ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডের সামনের রাস্তা ফের দখলে চলে যাচ্ছে

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ১১ আগস্ট ২০১৮

   তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডের সামনের রাস্তা ফের  দখলে চলে যাচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডের সামনের রাস্তা ফের দখলে চলে যাচ্ছে। সড়কের অলিগলিতে দিন কিংবা রাতে জড়ো করা হচ্ছে বাস-ট্রাকের সারি। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে পথচারীরা। শুধু তাই নয়, ফুটপাতে ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকার রাস্তা পার্কিং মুক্ত ঘোষণা করেছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র প্রয়াত আনিসুল হক। কিন্তু তিনি মারা যাওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে ফের দখলে যাচ্ছে ট্রাক স্ট্যান্ডের রাস্তা। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন বলছে, বার বার বৈঠকে বাস-ট্রাক মালিকরা আশ্বাস দিলেও বাস্তবে তার বিপরীত কাজ করছে। বাস-ট্রাক মালিক কর্তৃপক্ষ বলছে, রাস্তা দখল করা ছাড়া পার্কিংয়ের বিকল্প নেই। পুলিশ বলছে, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে রাস্তা দখল করে পার্কিং করা হচ্ছে। তাদের উচ্ছেদ করা কঠিন হয়ে পড়বে। সরেজমিনে দেখা যায়, তেজগাঁও সাতরাস্তা থেকে তেজগাঁও রেললাইনের দিকে একটু যেতেই উত্তর ও দক্ষিণ পাশের রাস্তা পিকআপ ভ্যানের দখলে। বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি ও ড্রাইভার্স ইউনিয়ন অফিস থেকে রেললাইন পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে সারি সারি ট্রাক রাখা। এতে যানজট তৈরি হয়েছে। তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকার ফনিক্স রোডের দুই পাশ ট্রাক ও প্রাইভেটকারের দখলে। ফলে বিপাকে পড়ছে এসব রাস্তা দিয়ে যানবাহনে চলাচলকারী পথচারী। রাস্তায় অবৈধ এ পার্কিংয়ের কারণে ওই এলাকায় চুরি ও ছিনতাই বেড়েছে বলে জানান পথচারী ও পরিবহন শ্রমিকরা। স্থানীয় কয়েকজন দোকানদার জানান, আনিসুল হক মারা যাওয়ার একদিন পর থেকেই এই রোড বাস-ট্রাক চালকদের দখলে চলে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে বলার কেউ নেই। এই রোড যখন ফাঁকা ছিল, তখন খুব সহজেই গুলশানে যাওয়া যেত। এখন এই বাস-ট্রাকগুলোর কারণে রাস্তার দুই প্রান্তে অস্বাভাবিক জ্যাম লেগে থাকে। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এক লাইন-দুই লাইন করে অবৈধভাবে রাস্তা দখল করে রাখছে বাস-ট্রাক। ফলে এলাকায় চুরি-ছিনতাইয়ের উৎপাত বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে মাদক ও দেহ ব্যবসায়ীদের তৎপরতা। প্রতিনিয়ত এসব এলাকার ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, এ রুটে পার্কিংয়ের অভিযোগ আমরা প্রায়ই পেয়ে থাকি। এরপরে আমরা উচ্ছেদ করে ফেলি। বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠকের সময় তারা বলেছে, সাময়িক বিরতির জন্য তারা পার্কিং করে থাকে। আমরা আবারও পুলিশের ট্রাফিক বিভাগকে বিষয়টি জানাব। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন বলেন, সাবেক মেয়র মহোদয়ের সম্মানার্থে এ স্থানে ট্রাক কিংবা কাভার্ড ভ্যান না রাখার জন্য অঙ্গীকার করেছেন ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি। এ নিয়ে মালিক সমিতি ও ইউনিয়নের সঙ্গে কথা হয়েছে। তবুও যদি কেউ রাখে আমরা বললে তা সরিয়ে ফেলে। তেজগাঁওয়ের রাস্তায় ট্রাক-কাভার্ডভ্যান রাখায় কোনও ছাড় দেয়া হবে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়নের সভাপতি তালুকদার মো. মনির বলেন, মাল লোড-আনলোড করতে সময় লাগে। তখন ট্রাক কিছু সময়ের জন্য থাকতে পারে। রাতে যেহেতু শহরে যান চলাচল কম থাকে এবং ট্রাক চলাচল করতে পারে, তখন কিছু ট্রাক-ভ্যান থাকতে পারে। তবে মেয়র সাহেবের সম্মানে তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডের সামনের রাস্তা কখনও আগের রূপে যাবে না।
×