ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কোরিয়ায় প্রস্তুতি ম্যাচে হার ফুটবল দলের

প্রকাশিত: ০৭:২০, ২ আগস্ট ২০১৮

কোরিয়ায় প্রস্তুতি ম্যাচে হার ফুটবল দলের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এশিয়ান গেমস ও সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ উপলক্ষে জোর প্রস্তুতিতে ব্যস্ত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। প্রথম কন্ডিশনিং ক্যাম্প করতে কাতার, পরে দেশে ফিরে সাভারের জিরানির বিকেএসপিতে প্রশিক্ষণের পর কন্ডিশনিং ক্যাম্প করতে লাল-সবুজ বাহিনী পাড়ি জমায় দক্ষিণ কোরিয়ায়। সেখানে অনুশীলনের পাশাপাশি বুধবার একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে তারা। ওই ম্যাচে কোরিয়ার দ্বিতীয় বিভাগের দল গুয়াংজু এফসির কাছে তারা হেরে যায় ০-২ গোলে। খেলাটি অনুষ্ঠিত হয় মকপো আন্তর্জাতিক ট্রেনিং সেন্টারে। ম্যাচের ২২ মিনিটে প্রথম গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে জেমি ডের শিষ্যরা। ডিফেন্ডার তপু বর্মণের শরীরে লেগে বল দিক পাল্টে ঢুকে যায় জালে। এক্ষেত্রে অসহায় ছিলেন গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। ওই গোলে পিছিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে সফরকারীরা। দ্বিতীয়ার্ধে বেশ ভাল এবং আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে বাংলাদেশ দল। ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে খেলে কটি বিপজ্জনক আক্রমণও শাণায় তারা। কাউন্টার এ্যাটাকও করে একাধিকবার। কিন্তু ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি তাদের। তরুণ মিডফিল্ডার রবিউল হাসান, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ও শাখাওয়াত হোসেন রনি গোল করার সুযোগ নষ্ট করেন। বরং খেলার একেবারে শেষ মুহূর্তে ইনজুরি সময়ে দুভার্গ্যজনকভাবে গোল হজম করে বসে বাংলাদেশ দল। সেই সঙ্গে হার নিশ্চিত এবং ড্র করার সম্ভাবনা ধুলায় মিশে যায় তাদের। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল বদলি গোলরক্ষক আনিসুর রহমান ঠিকমতো বিপন্মুক্ত করতে না পারায় দূরপাল্লার শটে গুয়াংজু ব্যবধান ২-০ করে। ইংলিশ কোচ জেমি ডে’র অধীনে এ নিয়ে তিনটি অনুশীলন ম্যাচ খেলল বাংলাদেশ। প্রথম দুটি ড্র হয়, কোচ অবশ্য দলের পারফর্ম্যান্সে সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, ‘প্রথম গোলটিকে আত্মঘাতী বলতে পারেন। আর দ্বিতীয়টি হয়েছে শেষ মিনিটে, ২০ গজ দূর থেকে নেয়া শটে। এমনিতে দল ভালই খেলেছে। প্রাপ্ত সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে ম্যাচটি আমরা ড্রও করতে পারতাম। আমি খেলোয়াড়দের পারফর্ম্যান্সে খুশি।’ ম্যানেজার সত্যজিত দাশ রুপু বলেন, ‘গুয়াংজু এফসি আমাদের চেয়ে শক্তিশালী দল। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। প্রথম গোলটি তপুর শরীরে লেগে হয়েছে। গোলরক্ষকের কিছুই করার ছিল না। শেষেরটি (দ্বিতীয় গোল) ঠিকমতো ক্লিয়ার হলে হারের ব্যবধান কম হতো। তবে আমরা একাধিক সুযোগ নষ্ট করেছি। নইলে গোল শোধও হয়ে যেতে পারত। কিন্তু রনি-আব্দুল্লাহরা গোল করতে পারেনি।’ নিজেদের ঝালিয়ে নিতে শুক্রবার দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ‘সাফের বিশ্বকাপ’ খ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবল আসরে বাংলাদেশ সর্বশেষ শিরোপা জিতেছিল সেই ১৫ বছর আগে, ২০০৩ সালে। আর সর্বশেষ ফাইনাল খেলেছিল ১৩ বছর আগে, ২০০৫ সালে। আর সর্বশেষ সেমিফাইনাল খেলেছিল ৯ বছর আগে, ২০০৯ সালে। এরপর থেকে টানা তিন আসরে (২০১১, ১৩, ১৫) সেমিফাইনাল খেলা দূরে থাক, গ্রুপ পর্বের গ-িই পেরুতে পারেনি লাল-সবুজের দেশ। সেই লজ্জা-ব্যর্থতা ঘোচাতে এবার মরিয়া বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। এজন্য কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে তারা। তারই প্রস্তুতি নিতে দলকে প্রথমে কাতারে পাঠায় দেশীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক এই সংস্থা, দুই সপ্তাহের জন্য। সেখানে তারা কন্ডিশনিং ক্যাম্পের পাশাপাশি কাতারের ক্লাব দলের একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে। এরপর ২০ জুলাই ঢাকায় ফিরে ৩০ জুলাই রওনা দক্ষিণ কোরিয়া। সেখানে ১২ দিনের কন্ডিশনিং ক্যাম্প এবং দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এরপর সরাসরি ইন্দোনেশিয়ায় চলে যাবে এশিয়ান গেমস খেলার জন্য। বাংলাদেশ দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে ছিল ৪৪ জন। সেখান থেকে দল ছোট করে ২৮ জনে নামিয়ে আনা হয়। এই ২৮ জনকে নিয়েই সাফ পর্যন্ত ক্যাম্প করার উদ্দেশ্য জেমি ডের। আর সে কারণেই এশিয়ান গেমসের দলেও সিনিয়র ফুটবলারদের তালিকায় এই দল থেকেই ফুটবলার রাখা হয়েছে। এশিয়ান গেমসের অভিজ্ঞতা নিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভাল ফল করাই হচ্ছে দেশের বাইরে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করার মূল লক্ষ্য। দলের তরুণ ফুটবলারদের জন্য এটা একটা ভাল সুযোগ। এশিয়ান গেমস একটা ভাল অভিজ্ঞতা হবে সাফের আগে। বাংলাদেশের ফুটবল ঝিমিয়ে পড়ে গত বছর অক্টোবরে। এশিয়া কাপের বাছাইয়ে ওঠার প্লে-অফে ভুটানের বিপক্ষে হারের পর বাফুফে আর দল গুছিয়ে উঠতে পারেনি। সব দোষ খেলোয়াড়দের ঘাড়ে চাপিয়ে জাতীয় দলের প্রায় সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়! ওই ঘটনার প্রায় দেড় বছর পর লাওসের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ ঘিরে একটি দল গঠন করা হয়। এখন আবার নতুন করে প্রাণ ফেরানোর চেষ্টা চলছে। আর্সেনালের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়া জেমি কখনও সিনিয়র টিমের হয়ে খেলতে পারেননি। ক্লাব ক্যারিয়ারে এফসি বোর্নমাউথ, ওয়েলিং ইউনাইটেডের মিডফিল্ডে খেলেছেন। ইংল্যান্ডের অ-১৮ দল পর্যন্ত খেলা ডে কখনও জাতীয় দলের হয়েও খেলেননি।
×