা তার তৃতীয় গোল। গত সাফে এই নেপালের বিপক্ষেই হ্যাটট্রিক করেছিল সে। অবশ্য এর আগেই তহুরা একটি গোল করেছিল, ৩৬ মিনিটে। সতীর্থের ক্রসে তার হেড জালে জড়ালে গোলের আনন্দে মেতে ওঠে বাংলাদেশ শিবির। তবে রেফারি অফসাইডের বাঁশি বাজালে হতাশা নেমে আসে। প্রথমার্ধে বল নিয়ন্ত্রণ ও আক্রমণে এগিয়ে ছিল লাল-সবুজরাই। গোলমুখে শট (৯-১), টার্গেটে শট (৫-০), কর্নার কিকে (১-০) ... প্রতিটিতেই এগিয়ে ছিল তারা। তারা ফাউলে করাতে অবশ্য এগিয়েছিল প্রতিপক্ষই (১০-১)। ৪৩ মিনিটে অবশ্য এগিয়ে যেতে পারত নেপালই। একটি ফাউল থেকে বাংলাদেশের ডি-বক্সের সামনে ফ্রি কিক পায় তারা। নেপালের এক ফরোয়ার্ডের নেয়া উঁচু শট বাংলাদেশের ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। সেই বল বিপদমুক্ত করে দলকে গোল হজমের হাত থেকে রক্ষা করে ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন। ৫১ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বাংলার বাঘিনীরা। ডান প্রান্ত দিয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে পড়ে এক সতীর্থ গড়ানো ক্রস করে। বক্সের ভেতরে ঠিক মাঝখানে বল চলে যায় অধিনায়ক-মিডফিল্ডার মারিয়া মান্দার পায়ে। দেরি না করে সেই বল মারিয়া বা পায়ের উঁচু শটে পাঠায় নেপালের জালে। সেই বল ফেরানোর কোন উপায় জানা ছিল না নেপালী গোলরক্ষকের (২-০)। ৬৭ মিনিটে বক্সের ঠিক বাইরে ব্যাকপাসের বল পেয়ে সেটা গোলরক্ষককে পাস দিতে গিয়ে তা করতে ব্যর্থ হয় নেপালের এক ডিফেন্ডার। ততক্ষণে বিপদ টের পেয়ে এগিয়ে এসেছে নেপালী গোলরক্ষক। কিন্তু বলের পেছনে শুরু থেকে আঠার মতো লেগে থাকা ফরোয়ার্ড সাজেদা খাতুন সেই সুযোগ কাজে লাগাতে তৎপর হয়। চলতি বলেই বা পায়ের পুশ, আর তাতেই ধীরে ধীরে বল গড়িয়ে আশ্রয় নেয় জালে (৩-০)। সাফল্যের ধাপ হচ্ছে চারটি। প্রথমটি ধাপটি পেরুনো গেছে বেশ ভালমতোই। বাকি ছিল আরও তিনটি ধাপ। সেই তিন ধাপের একটি মোটামুটি কষ্ট করেই পেরুনো গেছে। এবার বাকি আছে দুটি ধাপ। তার প্রথমটি ১৬ আগস্ট, সেমিতে। পারবে কি বাংলার বাঘিনীরা? না পারার কারণ কারণ আছে কি? কেননা তারাই তো এই আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন! বাংলাদেশ দল ॥ মাহমুদা আক্তার, রুপনা চাকমা, রুপা আক্তার, আঁখি খাতুন, আনাই মগিনি, নাজমা, নিলুফা ইয়াসমিন নীলা, ইলামনি, শাহেদা আক্তার রিপা, আনুচিং মগিনি, রেহানা আক্তার, মারিয়া মান্দা, মনিকা চাকমা, লাবনী আক্তার, তহুরা খাতুন, মুন্নী আক্তার, শামসুন্নাহার, সোহাগী কিসকু, ঋতুপর্ণা চাকমা, সাজেদা খাতুন, শামসুন্নাহার জুনিয়র, রোজিনা আক্তার, নওসুন জাহান।
×