স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, আমাদের বর্তমান বিচারব্যবস্থা বেশকিছু সমস্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত, যা শনাক্ত করা দরকার। ভবিষ্যতে ওইসব সমস্যা সমাধানে প্রযুক্তি প্রধান ভূমিকা রাখবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। শনিবার সুপ্রীমকোর্ট অডিটরিয়ামে শিশু আদালতের মামলা ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল ড্যাশবোর্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সুপ্রীমকোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর চাইল্ড রাইটস (এসসিএসসিসিআর) ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সুপ্রীমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. জাকির হোসেন। এ ছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এ্যাডওয়ার্ড বেইজবাদের, সুপ্রীমকোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর চাইল্ড রাইটসের চেয়ারম্যান ও আপীল বিভাগের বিচারপতি মুহাম্মাদ ইমান আলী প্রমুখ।
সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, দেশের সব শিশু আদালত মিলিয়ে প্রায় ২১ হাজার ৫০৩টি মামলা নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। অতিরিক্ত জেলা জজ ও দায়রা জজরা পদাধিকার বলে শিশু আদালতে বিচারক হিসেবে কর্মসম্পাদন করেন এবং নিজের দায়িত্বের বাইরেও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। তবে মনে রাখবেন যে, বিচারের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত সময়ক্ষেপণ শিশু আদালতের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। কেন না, শিশুরা সামাজিক, মানবিক ও ধারণাগতভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় আলাদা হয়। প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি বিশ্বাস করি ডিজিটাল ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে শিশু আদালতের বিচারকরা আরও কর্মক্ষম হবেন। শিশু আদালতের মামলা নিষ্পত্তিতে এটি একটি বিশেষ যন্ত্র হিসেবে কাজ করবে। এর ফলে বিভিন্ন শিশু আদালতে অপেক্ষমাণ মামলাগুলোর তথ্য পাওয়া যাবে। শিশু আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, শিশু আদালতের মামলা নিষ্পত্তিতে অযাচিত সময়ক্ষেপণ এবং পুরনো মামলা নিষ্পত্তিতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণে শিশু অপরাধীদের বিচার সম্পর্কে গভীরভাবে বুঝতে হবে। শিশু আদালতের বিচার অনানুষ্ঠানিকভাবে করতে হবে। সাধারণ আদালতগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, শিশু আদালত সর্বাধিক স্বাধীন ও আইনী ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে অগ্রগামী। একটি শিশুর বিচার করতে গেলে সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক বিষয়গুলোকে অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হয়। ফলে এ ধরনের মানসিকতা শিশু আদালতের মামলা সময়মতো নিষ্পত্তি করতে সহযোগিতা করবে। সুপ্রীমকোর্ট স্পেশাল কমিটি অন চিলড্রেন রাইটসের প্রশংসা করে তিনি বলেন, বিচারিক পদ্ধতির মধ্য দিয়ে শিশু অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সুপ্রীমকোর্ট স্পেশাল কমিটি অন চিলড্রেন রাইটসের কার্যক্রম বিশদভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ২০১৩ সালের শিশু আইন গুরুত্বের সঙ্গে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই স্পেশাল কমিটি সন্তুষ্টির সঙ্গে ইউনিসেফ-এর সঙ্গে কাজ করে চলেছে।