ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আগামীকাল চট্টগ্রাম মহানগরী

আওয়ামী লীগের অবস্থান ভাল, পুনরুদ্ধার চায় বিএনপি

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৬ আগস্ট ২০১৮

 আওয়ামী লীগের অবস্থান ভাল, পুনরুদ্ধার চায় বিএনপি

হাসান নাসির/ইউনূস মিয়া/ জাহেদুল আনোয়ার চৌধুরী ॥ নির্বাচনকালীন সরকার যেমনই হোক, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সন্নিকটে। চলতি বছরে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে এ নির্বাচন। প্রস্তুতিতে এগিয়ে আছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলীয় সিদ্ধান্ত এখনও না হলেও মাঠপর্যায়ে অবস্থান সংহত করার চেষ্টায় বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। এছাড়া অন্যান্য দলও নির্বাচনমুখী। ভোট এসে গেছে, তাই ভোটের রাজনীতি। নেতারা এলাকায় যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। শহরে বসবাস করেন এমন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সপ্তাহে এমনকি যখন তখন ছুটছেন গ্রামে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন দল হওয়ায় এ দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যাও বেশি। রয়েছে তৃণমূল গোছানোর পাশাপাশি মনোনয়ন লাভে কেন্দ্রের মন পাওয়ার চেষ্টা। অপরদিকে, বিএনপিতে রয়েছে কিছুটা হতাশা। তারপরও মনোনয়ন পেতে আগ্রহী নেতারা থেমে নেই। চলছে জোর তৎপরতা। চট্টগ্রাম একটি জেলা হলেও এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর সাংগঠনিক জেলা তিন। জেলাগুলো হচ্ছে চট্টগ্রাম উত্তর, চট্টগ্রাম মহানগর ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ। এরমধ্যে উত্তর চট্টগ্রামে আসন সাতটি। সংসদ নির্বাচনে এসব আসনে কারা দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই) ॥ রাজধানী থেকে মহাসড়কে চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার মীরসরাই উপজেলা। এ আসনটি মোটামুটি ভিআইপি আসন হিসেবে বিবেচিত। এখানে একবার বিএনপি চেয়ারম্যান খালেদা জিয়াও প্রার্থী হয়েছিলেন। মীরসরাইয়ে বার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী। মীরসরাই উপজেলায় দেশের বৃহত্তম ইকনোমিক জোনের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন এই নেতা। চরাঞ্চলে প্রায় ৩০ হাজার একর জমিতে গড়ে উঠছে এই ইকনোমিক জোন, যা সম্প্রসারিত হবে ফেনীর সোনাগাজী পর্যন্ত। পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে এই ইকনোমিক জোনে কর্মসংস্থান হবে অন্তত ১০ লাখ মানুষের। প্রতিবারের মতো এবারও তিনিই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার সবচেয়ে জোরালো দাবিদার। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের একাংশ আশা করছেন, প্রবীণ এই নেতাই আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন লাভ করবেন। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ মনোনয়ন চাইলে অন্য কেউ কেন্দ্রের কাছে বিবেচিত হবেন না, এমনই ধারণা এলাকায়। তবে বয়স হয়েছে তার। মীরসরাইয়ে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের পর জনপ্রিয়তার দিক থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে যে নামটি সর্বাধিক আলোচিত তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ গিয়াস উদ্দিন। তিনি ছিলেন- মীরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। এলাকায় প্রো-পিপল হিসেবে গিয়াস উদ্দিনের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এছাড়া ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফপুত্র চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান রুহেল কয়েক বছর ধরে সাংগঠনিক কর্মকান্ডে রয়েছেন। কোন কারণে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ নির্বাচন করতে না পারলে রুহেল মনোনয়ন চাইতে পারেন। পিতার সুবাদে কেন্দ্রের আশীর্বাদ পেলে তিনিও জোর দাবিদার। এছাড়া বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের প্রধান সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়ার বাড়িও মীরসরাই উপজেলায়। সাম্যবাদী দল ১৪ দলীয় জোটের অন্তর্ভুক্ত থাকায় নির্বাচনে তার নামটি আলাদাভাবে আলোচিত হচ্ছে না। মীরসরাই আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর মনোনয়ন প্রশ্নে। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ এবং মোঃ গিয়াস উদ্দিনের সমর্থনে দুটি ধারা প্রবাহমান। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন এলাকায় জনপ্রিয় মোঃ গিয়াস উদ্দিন। পরে দলের প্রধান শেখ হাসিনার কথা অনুযায়ী তিনি সরে দাঁড়ান। এবারও তিনি নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন চাইবেন। তবে তার ঘনিষ্ঠসূত্রগুলো বলছে, প্রবীণ নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন মনোনয়ন পেলে আপত্তি নেই। কিন্তু কোন কারণে প্রার্থিতা বদল হলে তারা গিয়াস উদ্দিনকেই নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। অর্থাৎ মোশাররফের পরিবর্তে উত্তরাধিকার সূত্রে কাউকে দেখতে চান না। মীরসরাই আওয়ামী লীগে যেমন চাঙ্গাভাব, তার উল্টো চিত্র বিএনপিতে। এখানে মনোনয়ন লাভের জন্য পাল্টাপাল্টি বা দৌড়ঝাঁপ এখনও দৃশ্যমান নয়। এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এমএ জিন্নাহ। পরে তিনি এলডিপিতে যোগদান করে ধীরে ধীরে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। এরপর মনোনয়ন লাভে ব্যাপক প্রচারে আসেন আবাসন ব্যবসায়ী এমরান চৌধুরী এবং মেজর জেনারেল (অব) জেড এ খান। তারাও মনোনয়ন না পেয়ে হতাশায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। ২০০৯ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়ে ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী হয়েছিলেন ক্লিফটন গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী। তিনি পরাজিত হন আওয়ামী লীগের ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের কাছে। এবারও মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করবেন প্রফেসর কামাল, এমনই জানাচ্ছেন তার ঘনিষ্ঠরা। কিন্তু বয়স আশি পেরিয়েছে, শারীরিকভাবে আগের মতো সামর্থবান নন। এবারের নির্বাচনে বেশ আলোচনায় রয়েছেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ-সভাপতি ও বড়তাকিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ইউসুফ। এলাকায় অন্য কোন নেতার তৎপরতা খুব একটা লক্ষণীয় নয়। তবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের কিছু অনুসারী রয়েছেন। মনিরুল ইসলাম ইউসুফ জনকণ্ঠকে বলেন, দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া অনেক আগেই আমাকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হতে বলেছেন। সে হিসেবে আমি প্রস্তুতি নিচ্ছি। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গেই আছে। আগ্রহী এই প্রার্থী দাবি করেন, তিনিই দলের মনোনয়ন পাচ্ছেন। আর তা নিশ্চিত হয়ে অন্য কেউ নমিনেশন আশা করছেন না। চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) ॥ এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। ১৪ দলের মিত্র হিসেবে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে পুনরায় নির্বাচন করতে চান। ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, সাবেক এমপি রফিকুল আনোয়ারের ভাই ফখরুল আনোয়ার ও মেয়ে খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ড. মাহমুদ হাসানের পুত্র জেলা পরিষদ সদস্য আখতার উদ্দিন মাহমুদ পারভেজ এবং শিল্পপতি সাদাত আনোয়ার সাদী। বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, সহ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, সদস্য সাবেক বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী এবং ফাঁসির রায়ে দ-িত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সহধর্মিণী ফারহাত কাদের চৌধুরী। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের নির্বাচনে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের অন্তর্কোন্দল প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী পরিবার নামক দুটি বলয়ের বাইরেও একাধিক উপগ্রুপে বিভক্ত আওয়ামী রাজনীতি। অনেকটা যত নেতা তত গ্রুপে বিভক্তি। দলের কোন্দলসহ জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে তরিকত ফেডারেশন সভাপতি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করা অনেকটা নিশ্চিত বলে দাবি করছেন তার কর্মী-সমর্থকরা। আওয়ামী লীগে বিভক্তিই তরিকতের এই নেতার মনোনয়ন লাভের পথ সুগম করতে পারে, এমনই আভাস চাউর হয়েছে। চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) ॥ জাতীয় সংসদের এই আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের মাহফুজুর রহমান মিতা। তিনি দ্বীপবন্ধু খ্যাত মোস্তাফিজুর রহমানের পুত্র। আগামী নির্বাচনেও মিতা দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। স্থল থেকে বিচ্ছিন্ন সন্দ্বীপকে উন্নয়নের ধারায় নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতিতে এগিয়ে রয়েছেন তিনি। তবে দলে মনোনয়ন প্রত্যাশী আরও কয়েকজনের নামও আলোচিত। আওয়ামী লীগ থেকে আর যারা মনোনয়ন চাইবেন তারা হলেন সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান বিএ এবং বিএমএয়ের সাবেক নেতা ডাঃ জামাল উদ্দিন। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন লাভের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা কামাল পাশা। এছাড়া বিএনপি যুক্তরাজ্য শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল বাবুল এবং কাতার প্রবাসী ব্যবসায়ী নুরুল মোস্তফা খোকন ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন চাইবেন। এলাকায় তাদের পক্ষে গণসংযোগও রয়েছে। চট্টগ্রাম সংসদীয় আসন-৪ (সীতাকুন্ড) ॥ এই আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের দিদারুল আলম। তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এম মনজুর আলমের ভাইপো। দলের মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে তিনিই সবচেয়ে জোরালো দাবিদার। তবে দলের মধ্যে আরও বেশ ক’জন মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন। তৃণমূলে তাদের যোগাযোগও বেশ ভাল। বর্তমান এমপির বাইরে আর যারা মনোনয়ন পেতে চাইবেন তারা হলেন সাবেক এমপি এবিএম আবুল কাশেমের পুত্র বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম আল মামুন, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া, উপজেলা আ’লীগের সাবেক সভাপতি ও আলম লায়লা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা কামাল চৌধুরী। শেষ সময়ে এসে এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় এসেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এম মঞ্জুর আলমের নামও। কোন কারণে ভাইপো দিদারুল আলম যদি মনোনয়ন না পান তাহলে চাচা মঞ্জুর আলম নৌকা প্রতীক পেয়ে যেতে পারেন। বিএনপি থেকে রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব লায়ন আসলাম চৌধুরী। বর্তমানে তিনি কারাগারে। কারামুক্ত হলে বিএনপি থেকে তার প্রার্থিতা নিয়ে কোন সংশয় নেই বলে মনে করেন দলের কর্মী সমর্থকরা। দলে তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন নেই। কিন্তু যদি কোন কারণে তিনি নির্বাচন করতে না পারেন, সেক্ষেত্রে নতুন মুখের আবির্ভাব ঘটবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে আলোচিত সাবেক মন্ত্রী ও ডেপুটি স্পীকার এল কে সিদ্দিকীর ছোট ভাই সাবেক আইজিপি এওয়াইবি সিদ্দিকী। এর আগেও তিনি সীতাকুন্ড থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। সীতাকুন্ডে নেতৃত্বশূন্যতায় শেষ পর্যন্ত তার ভাগ্যেই জুটতে পারে বিএনপির মনোনয়ন। এদিকে, জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করবেন দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব দিদারুল আলম দিদার। তবে আগামী নির্বাচনে দলীয়, ১৪ দল নাকি মহাজোটগতভাবে হবে তার ওপরই নির্ভর করছে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হওয়া না হওয়া। চট্টগ্রাম সংসদীয় আসন- ৫ (হাটহাজারী) ॥ এ আসনের বর্তমান এমপি বন ও পরিবেশমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। হাটহাজারি থেকে এই নেতা এমপি হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতায়। এবারও তিনি প্রার্থী হবেন। তবে নিজ দল নাকি মহাজোট থেকে তা এখনও নিশ্চিত নয়। কারণ সবকিছু নির্ভর করছে আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করছে কিনা তার ওপর। বিএনপি অংশগ্রহণের ফলে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যদি মহাজোট গঠিত হয় তাহলে লাঙ্গল প্রতীকে তিনি জোটের প্রার্থী হিসেবে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে পারেন। আর যদি তা না হয় তাহলে আওয়ামী লীগ এককভাবে প্রার্থী দেবে। এক্ষেত্রে আলোচনায় রয়েছেন চট্টগাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম। এছাড়া আরও যারা প্রার্থী হতে চান তারা হলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউনুস গণি চৌধুরী ও সদস্য মন্জুরুল আলম মনজু। হাটহাজারী আসনে বিএনপির ভিত্তি বরাবরই শক্তিশালী ছিল। এখান থেকে বার বার নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম। তিনি প্রয়াত হওয়ায় সেখানে নতুন প্রার্থী আসা সুনিশ্চিত। সেক্ষেত্রে কে হবেন সেই নতুন মুখ তা নিয়ে আলোচনা রয়েছে। সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন কেন্দ্রের আশীর্বাদ পেতে পারে। কেননা, তিনি দলের একজন হেভিওয়েট নেতা। এছাড়াও আলোচনায় আছেন বিজিএমইএয়ের সাবেক সভাপতি এসএম ফজলুল হক ও ব্যারিস্টার সাকিলা ফারজানা। তাছাড়া ২০ দলীয় জোটের মনোনয়নে নির্বাচন করতে চান বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম বীর প্রতীক। সব মিলিয়ে এ আসনটিতে দলীয় মনোনয়ন নির্ভর করছে জোট-মহাজোটের সমীকরণের ওপর। চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) ॥ এ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। সংসদ সদস্য হিসেবে এলাকায় তিনি ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড চালিয়েছেন। আগামী নির্বাচনেও দল থেকে তার মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে আরও রয়েছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন। রাউজানে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত গোলাম আকবর খোন্দকারের নাম আলোচনায় রয়েছে। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় আরও আছেন মুক্তিযুদ্ধকালীন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরউল্লাহ। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুও নির্বাচন করতে পারেন। চট্টগ্রাম ৭ (রাঙ্গুনিয়া) ॥ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এই আসনের এমপি। এবারও তিনি আওয়ামী লীগের একমাত্র মনোনয়ন প্রত্যাশী। আওয়ামী লীগের মধ্যে আগ্রহী কেউ থাকলেও প্রার্থিতা বদল হবে, এমন আশা কেউ করছেন না। বিএনপি থেকে এ আসনে বরাবরই নির্বাচন করেছিলেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। যুদ্ধাপরাধের জন্য ফাঁসির দন্ড কার্যকর হওয়ার পর বিএনপিতে নতুন মুখের আবির্ভাব ঘটতে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে মনোনয়ন চাইবেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শওকত আলী নূর।
×