ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এনামুল হক

সুস্থতার জন্য ৭টি খাবার

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ১০ আগস্ট ২০১৮

সুস্থতার জন্য ৭টি খাবার

প্রদাহ বা জ্বালা-যন্ত্রণা হলো রোগ-ব্যাধি মোকাবেলায় আমাদের শরীরের নিজস্ব স্বাস্থ্যসম্মত জবাব। কিন্তু সেই প্রদাহ যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তখন তা ক্রনিক আকার ধারণ করে এবং তা থেকে অটো ইমিউন রোগ থেকে শুরু করে ক্যান্সার পর্যন্ত নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। অতিরিক্ত চিনি ও সংপৃক্ত চর্বিযুক্ত খাবার প্রদাহের কারণ হিসেবে ধরা হয় এবং সেজন্যই যাদের প্রদাহজনিত সমস্যা ও অটো ইমিউন বৈকল্য আছে তাদের কম চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। আপনি কি খাচ্ছেন না তা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি কি খাচ্ছেন সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানী ও পুষ্টিবিদদের ধারণা প্রদাহ কমাতে সহায়ক এমন যে কয়টি খাবার আছে তার মধ্যে ৭টি খাবার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাকেরেল মাছ এই মাছ ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের মানুষের প্রধান খাদ্য। ম্যাকেরেল মাছটা বেশ তৈলাক্ত। তবে এর এই অতিরিক্ত চর্বিই হৃদরোগ ও আলঝেইমার রোগের মতো অতি প্রদাহসম্পন্ন রোগ-ব্যাধি মোকাবেলায় সাহায্য করে। ম্যাকরেল ভিটামিন বি ১২ ও ভিটামিন ডি’এর উৎস। বলাবাহুল্য, ভিটামিন ডি খাদ্যে প্রাকৃতিক উপায়ে পাওয়া কঠিন। ভিটামিন ডি হাড় শক্ত রাখতে, ইমিউন ব্যবস্থার কাজকর্ম বজায় রাখতে এবং ক্যালসিয়াম শুষে নিতে শরীরকে সাহায্য করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই মাছ নানাভাবেই খাওয়া যায়। তবে এর রোস্ট করে শাকসবজি, অলিভ অয়েল ও লেবু মিশিয়ে খেলে আলদা ব্যঞ্জনা পাওয়া যায়। পালংশাক পালংশাক খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভাল। এই সবজির পুষ্টিকর উপাদানগুলো পুরোপুরি কাজে লাগাতে হলে এ্যাডাকাডোর মতো অতি চর্বিযুক্ত খাবারের সঙ্গে সালাদ করে মিশিয়ে খাওয়া যায়। পালংশাক অতি সমৃদ্ধ খাবার। এটি ভিটামিন ‘ই’র ভাল উৎস। এই ভিটামিন সাইটোকাইন নামক প্রদাহ সৃষ্টিকারী মলিকুলের হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে। অন্যান্য সবুজ পাতাবহুল সবজির মতো এর ঘন সবুজ রংটাই বলে দেয় পালংশাক কতখানি পুষ্টিসমৃদ্ধ। নাশপাতি আখনোট ও নরম পনিরের সঙ্গে নাশপাতির টুকরো মিশিয়ে সহজ সালাদ করে খাওয়া যেতে পারে। নাশপাতির মতো অতি আঁশ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ডায়াবেটিস ও আর্থরাইটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। আঁশ সমৃদ্ধ খাবার শরীর সুস্থ মাইক্রোব জমে উঠতে সাহায্য করে। এগুলো খেলে পেট ভরে যাওয়ার এবং ক্ষুধা মিটে যাওয়ার ভাব আসে। ফলে যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন তাদের জন্য এই খাবার বেশ উপকারী। বেলমরিচ বেলমরিচ টুকরো টুকরো করে কেটে হামামের সঙ্গে মিশিয়ে কিংবা সামান্য রেড-ওয়াইন ভিনেগার, লবণ ও মরিচের মিশেল দিয়ে কিংবা আরও অন্যান্য ভাবেও খাওয়া যায়। বেলমরিচের মধ্যে বিশেষভাবে যেগুলো উজ্জ্বল লাল রঙের সেগুলো এন্টি অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ এবং এতে শর্করার মাত্রা কম। মসলাদার মরিচের অনুরূপ মিষ্টি বেলমরিচে আছে রাসায়নিক যৌগ ক্যাপসিকাম। এটা প্রদাহ এমনকি ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। বাজরা বাজরা শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য একটা উপকারী খাবার। বাজরা খেলে রক্তে সি-রিএ্যাকটিভ প্রোটিন নামে প্রদাহ চিহ্নিতকারী মাত্রাটি কমিয়ে দেয়। বাজরা গ্লুটেনযুক্ত এবং যাদের সেলিয়াক রোগ আছে তাদের জন্য ভাল। সোবা নুডলস তৈরিতে বাজরা ব্যবহার করা হয়। বাজরা ভাতের বদলেও রান্না করে খাওয়া যায়। ব্ল্যাক টি ব্ল্যাক টি বা কালো চায়ের কথা লোকে বেশি একটা বলে নাÑ গ্রীন টির দিকেই সবার যত দৃষ্টি। অথচ গ্রীন টির মতো একই উদ্ভিদ থেকে উদ্ভূত কালো চায়েরও উপকারিতা আছে। ব্ল্যাক টি ধমনীগুলোকে উন্মুক্ত থাকতে সাহায্য করে। এতে যেসব এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে তা দেহ কোষগুলোকে ক্ষতিসাধন হওয়া থেকে বাঁচায়। এক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ব্ল্যাক টি খেলে মেয়েদের ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুলাংশে কমে যায়। ব্ল্যাক টি দিয়ে এক কাপ চা বানিয়ে নিন। দুধ বা মধু বা দুটোই এর সঙ্গে মেশাতে পারেন। এটা গরম বা ঠা-া দুই অবস্থাতেই খাওয়া যায়। তাজা লেবু ও ডালিমের রস মিশিয়ে খেলে চমৎকার এক পানীয় হিসাবে উপভোগ করা যায়। ডালিমের বিচি ডালিমের বিচি এন্টি অক্সিডেন্টের খুব ভাল উৎস যা কোলেস্টরেল ও রক্তচাপ দুটো কমাতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে ডালিমের বিচিতে কিডনি-ক্যালাগিন নামে একটা যৌগ উপাদান আছে যা মস্তিষ্কের প্রদাহকে টার্গেট করে। এতে মস্তিষ্ক ঘটিত দৌর্বল্য হ্রাস পেতে পারে। ডালিমের রস না করে বিচিশুদ্ধ চিবিয়ে খাওয়াই ভাল। সালাদের সঙ্গেও ডালিম মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। সূত্র : টাইম
×