ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

নিহত ২ শিক্ষার্থীর পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে দেবে জাবালে নূর

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ১৩ আগস্ট ২০১৮

 নিহত ২ শিক্ষার্থীর পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে দেবে জাবালে নূর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় দুই পরিবারকে জাবালে নূর পরিবহন ৫ লাখ টাকা করে দেবে। রবিবার বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) থেকে হাইকোর্টকে বিষয়টি জানানো হয়। বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মোঃ খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে বিআরটিএয়ের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন উপস্থাপন করে এ কথা জানানো হয়। পরে এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৭ অক্টোবর দিন ঠিক করেছেন আদালত। আদালতে জাবালে নূরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী পঙ্কজ কুমার কুন্ডু। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। অন্যদিকে আদালতের আদেশ অনুযায়ী রাজধানীর শাহজাহানপুরে ওয়াসার পাইপে পড়ে নিহত শিশু জিহাদের পরিবারকে ২০ লাখ টাকার ‘চেক ও পে-অর্ডার’ দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রবিবার এই তথ্য জানিয়েছেন এ সংক্রান্ত রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম ও জিহাদের বাবা নাসির উদ্দিন। রিটকারী আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘বিআরটিএয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাবালে নূর দুই পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে দেবে। এ জন্য তারা সময় চেয়েছিল, কিন্তু আদালত সময় দেয়নি। এদিকে চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স কোন যোগ্যতার ভিত্তি দেয়া হয় এবং সড়কে চলাচলকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিআরটিএয়ের নেয়া পদক্ষেপের প্রতিবেদন নিয়ে শুনানির জন্য ৭ অক্টোবর দিন ঠিক করেছেন। গত ৩০ জুলাই শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একদল শিক্ষার্থীর ওপর উঠে যায় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস। এতে দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। আহত হন আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। প্রতিবাদে তখন বেশ কিছু গাড়ি ভাংচুর করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল। পরে শুনানি নিয়ে আদালত দুই কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে রুল জারি করেন। ক্ষতিপূরণের ২০ লাখ টাকা পেলেন জিহাদের বাবা ॥ আদালতের আদেশ অনুযায়ী রাজধানীর শাহজাহানপুরে ওয়াসার পাইপে পড়ে নিহত শিশু জিহাদের পরিবারকে ২০ লাখ টাকার ‘চেক ও পে-অর্ডার’ দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রবিবার এই তথ্য জানিয়েছেন এ সংক্রান্ত রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম ও জিহাদের বাবা নাসির উদ্দিন। ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস ১০ লাখ টাকার পে-অর্ডার এবং রেলওয়ে ১০ লাখ টাকার চেক দিয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু ১৪ আগস্ট আদালতে মামলার বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য তারিখ ধার্য রয়েছে। এর মধ্যে আমি হলফনামা না পাওয়া পর্যন্ত বিষয়টি পরিষ্কার করতে পারব না।’ তবে জিহাদের বাবা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমি ও আমার স্ত্রী খাদিজার নামে উত্তরা ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় যৌথ এ্যাকাউন্ট খুলেছি। ওই এ্যাকাউন্টে গত ৬ তারিখ আমাকে চেক দিয়েছে তারা। এরপর গত বৃহস্পতিবার ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় চেক জমা দিয়েছি। আগামীকাল সোমবার ব্যাংকে যাব টাকা জমা হয়েছে কি-না দেখব।’ উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিকেলের দিকে বাসার কাছে শাজাহানপুর রেলওয়ে মাঠের পাম্পের পাইপে পড়ে যায় জিহাদ। প্রায় ২৩ ঘণ্টা পর ২৭ ডিসেম্বর বিকেল ৩টার দিকে শিশু জিহাদকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর ২৮ ডিসেম্বর জিহাদের পরিবারের জন্য ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে ‘চিল্ড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’র পক্ষে সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম হাইকোর্টে রিট করেন। পরে ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শিশু জিহাদের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মোঃ ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ। রুলের শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের রায়ে শিশু জিহাদের পরিবারকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে ১০ লাখ এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষকে ১০ লাখ টাকা (মোট ২০ লাখ টাকা) ৯০ দিনের মধ্যে তার বাবা-মার কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তবে এর বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপীল (আপীলের অনুমতি) গত ৫ আগস্ট খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। ফলে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
×