ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দাবদাহে নাকাল ইউরোপ ॥ তিনজনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৬:১০, ৫ আগস্ট ২০১৮

দাবদাহে নাকাল ইউরোপ ॥ তিনজনের মৃত্যু

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ গত কয়েক বছরের মধ্যে প্রচ- দাবদাহে নাকাল ইউরোপ ও এশিয়ার কয়েকটি দেশ। শনিবার কোন কোন দেশের তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রীর রেকর্ড ছোঁয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত স্পেনে গরমে মারা গেছে তিনজন। ফরাসী সরকার চারটি পরমাণু চুল্লি বন্ধ করে দিয়েছে। অস্ট্রিয়া, ইতালি, ব্রিটেন, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, জার্মানি এবং এশিয়ার চীন ও কোরিয়ায় প্রচ- দাবদাহ বইছে। এসব দেশের সরকার গরম থেকে বাঁচতে লোকজনকে ঘরের মধ্যে এবং যে কোনও আউটডোর অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, ক্রমশ আমরা ‘হিট এজ’-(তাপযুগ)- এর দিকে এগিয়ে চলেছি। গরমে এসব দেশের রাস্তার পিচ গলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। রাস্তার টহল কুকুরের পায়ে মোজা পড়িয়ে রাস্তায় নামায় অনেক দেশের পুলিশ। খবর এএফপি ও টেলিগ্রাফ অনলাইনের। শনিবার পর্তুগালের তাপমাত্রার পারদ ৪৭ ডিগ্রীতে ওঠে। দেশটির দমকল বাহিনী বিমান ও হেলিকপ্টারের সাহায্যে পর্যটন নগরী মোনচিকের দাবানল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। পাশাপাশি ১২১টি গাড়ি আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। স্থানীয় লোকজনকে নিরপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। গতবছর এ ধরনের দাবানলে ১১৪ জন মারা যায়। বৃহস্পতিবার দেশটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৫ দশমিক সাত ডিগ্রী সেলসিয়াস হয়। ইউরোপে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ৪৮ ডিগ্রী হয়েছিল গ্রীসে ১৯৭৭ সালে। শনিবার স্পেনের তাপমাত্র ছিল ৪৫ ডিগ্রী। এতে চলতি সপ্তাহে তিনজন মারা যায়। অস্ট্রিয়ায় টহল কুকুরের পায়ে জুতা পরাতে হয়েছে। শনিবার সেখানকার তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রী ছিল। ফ্রান্সে তাপ প্রবাহের জন্য পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের চারটি চুল্লি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইতালিতেও তাপপ্রবাহ বইছে। সুইডেনে ২৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গরম অনুভূত হয়েছে শনিবার। সেখানকার তাপমাত্রা গ্রীষ্মকালে ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রীর আশপাশে থাকে। শনিবার সকালে গরমের কারণে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ৬শ’ ৭০ কিলোমিটার যানজট লাগে। ইউরোপের পাশাপাশি এশিয়ার চীন, কোরিয়া ও ভারতেও প্রচ- তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চীনের অধিকাংশ অঞ্চলে তাপপ্রবাহ বিরাজ করায় দেশটির আবহাওয়া বিভাগ শনিবার আবারও ইয়েলো এলার্ট জারি করেছে। জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র জানায়, শনিবার ইয়াংজি নদীর দক্ষিণ অঞ্চলগুলোতে জিয়াংঝুয়াই প্লেইন ও সিচুয়ান বেসিন, জিলিন, লিয়াওনিং, ইনার মঙ্গোলিয়া ও জিনজিয়াংয়ে তাপমাত্রা ৩৫-৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে। আবহাওয়া কেন্দ্র তাপপ্রবাহ কবলিত এলাকাগুলোর জনসাধারণকে হিট স্ট্রোক ও আগুন থেকে সাবধানে থাকতে বলেছে। প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বেরনোরও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিগত দেড় শ’ বছরে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা প্রায় ১ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড বেড়েছে। বিশ্বের সর্বত্রই বেড়েছে গরমের তীব্রতা। আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের মতে, ক্রমশ ‘হিট এজ’-এর দিকে এগিয়ে চলেছি আমরা। ‘হিট এজ’ কী ? আজ থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ বছর আগে হঠাৎ করেই পৃথিবী পর্যায়ক্রমিকভাবে শৈত্যযুগ ও অন্তর্বর্তীকালীন উষ্ণ যুগের সম্মুখীন হয়েছে। পৃথিবীর মহাদেশগুলোর পারস্পরিক অবস্থান, সূর্যের তুলনায় পৃথিবীর কক্ষপথ ও পৃথিবীর অক্ষরেখার দিক পরিবর্তন, ইত্যাদি বিভিন্ন কারণ এর জন্য দায়ী।
×