ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সাফ অনুর্ধ-১৫ মহিলা ফুটবল

ভুটানে পৌঁছেই অনুশীলনে মারিয়ারা

প্রকাশিত: ০৭:১৪, ৭ আগস্ট ২০১৮

ভুটানে পৌঁছেই অনুশীলনে মারিয়ারা

রুমেল খান ॥ চ্যাম্পিয়ন দলের তকমা সেঁটে আছে গায়ে। আর তা নিয়েই সবার আগে ভুটানে গিয়ে পৌঁছল গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। শুধু তাই নয়, মনটাও আছে বেশ ফুরফুরে। কারণ ভুটানের নৈসর্গিক দৃশ্য দেখে মন খারাপ হতেই পারে না। আবহাওয়াও চমৎকার। ১৭ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। যেহেতু সবার আগে যাওয়া হয়েছে, কাজেই অনুশীলনটাও সবার আগে করা চাই। সেটাই করেছে তারা সোমবার, বিকেলের দিকে। সাফ অনুর্ধ-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে প্রথম দল হিসেবে ভুটান পৌঁছেছে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৫ নারী ফুটবল দল। ম্যাচ ভেন্যু চাংলিমিথান স্টেডিয়ামে হাল্কা অনুশীলন করে ঘাম ঝরিয়েছে তারা। আট মাস আগে নিজেদের মাঠেই এই আসরের প্রথম শিরোপাটা উঠেছিল তাদের হাতেই। টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ বাংলার বাঘিনীদের। তবে চ্যালেঞ্জ বলে সেটাকে চাপ হিসেবে নিতে রানাজ তারা। গত সাফ শেষ হতেই একটানা অনুশীলন নিয়ে ব্যস্ত ছিল তারা। এজন্যই তাদের কোন চাপ নেই। অমনোযাগী শিক্ষার্থী সারা বছর পড়াশোনা না করে শুধু পরীক্ষার আগের রাতে পড়ে পরীক্ষা দিলে তার পরীক্ষার ফল খারাপ হতে বাধ্য। বরং যে শিক্ষার্থী সারা বছর পড়াশোনা করেছে, তারই পরীক্ষার ফল ভাল হবে। কাজেই বেঙ্গল টাইগ্রেস দলের ফলও ভাল হওয়ার কথা। মাঝে হংকংয়ে একটি আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্ট খেলে সেটাতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রয়োজনীয় আত্মবিশ^াস নামের ফুয়েল সংগ্রহের কাজ আগেই সারা। সোমবার সকালে বিমানযোগে রওনা হয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই ভুটানের শিম্পু সিটিতে গিয়ে নিরাপদেই পৌঁছে বাংলাদেশ দল। বাফুফে জানিয়েছেÑ দলের সবাই সুস্থ এবং ইনজুরিমুক্ত আছে। আর চাঙ্গা আছে মানসিকভাবেও। এর কারণ সেখানকার চমৎকার প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং আবহাওয়া। এতদিন ঢাকায় মেয়েরা অনুশীলন করেছে টার্ফে। ঘাসের মাঠ বলতে হাতের কাছে ছিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। কিন্তু ছেলেদের সাফের প্রস্তুতিতে সংস্কার কাজ চলায় এই মাঠে আর অনুশীলনের সুযোগ হয়নি বঙ্গকন্যাদের। তবে সোমবার বিকেলে মেয়েদের সাফের মূল ভেন্যু ভুটানের চাংলিমিথান স্টেডিয়ামে অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছে ছোটন শিষ্যরা। দেশ ছাড়ার আগে ছোটন জানান মাঠ নিয়ে মোটেই ভাবছেন না তিনি। এর আগেও টার্ফে প্র্যাকটিস করে ঘাসের মাঠে খেলে ভাল ফল করে আসার অভিজ্ঞতা আছে মেয়েদের। কাজেই তাদের সাফল্য আসার সম্ভাবনাই বেশি। যদিও এখনই অতি আত্মবিশ্বাসী হতে নারাজ ছোটন। বরং প্রতিপক্ষদের সমীহই করছেন, ‘টুর্নামেন্টে সবাই ভাল দল। আমরাও পিছিয়ে নেই। আমরা চ্যাম্পিয়ন দল। নিজেদের সেই সম্মানটা রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করব। বাকিটা আল্লাহর হাতে। মেয়েরা তাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলে ভাল কিছুই হবে আশা করছি।’ দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার পাশাপাশি নিজে সেরা খেলোয়াড় হওয়ার লক্ষ্যে লড়বে অধিনায়ক মারিয়া মান্দা। তবে সবার আগে প্রথম ম্যাচকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে সে। ৯ আগস্ট বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। আর ১৩ আগস্ট নেপালের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে জিতলেই সেমিতে খেলাটা প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের। থিম্পুতে সুখস্মৃতি নিয়ে খেলতে যাচ্ছে মারিয়ারা। কিন্তু সেই সুখের স্মৃতি ধরে রাখতে পারবে তো ছোটনের শিষ্যরা? ভিন্ন কন্ডিশনের সঙ্গে কতটুকু মানিয়ে নিতে পারবে নিজেদের? তবে তাদের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়া কিছুই ভাবছে না তারা। বাংলাদেশ দল ॥ মাহমুদা আক্তার, রুপনা চাকমা, রুপা আক্তার, আঁখি খাতুন, আনাই মগিনি, নাজমা, নিলুফা ইয়াসমিন নীলা, ইলামনি, শাহেদা আক্তার রিপা, আনুচিং মগিনি, রেহানা আক্তার, মারিয়া মান্দা, মনিকা চাকমা, লাবণী আক্তার, তহুরা খাতুন, মুন্নী আক্তার, শামসুন্নাহার, সোহাগী কিসকু, ঋতুপর্ণা চাকমা, সাজেদা খাতুন, শামসুন্নাহার জুনিয়র, রোজিনা আক্তার, নওসুন জাহান।
×