মনীষী বলেছেন, ‘যে মানুষ হাসতে জানে না সে খুন করতে পারে।’ আমাদের সদাহাসিমুখ নৌ-পরিবহনমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান হাসতে হাসতে একটা সিরিয়াস কথা বলে বেজায় বিপদে পড়েছেন। তিনি একা বিপদে পড়েননি, রাজধানী ঢাকার গোটা পরিবহন ব্যবস্থাই ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। আনাড়ি এবং অবৈধ বাস চালকের বেপরোয়া গতির বাসের চাকায় দুজন শিক্ষার্থী নিহত হওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা রাজপথে নেমে অবরোধ সৃষ্টি করেছে। তারা বেশ কিছু যানবাহন ভাংচুরও করেছে এবং এই ভাংচুরের ঘটনা ঠিক হয়েছে না হয়নি সে বিতর্কে না জড়ালেও ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ী করা যাবে কী? কারণ তাদের সতীর্থদের বাসের চাকায় পিষ্ট করে হত্যা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে যে কারও আবেগাপ্লুত হবার কথা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সড়কের বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধে ত্বরিত আইন করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং আশা করা যায় পরবর্তী কেবিনেট বৈঠকে আইনের খসড়া উত্থাপিত হবে।
কয়েকদিন ধরে রাজপথে কোন বাস নেই। কেবল গতকাল দুটি ডাবল ডেকার চলতে দেখা গেছে। মানুষের ভোগান্তি চরমে। যাদের গাড়ি নেই, বাইক নেই তাদের কাজে যাতায়াত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মানুষ মাইলের পর মাইল হেঁটে অফিস-আদালত তথা কর্মক্ষেত্রে যাচ্ছে। দেখা গেল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তাদের এ দাবি নতুন কিছু নয়। তার যুগ্ম রিজভী তো পারে না, নইলে এখনই সরকারকে টেনে-হিঁচড়ে নামিয়ে দেয়। ভদ্রলোক যখন কথা বলেন তখন মনে হয় কোন অভদ্র অসভ্য লোক কথা বলছেন, বেশির ভাগই মিথ্যা, ভাষা অভদ্র, অঙ্গভঙ্গি অশ্লীল। যারা রাজনৈতিক শিষ্টাচার জানে না বা মানে না তাদের রাজনীতিতে আসা উচিত নয়, কোন পার্টি তাদের গ্রহণ করা মানে দলটাকে অশ্লীলতার পথে ঠেলে দেয়া, যা আমাদের উন্নয়নশীল বাংলাদেশে মোটেই কাম্য নয়।
যে বাস দুটি শিক্ষার্থীদের হত্যা করল শুনেছি সেই বাসের চালক হেলপার গ্রেফতার হয়েছে। তাদের অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এটাই তাদের প্রাপ্য। নইলে পরিবহন সেক্টরের নৈরাজ্য আরও বেড়ে যাবে।
তবে গত কয়েকদিন ধরে ছাত্ররা যেভাবে রাজপথ অবরোধ করে জনদুর্ভোগ বাড়িয়ে তুলেছে তাও কতখানি যৌক্তিক তা ছাত্রদের ভেবে দেখার অনুরোধ করছি। কয়েকদিন আগে টিভিতে দেখলাম ঊনসত্তরের ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক তোফায়েল আহমেদকে অবরোধ রচনাকারী ছাত্ররা গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছে। তোফায়েল আহমেদকে আমরা যারা চিনি, পাকিস্তানী মিলিটারি জান্তার বিরুদ্ধে এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তি ৬+১১ দফা দাবিতে তার যৌবনের সেই সাহস, সেই নেতৃত্বের দক্ষতা দেখেছি, তারা কিছুটা হলেও আহত হয়েছি। কারণ, তোফায়েল আহমেদ গাড়ি চালান না, তিনি পরিবহন শ্রমিক নেতাও নন। আমাদের ছাত্র-ছাত্রী ছোট্টমণিরা অন্তত এসব বিষয় ভেবে দেখবে। আরেকটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ছাত্র-ছাত্রীদের এই ইনোসেন্ট প্রতিবাদ বা আন্দোলনে পেছন থেকে ফুঁ দেবার লোকও কম নয়। আশা করব ছাত্র-ছাত্রীরা বিভ্রান্ত হবে না। তাদের আন্দোলন এবং আন্দোলনের নেতৃত্ব যাতে বেহাত না হয় সেদিকে সদাসজাগ থাকতে হবে। কয়েকদিন আগে কোটা আন্দোলন হয়ে গেল। সে আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা ভিসির বাড়ি পর্যন্ত আক্রমণ, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করে। ভিসি প্রফেসর ড. আখতারুজ্জামান স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কোনরকমে এখানে-ওখানে লুকিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন। প্রশ্নটি এখানেই। হামলাকারীরা কোন্ ডিপার্টমেন্টের ছাত্র সেটি আজও পরিষ্কার নয়। তবে একটি টেলিফোনিক কনভার্সেশন শুনেছি, যাতে দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত এবং লন্ডনে পলাতক মিলিটারি জিয়া ও মাদার অব হাওয়া ভবনের উত্তরাধিকার তারেক রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিএনপিপন্থী শিক্ষক নেতাকে নির্দেশ দেন কোটাবিরোধী আন্দোলনে ফুঁ দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে। ইঙ্গিতটা ছিল আন্দোলনকে সহিংস করা দরকার। কোটা আন্দোলনে যে তখন একটি গোষ্ঠী পেছন থেকে ফুঁ দিয়েছিল তাতে করে আন্দোলন জ্বলে ওঠার আগেই স্তিমিত হয়ে যায়। বস্তুত হঠকারিতায় প্রাপ্তি নেই। আছে ব্যর্থতা, আছে গ্লানি। কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়েও কথা আছে। আন্দোলনকারীরা কোটা সর্বসার্কুল্যে ১০%-এ নামিয়ে আনতেও পরামর্শ দিয়েছিলেন। তার অর্থ হলো প্রতিবন্ধী কোটা, পোষ্য কোটা, আদিবাসী কোটা, নারী কোটা, পশ্চাৎপদ কোটা এসব ক্ষেত্রে হাত দিতে গেলেও দেশব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় বইবে। বস্তুত কোটা সংস্কারকারীদের টার্গেট ছিল মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটা, অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০% বাতিল করা গেলে সব খাত অক্ষত রাখা যাবে। তবে আন্দোলনকারীদের টার্গেট অক্ষত রাখাও নয়, টার্গেট মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করা গেলে মুক্তিযুদ্ধকে পরাজিত করা যাবে, একাত্তরের পরাজয়ের গ্লানি কিছুটা হলেও প্রশমন করা যাবে। আন্দোলনকারীরা অট্টহাসি হাসতে পারবে।
তবে একটি ব্যাপার খুবই ইন্টারেস্টিং। কিছু মিডিয়া বোথ প্রিন্ট এ্যান্ড ইলেক্ট্রোনিক কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী’ বলে চিহ্নিত করেছে, তাদের প্রতি সিমপ্যাথি ড্র করার চেষ্টা করেছে। পক্ষান্তরে কথিত আক্রমণকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে ‘ছাত্রলীগ’ বলে। এটি কি সাংবাদিকতার ইথিকস-এ পড়ে? না, পড়ে না। একপক্ষকে যদি বলা হয় ‘ছাত্রলীগ’ তাহলে অপর পক্ষকেও বলতে হবে ‘ছাত্রশিবির’, ‘ছাত্র ইউনিয়ন’ প্রভৃতি। ইউনিভার্সিটির ছাত্র সংগঠন করে না এটাও বিশ্বাস করতে হবে? মনে হয় কিছু পত্রিকা পণ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে।
পরিবহন সেক্টরে যে নৈরাজ্য চলছে তার জন্যে আমার মতে মালিক, চালক ও যাত্রী তিনপক্ষই দায়ী। মালিক কেন ভুয়া লাইসেন্সধারী চালক নিয়োগ দেয়? দেয় এ জন্যে যে, উপযুক্ত বেতন দিতে হবে না। হেলপাররা তো পেটে ভাতে কাজ করে। আর একজন চালক দিনে ১২/১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত গাড়ি চালায়। তার তো মাথা ঠিক থাকার কথা নয়। স্টিয়ারিং হাতে সিগারেট খাচ্ছে, সেলফোনে কথা বলছে, হাসছে। যে চালক এমন করে তার তো রাস্তায় চোখ থাকে না। তারপরও মালিকের টার্গেটের চেয়ে বেশি কামিয়ে পকেটস্থ করার জন্য প্রতিযোগিতা (যার পরিণতি এক হাত চলে যায়, পরে প্রাণও), আড়াআড়ি করে দাঁড় করিয়ে বেশি যাত্রী তোলা, রাতের বেলায় তো নারীরা বাসে উঠতেই পারবে না, বাসের ভেতরে গ্যাং রেপ, ভাবা যায়? যদি দেখা যায় কোন চালক বেপরোয়া চালাচ্ছে, যাত্রীদের মধ্য থেকে কেউ সতর্ক করতে গেলে ড্রাইভার-হেলপার মিলে তাকে হেনস্তা করে। বাসের অন্য যাত্রীরা মুখ খোলে না- ‘বাছা, আপন প্রাণ বাঁচা’ নীতি অবলম্বন করে বসে থাকে।
এ অবস্থায় ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা অবশ্যই রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের ৯ দফা দাবি :
১. বেপরোয়া চালককে ফাঁসি দিতে হবে এবং তা সংবিধানে সংযোজন করতে হবে
২.নৌপরিবহনমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে
৩. শিক্ষার্থীদের চলাচলে ফুট ওভারব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে
৪. প্রতিটি সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিডব্রেকার দিতে হবে
৫. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে
৬. শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের বাসে তুলতে হবে
৭. শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া করতে হবে
৮. ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল এবং লাইসেন্স ছাড়া চালকদের গাড়ি চালনা বন্ধ করতে হবে
৯. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না
এক নং দাবিতে- বেপরোয়া চালককে ফাঁসি দেবার এবং সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এই ফাঁসির ব্যাপারটা নিয়ে বহুদিন ধরে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত রয়েছে। মিলিটারি এরশাদের সময় এমন একটা আইনের বিরুদ্ধে তখনই প্রতিবাদ ওঠে এবং ডান, বাম, সেন্ট্রিস্ট সবাই এই প্রতিবাদে আন্দোলন করে। তখন আইনটি শিথিল করা হয়। সম্ভবত সেই শিথিল আইনটি আজও বলবৎ আছে। একটি খবর ছিল এক ছাত্র বাসের ধাক্কায় আহত হয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। সে তখনও জীবিত। চালক তাকে হাসপাতালে না নিয়ে পাশের খালে পানিতে ফেলে চলে যায়। ছাত্রটি মারা যায়। এই চালকের ফাঁসি হওয়া উচিত।
দুই নং দাবিতে নৌপরিবহনমন্ত্রী ও পরিবহন শ্রমিক নেতার বক্তব্য প্রত্যাহার এবং তাকে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। মন্ত্রীর হাসি নিয়েও কথা উঠেছে। তিনি অবশ্য তার বক্তব্য প্রত্যাহার করেছেন, শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন। হাসির ব্যাপারে তিনি বলেছেন, এটি তার স্বভাবজাত, সব সময় হাসি-খুশি থাকেন।
আগেই বলেছি কেউ কেউ মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন। বিএনপির মির্জা ফখরুল তো সরকারেরই পদত্যাগ দাবি করেছেন। তিনি বলেননি এরপর কে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। যদি ধরে নেয়া হয় মহাজোট সরকার পদত্যাগ করল। যথারীতি সাধারণ নির্বাচন হলো। সে নির্বাচনেও তো বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটই সরকার গঠন করবে। বিএনপির যে অবস্থা তাতে বিরোধী দল হওয়াও সুদূর পরাহত। সম্প্রতি ৫টি সিটি কর্পোরেশন নির্র্বাচনে তাই জানান দিয়েছে। একশ’কে ৫ দিয়ে ভাগ করলে একভাগে ২০ পড়ে অর্থাৎ বিএনপি শতকরা ২০ ভাগ আসন পাবে, ৩০০ আসনে ৬০ আসন। আর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট ২৪০টি আসন পেয়ে একেবারে সংবিধানের মৌলিক বিষয় পরিবর্তনের ক্ষমতাসহ ব্রুট মেজরিটি লাভ করবে। তখন মির্জা ফখরুল সাহেবদের হাঁ করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কোন গত্যন্তর থাকবে না। নাই দলের এক নম্বর নেতা (দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে), দুই নম্বর নেতাও দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পলাতক (জনশ্রুতি হলো লন্ডনে পশ লাইফ লিড করছে)। ৫ সিটি কর্পোরেশনেও আওয়ামী লীগেরই জেতার কথা। জনশ্রুতি হলো দলীয় কোন্দলে কামরান হেরেছেন প্রতিপক্ষের কাছে নয়।
৩ নং, ৪ নং, ৫ নং, ৭ নং, ৮ নং এবং ৯ নং দাবি সর্বজনীন। এতে দ্বিমত করার সুযোগ কারও নেই। অবিলম্বে এসব দাবি বাস্তবায়ন করা দরকার।
তবে ৬ নং দাবি যৌক্তিক মনে হয় না। যেখানে-সেখানে বাস থামালে বরং দুর্ঘটনা আরও বেড়ে যেতে পারে। চালক যেখানে-সেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের হাত দেখে বাস থামাতে গেলে পথচারীকে চাপা দেবার শঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যাবে না। বরং ছাত্র-ছাত্রীরা হেঁটে একটি স্টপেজে আসবে, বাস সেখান থেকে তাদের তুলে নেবে। এখন তো একটু পরপরই স্টপেজ, আগে তো এক কিলোমিটার আধা কিলোমিটার হেঁটে বাস ধরতে হতো। ট্রেন ধরতে দুই/আড়াই কিলোমিটারও হাঁটতে হতো। বরং ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি হওয়া উচিত স্টপেজ ছাড়া বাস থামানো যাবে না। গতকাল দেখলাম ছাত্র-ছাত্রীরা গাড়ি থামিয়ে ফিটনেস পরীক্ষা করছে। এটা ঠিক নয়। এটা পুলিশের কাজ।
গতকাল দেখলাম কয়েকটা মেয়ে হাতে লেখা প্লেকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্লেকার্ডের ভাষা হলো নিষিদ্ধ গলির ভাষা। রাজনৈতিক নেতা এবং পুলিশ নিয়ে তাদের অশ্লীল শব্দাবলী ছেলেরাও উচ্চারণ করতে লজ্জা পাবে। ওরা তো মেয়ে। এই ধরনের ভাষা ব্যবহার কী শোভনীয়?
ঢাকা ॥ ৩ আগস্ট ২০১৮
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, সভাপতি, জাতীয় প্রেসক্লাব ও সিনেট সদস্য, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]